একটি ধাতব বাড়ি। তার ভিতরে বিদ্যুৎ সরবরাহের যাবতীয় যন্ত্রপাতি, স্যুইচগিয়ার বক্স। বিদ্যুৎ-শিল্পের ভাষায় বলা হচ্ছে ‘গ্যাস ইনসুলেটেড সাবস্টেশন’ (জিআইএস)। সিইএসসি এলাকার মধ্যে সিঁথি, দমদম সেন্ট্রাল জেল, ঠাকুরপুকুর, রিষড়া, বালি-সহ বেশ কিছু জায়গায় এখন এই নতুন জিআইএস সাবস্টেশন চোখে পড়বে। কয়েক বছরের মধ্যে বেসরকারি এই বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাটি তাদের পরিষেবা এলাকার মধ্যে আগেকার ‘ঢাউস’ সাবস্টেশনের অধিকাংশই বদলে ঝাঁ-চকচকে জিআইএস তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কলকাতা ও হাওড়ার গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলগুলির কোথায় জিআইএস হবে প্রাথমিক ভাবে তা চিহ্নিত করার কাজও সেরে ফেলেছেন সিইএসসি-র কর্তারা।
কী লাভ এতে? সংস্থার তরফে জানানো হচ্ছে, কম জমিতেই জিআইএস প্রযুক্তির সাবস্টেশন গড়ে ফেলা যায়। পাশাপাশি, ঘরের ভিতরে স্যুইচগিয়ার বক্স থাকে বলে ঝড়, বৃষ্টির সময়ে গাছের ডাল বা অন্য কোনও বস্তু পড়ে লাইন সহজে ট্রিপ করে যায় না। তাই বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে না। জমি নিয়ে জটিলতা এড়াতে রাজ্য বিদ্যুৎ সংবহন সংস্থাও এখন বিভিন্ন জায়গায় এই জিআইএস সাবস্টেশন গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যার একটি সল্টলেকে চালুও হয়ে গিয়েছে। বিদ্যুৎ কর্তাদের হিসেবে, ৪০০ কেভি-র একটি সাবস্টেশন তৈরিতে কমপক্ষে যেখানে ৫০ একর জমি প্রয়োজন, জিআইএস প্রযুক্তিতে সেখানে ১৫-২০ একর পেলেই কাজ চলে।
সিইএসসি-র এক কর্তা জানাচ্ছেন, কলকাতা ও হাওড়া মিলিয়ে তাঁদের ১০০টিরও বেশি সাবস্টেশন আছে। যার ১০-১২টি ইতিমধ্যেই জিআইএস-এ বদলে ফেলা হয়েছে। আগামী চার-পাঁচ বছরে কমপক্ষে ৫০-৬০টি সাবস্টেশন জিআইএস-এ বদলে ফেলা হবে। এর ফলে যান্ত্রিক ত্রুটি তো এড়িয়ে চলা যাচ্ছেই, কোনও কারণে একটি কেব্ল বসে গেলে অন্য জায়গা থেকে বিদ্যুৎ এনে বিকল্প কেব্ল লাইন দিয়ে খুব অল্প সময়েই গ্রাহকদের ঘরে সরবরাহ চালু করে দেওয়া যাবে। কারণ এই ধরনের সাবস্টেশনগুলিতে একটি ট্রান্সফর্মারের সঙ্গে কমপক্ষে দু’টি কেব্ল লাইনের যোগ থাকে। ফলে দিনের সর্বোচ্চ চাহিদার সময়ে যান্ত্রিক ত্রুটি হলেও দীর্ঘ সময় ধরে লোডশেডিং-এর আশঙ্কা থাকে না। ফলে ভোগান্তি কমবে গ্রাহকদের। |