শক্তিক্ষয় হলেও ডায়মন্ড হারবার পুরসভায় জয়ের হ্যাটট্রিক করল শাসক দল। পক্ষান্তরে, পঞ্চায়েতের ধারা বজায় রেখে এ বার ওই পুরসভাতে শক্তি বাড়াল সিপিএম।
মোট ১৬টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছে ১০টি, সিপিএম তিনটি। গতবার এই পুরসভায় শাসক দলের দখলে ছিল ১১টি আসন। সিপিএমের একটি। অর্থাৎ, এ বারের ভোটে তৃণমূলের একটি আসন কমেছে। সিপিএমের দখলে এসেছে দু’টি আসন। পুর এলাকায় গত বিধানসভা নির্বাচনের ভোটের অঙ্কের হিসেবে, কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে তৃণমূল ৬০ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। এ বার পুরভোটের ফলে দেখা যাচ্ছে, তৃণমূলের ভোট কমেছে ৭ শতাংশ। অন্য দিকে, সিপিএম ৪ শতাংশ ভোট বাড়িয়েছে।
|
বস্তুত, গ্রামীণ এলাকায় ঘেরা ডায়মন্ড হারবারে সিপিএম যে শক্তি বাড়াচ্ছে, তার ইঙ্গিত মাস কয়েক আগের পঞ্চায়েত নির্বাচনেই মিলেছিল। ডায়মন্ড হারবার-১ পঞ্চায়েত সমিতি তৃণমূল জিতলেও ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলে সিপিএম। সেখানকার আটটি পঞ্চায়েতের মধ্যে সিপিএম চারটি দখল করে। ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে সিপিএম মাত্র একটি পঞ্চায়েত জিতেছিল। ডায়মন্ড হারবার-২ পঞ্চায়েত সমিতি অবশ্য তৃণমূলের থেকে ছিনিয়ে নেয় সিপিএম। সেখানকার ৮টি পঞ্চায়েতের মধ্যে চারটিতে জেতে সিপিএম। ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে ছ’টি পঞ্চায়েতে জিতেছিল শাসক দল। দু’টি জেলা পরিষদ আসনই দখল করে সিপিএম।
পঞ্চায়েত ভোটের ফল খারাপ হওয়া নিয়ে শাসক দল সেই সময়ে গোষ্ঠী-বিবাদকেই প্রধান কারণ হিসেবে দেখিয়েছিল। এ বার পুরভোটে আসন ও ভোটের হার কমে যাওয়ার পিছনেও দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকেই কারণ হিসেবে তুলে ধরেছেন বিদায়ী পুরপ্রধান তৃণমূলের পান্নালাল হালদার। তাঁর দাবি, “দলের একাংশ সিপিএম ও বিজেপিকে ভোট দিয়েছে। আমাকেও হারানোর চক্রান্ত হয়েছিল। বহু আসনে নির্দল প্রার্থীকেও ভোট দিয়েছেন দলীয় সমর্থকদের একাংশ। কিন্তু মানুষ আমাকে পুনর্নির্বাচিত করেছেন।”
মোটের উপরে পুরভোটের ফলে খুশি সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য শমীক লাহিড়ি। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমের তরফে ওই পুর নির্বাচনের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। শমীকবাবু বলেন, “তৃণমূলের আচরণ দেখে বহু মানুষের মোহভঙ্গ হয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটেও কিছু মানুষ আমাদের দিকে ফিরে আসার ইঙ্গিত দিয়েছেন। পুর নির্বাচনেও একই ঘটনা ঘটল।” |
গত বিধানসভা নির্বাচনের নিরিখে এ বার ওই পুর এলাকায় ভোটের হারে শক্তি বাড়িয়েছে বিজেপিও। গত বিধানসভা ভোটে পুর এলাকায় প্রায় ৭ শতাংশ ভোট পেয়েছিল বিজেপি। এ বার তারা পেয়েছে ৮ শতাংশ ভোট। অবশ্য গতবারের দু’টি আসনের মধ্যে এ বার একটি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে তারা। তবে, এই পুর নির্বাচনে কংগ্রেস প্রায় সাফ হয়ে গিয়েছে। গত বার একটি আসন দখল করেছিল কংগ্রেস। ভোট পেয়েছিল ৮ শতাংশ। এ বার কংগ্রেস একটি আসনও পায়নি। ৮ শতাংশ থেকে তাদের প্রাপ্ত ভোট ২ শতাংশে নেমে এসেছে। পিডিএস, নির্দল একটি করে আসন পেয়েছে। |