মঞ্চ তৈরির কাজে বাধা |
পাঁচিল ভাঙায় কলেজে বিক্ষোভ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থলে যাতায়াতের জন্য কলেজ মাঠের পাঁচিল ভেঙেছিল প্রশাসন। প্রতিবাদে মঙ্গলবার প্রায় ঘণ্টা দু’য়েক মুখ্যমন্ত্রীর সভামঞ্চ তৈরির কাজ বন্ধ করে দিলেন শিলদা চন্দ্রশেখর কলেজের পড়ুয়ারা। টিএমসিপি’র ক্ষমতাসীন ছাত্র সংসদের চাপে প্রশাসন লিখিত ভাবে পাঁচিল তৈরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে ফের কাজ শুরু হয়। আজ, বুধবার ওই মাঠেই প্রশাসনিক জনসভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী।
মাঠটি শিলদা কলেজ চৌহদ্দির মধ্যেই রয়েছে। ওই মাঠে মুখ্যমন্ত্রী-সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের যাতায়াতের জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে দু’টি জায়গায় পাঁচিল ভেঙেছিল প্রশাসন। কিন্তু সোমবার সন্ধ্যায় কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে ফের পাঁচিলের বেশ কিছুটা অংশ ভেঙে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ পড়ুয়ারা মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর সভামঞ্চ তৈরির কাজ বন্ধ করে দিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষার অফিস ঘরের সামনে অবস্থান শুরু করেন। মুখ্যমন্ত্রীর সভা-পর্ব মেটার পর প্রশাসনকেই পাঁচিল তৈরি করে দিতে হবে বলে দাবি জানায় পড়ুয়ারা। |
|
নেতা-মন্ত্রীদের যাতায়াতের জন্য ভাঙা হয়েছে পাঁচিল।—নিজস্ব চিত্র। |
শিলদা কলেজের ছাত্র সংসদের ক্ষমতায় রয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। টিএমসিপি পরিচালিত কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক শীতল সরেন বলেন, “দীর্ঘদিন কলেজের কোনও পাঁচিল ছিল না। বছর চারেক আগে পর্যায়ক্রমে পাঁচিল তৈরির কাজ শুরু হয়। কয়েক মাস আগে মাঠের দিকের পাঁচিল তৈরির কাজ শেষ হয়। মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থলে যাতায়াতের জন্য প্রশাসনের তরফে কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে পাঁচিলের ৫০ ফুট অংশ ভাঙা হয়েছিল। কিন্তু এরপর কলেজ কর্তৃপক্ষকে কিছু না জানিয়ে ফের পাঁচিলের আরও ৩০০ ফুট অংশ ভেঙে দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রীর সভার পরে পাঁচিলের ভাঙা অংশ কারা পুনর্নির্মাণ করবে তা নিয়ে কোনও স্পষ্ট জবাব দিতে পারেননি কলেজ কর্তৃপক্ষ। এই কারণেই এদিন ছাত্রছাত্রীরা উপযুক্ত প্রতিশ্রুতির দাবিতে আন্দোলন করেন।”
সকাল দশটা নাগাদ সভামঞ্চের কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কলেজে ছুটে যান পশ্চিম মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) বাসব বন্দ্যোপাধ্যায়, বেলপাহাড়ির বিডিও সর্বোদয় সাহা ও বিনপুর থানার আইসি সুমন চট্টোপাধ্যায়। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষা সুজাতা চক্রবর্তী তেওয়ারি ও ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা। শেষ পর্যন্ত প্রশাসনের তরফে ওই পাঁচিল পুনর্নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন বিনপুর থানার আইসি সুমন চট্টোপাধ্যায়। এরপর দুপুর ১২টায় আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন পড়ুয়ারা।
দুপুর ১টা নাগাদ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি কলেজে পৌঁছন। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষা ও ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। পরে রমাপ্রসাদ বলেন, “কলেজ মাঠের পাঁচিল ভাঙা নিয়ে একটা সমস্যা হয়েছিল। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটে গিয়েছে।” ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষা সুজাতা চক্রবর্তী তেওয়ারি বলেন, “প্রশাসনের তরফে পাঁচিল পুনর্নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।” তবে প্রশাসন ও পুলিশের আধিকারিকেরা বিষয়টি নিয়ে এ দিন কোনও মন্তব্য করতে চাননি। |
|