নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
শিলিগুড়ি এবং জলপাইগুড়ির বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ডেঙ্গি পরিস্থিতি খতিয়ে দেখলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর (ম্যালেরিয়া) অমাবসু দাস। মঙ্গলবার শিলিগুড়ি শহর লাগোয়া ডেমডেমা, লিম্বু বস্তি, মেটেলি, নাগরাকাটা এলাকায় যান তিনি। যান মালবাজার হাসপাতালে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে পরে বৈঠক করেন তিনি।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, এ দিন লিম্বুবস্তি এলাকায় শিবির করে রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেখানে জ্বরে আক্রান্ত ৬ জন ব্যক্তি এসেছিলেন। অন্য দিকে লিম্বু বস্তিতে শিবিরে এসেছিলেন ১৬ জন। তার মধ্যে ২ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবানু রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। শিলিগুড়ি শহর ও লাগোয়া ওই দুইটি এলাকাতে ডেঙ্গির সংক্রমণ সব চেয়ে বেশি। ডেমডেমা এলাকা থেকেই ৪৫ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত পাওয়া গিয়েছে এখন পর্যন্ত। লিম্বুবস্তির বাসিন্দা কিশোরী রশ্মি মাঝি ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। সে কারণেই এ দিন ওই দুই এলাকায় গিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন স্বাস্থ্য দফতরের উপঅধিকর্তা। শিলিগুড়ি পুর এলাকা, মহকুমার অন্য অংশ এবং লাগোয়া জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন জায়গায় এখন পর্যন্ত ডেঙ্গিতে অন্তত ৯০০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। শিলিগুড়িতে ২ জন এবং কোচবিহারে ১ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মারাও গিয়েছেন। ডেঙ্গি ছড়াচ্ছে বালুরঘাট, কোচবিহারেও। পরিস্থিতি নিয়ে তাই উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য দফতরও। এ দিন অমাবসুবাবু মেটেলির সামসিং চা বাগান এলাকাতে যান। সেখানে ২৬ জন আক্রান্ত রয়েছেন। মালবাজার হাসপাতালে জ্বরে আক্রান্তদের রক্ত পরীক্ষায় এ দিন ১ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবানু মিলেছে। স্বাস্থ্য দফতরের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে প্রশাসনের তরফে নাগরাকাটার লুকসান মোড়ের কাছে যে মদের ভাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল এ দিন সেখানেও যান ওই স্বাস্থ্য অধিকর্তা। ওই ভাটিতে জমে থাকা জল মশার আঁতুর ঘর বলে অভিযোগ উঠেছিল। লাগোয়া ৫০০ মিটারের মধ্যে অন্তত ২৫ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবানুও মিলেছিল। শিলিগুড়ি এবং লাগোয়া এলাকায় ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের কাজের জন্য স্বাস্থ্য অধিকর্তার কাছে ১৫ লক্ষ টাকা চেয়েছে দার্জিলিং জেলা স্বাস্থ্য দফতর। শিলিগুড়ি হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলজে হাসপাতালেও এ দিন জ্বরে আক্রান্ত বহু রোগী চিকিত্সা করাতে এসেছিলেন। সেখানেও জ্বরে আক্রান্ত প্রচুর রোগী ভর্তি রয়েছেন। তাদের অনেকেরই শরীরে ডেঙ্গি জাবীনু ধরা পড়েছে। ডেঙ্গিতে গুরুতর অসুস্থদের শরীরে অনুচক্রিকা দিতে হলে তা সংগ্রহ করতে রোগীর পরিবারকে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিপাকে পড়তে হচ্ছে। সরকারি হাসপাতাল থেকে ৪০০ টাকায় এক ইউনিট অনুচক্রিকা মেলে, বেসরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কগুলি থেকে তা পেতে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত দিতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। |