পঞ্চায়েত ভোটে বিপর্যয়ের পরে পুরভোটের ফল দেখে কিঞ্চিৎ স্বস্তিতে প্রদেশে কংগ্রেস নেতৃত্ব। ১২টি পুরসভার মধ্যে ডালখোলা এবং হলদিবাড়িতে একক ভাবে ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস। এ বারও ওই দুই পুরসভা দখলে রেখেছে তারা। তৃণমূলের সঙ্গে জোট করে ক্ষমতায় থাকা আলিপুরদুয়ার এবং দুবরাজপুরের মধ্যে প্রথমটি এ বারও ত্রিশঙ্কু। দুবরাজপুর অবশ্য একার শক্তিতে দখল করে নিয়েছে তৃণমূল। রাজ্য কংগ্রেস নেতাদের বক্তব্য, শাসক দলের সন্ত্রাসের মধ্যেও মোটের উপর স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে পারাটা লোকসভা ভোটের আগে দলীয় কর্মীদের উৎসাহ জোগাবে।
ডালখোলাতে গত বার ৯টি ওয়ার্ডে জিতেছিল কংগ্রেস। এ বারও ৯টি ওয়ার্ডেই জিতেছে তারা। তবে হলদিবাড়িতে আসন একটি কমেছে। আলিপুরদুয়ারে কংগ্রেস ও তৃণমূল ৬টি করে আসন পেয়েছে। গত বারের থেকে কংগ্রেসের ২টি আসন কমেছে। তৃণমূলের বেড়েছে ৫টি। কংগ্রেস নেতাদের দাবি, “তৃণমূল কংগ্রেসের সহযোগিতা ছাড়া বোর্ড গঠন করতে পারবে না।” মুকুল রায়ের পাল্টা দাবি, “তৃণমূলই নিয়ন্ত্রক শক্তি।” |
দুবরাজপুরে গত বার কংগ্রেস ৭টি আসন পেয়েছিল। এ বার তা কমে হয়েছে ৪। এ প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যের ব্যাখ্যা, “ভোটের ১৫-২০ দিন আগে এক জন কাউন্সিলর বাদে বাকিরা তৃণমূলে যান। ওই পরিস্থিতিতে নতুন প্রার্থী বেছে চারটি আসন পাওয়াটাই বড় জয়।”
পাশাপাশি, গত বার চারটি আসন পাওয়া পানিহাটিতে এ বার তিনটি আসনে জিততে পারাকেও বড় জয় হিসেবে দেখছে কংগ্রেস। উত্তর ২৪ পরগনারই হাবরায় গত বার এক নম্বর ওয়ার্ড থেকে কংগ্রেস প্রার্থী জিতেছিলেন। সে বার ওই ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী দেয়নি। এ বার তৃণমূল প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও বিপুল ভোটে জিতেছে কংগ্রেস। যা দেখে দলের নেতারা উজ্জীবিত। প্রদীপবাবুর কথায়, “শাসক দলের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়েও কংগ্রেস যে একক ভাবে মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে, এই ফলই তার প্রমাণ। তৃণমূলের থেকে মুখ ঘুরিয়ে শহুরে ভোটারদের একাংশের কংগ্রেসমুখী হওয়ার ইঙ্গিত পুরভোটে মিলেছে।” |
পঞ্চায়েত ভোটে কংগ্রেস ১২% ভোট পেলেও পুরভোটে তা বেড়ে ১৪% হয়েছে বলে প্রদীপবাবুর দাবি। কিন্তু মুকুলবাবু বলেন, “পঞ্চায়েত ভোটে কংগ্রেস ১২% ভোট পেয়েছিল। এ বার তা কমে ১০% হয়েছে।”
এ দিনই রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনের সঙ্গে দেখা করে শাসক দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস চালানোর অভিযোগ জানিয়ে এসেছে কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল। অবাধ ভোট হলে কংগ্রেসের ফল আরও ভাল হওয়ার সম্ভাবনা ছিল বলে দাবি করে দলীয় বিধায়ক মানস ভুঁইঞা বলেন, “সিপিএমের মতো ভোট বয়কট করে পালায়নি কংগ্রেস। মার খেয়েও ময়দানে থেকেছি।”
|
মঙ্গলবার ভোটের ফল ঘোষণার পরে
আলিপুরদুয়ারে ছবিগুলি তুলেছেন নারায়ণ দে। |