অ্যাথলেটিক্সে বাংলার সাফল্য
এশিয়ান স্কুল মিটে পদক জয়, ভাল ফল হল জাতীয় স্তরেও
দীর্ঘদিন পর বিশ্ব অ্যাথেলেটিক্সে সাফল্য পেল বাংলা। সদ্য সমাপ্ত প্রথম এশিয়ান স্কুল ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে পদক জিতেছেন বাংলার দুই ছাত্রী। সব মিলিয়ে এ বার এই প্রতিযোগিতায় দলগত ভাবে ভারত পদক তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। ভারতের সংগ্রহ ১২টি সোনা, ১১টি রুপো ও ৬টি ব্রোঞ্জ। প্রথম স্থানে আছে মালয়েশিয়া (১২টি সোনা, ১৪টি রূপো ও ১০টি ব্রোঞ্জ)। বাংলার অ্যাথলেটিক সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারতীয় দলে বাংলার প্রতিনিধি ছিল জলপাইগুড়ির স্বপ্না বর্মন ও পুরাতন মালদহের রুমা সরকার। এরা দু’জনেই পদক জিতেছেন। স্বপ্না পেয়েছেন তিনটি পদক (হাইজাম্পে সোনা, জ্যাভলিন থ্রোয়ে রূপো ও হামার থ্রোতে ব্রোঞ্জ), ও রুমা পেয়েছেন দু’টি পদক (১০০ মিটার ও ২০০ মিটার দৌড়ে রুপো) ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই প্রতিযোগিতায় এশিয়ার মোট ৯টি দেশের মোট ১৮৩ জন প্রতিযোগী যোগ দিয়েছিল। এই বছরই প্রথম এই প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়েছিল। এই প্রতিযোগিতার আয়োজক ছিল এশিয়ান স্কুল স্পোটর্স ফেডারেশন (এএসএসএফ)। প্রতিযোগিতায় আয়োজক মালয়েশিয়া, ভারত ছাড়াও যোগ দিয়েছিল শ্রীলঙ্কা, হংকং, চিন, তাইল্যান্ড, ম্যাকাও, ব্রুনেই ও ফিলিপিন্স।
বাংলার অ্যাথলেটিক সংস্থার সচিব কমল কুমার মৈত্র বাংলার ছাত্রীদের এই সাফল্যে উত্‌সাহিত। তিনি বলেন, “বাংলার ছাত্রীরা বাইরে গিয়ে এর আগে এত ভাল ফল করেনি। এদের সঠিক ভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হলে দেশকে এরা আরও অনেক সাফল্য এনে দেবে।”
স্বপ্না বর্মন ও রুমা সরকার। — ফাইল চিত্র।
খুশি বাংলার প্রাক্তন অ্যাথেলিটরাও। এশিয়াডে সোনা জয়ী অ্যাথেলিট জ্যোর্তিময়ী শিকদার বলেন, “আমিও স্কুল স্তর থেকেই উঠে এসেছি। স্কুলস্তরেই নিজেকে প্রমাণ করার সবথেকে ভাল সময়। আমাদের সময় এত খেলার সুযোগ ছিল না।” তবে একই সঙ্গে তাঁর আশঙ্কা, “অনেক প্রতিভাই হারিয়ে যায়। কলকাতার সাইতে সুযোগ পাওয়া মুশকিল। আর গ্রামে ট্রেনিং নেওয়ার কোনও জায়গা নেই। আশা করি এই দুই উঠতি প্রতিভার ক্ষেত্রে এ রকম হবে না।”
রুমা সরকার বর্তমানে থাকেন দুর্গাপুরের সেল অ্যাথলেটিক অ্যাকাডেমিতে। দ্বাদশ শ্রেণির এই ছাত্রীর বাড়ি পুরাতন মালদহের সাহারা গ্রামে। বাড়িতে আছেন বাবা, মা ও দিদি। বাবা জিতেন সরকার পেশায় কৃষক। ২০১১ সালে রাজ্য স্তরের প্রতিযোগিতায় সাড়া ফেলে সে দুর্গাপুর সেল অ্যাকাডেমির নজরে পড়ে যায়। তারপর থেকে দুর্গাপুরেই প্রশিক্ষণ নিচ্ছে রুমা। তাঁর এক আত্মীয়ের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার ধামুয়ায়। সেখানকার উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে পড়াশোনা করে সে। অ্যাকাডেমিতে ছুটি থাকলে স্কুলে যায়। অ্যাকাডেমী সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বছরের রাজ্য অ্যাথলেটিক্স মিটে বয়স ভিত্তিক ১০০ ও ২০০ মিটারে রেকর্ড সময় করে সোনা পেয়েছিল রুমা। এশিয়ান স্কুল মিটের ১০০ মিটারে তাঁর সময় হয়েছে ১২.৩১ সেকেন্ড এবং ২০০ মিটারে সময় হয়েছে ২৫.৪৪ সেকেন্ড।
অপর পদক জয়ী স্বপ্না বর্মনের বাড়ি জলপাইগুড়ি শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে ঘোষপুকুর-পাতকাটা এলাকায়। সে স্থানীয় কালিয়াগঞ্জ উত্তমেশ্বর হাইস্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। তাঁর বাবা পঞ্চানন বর্মন আগে ভ্যান রিকশা চালাতেন। এখন অসুস্থ। মা বাসনা বর্মন অস্থায়ী চা শ্রমিক। চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ার সময় রাজ্য স্তরের অ্যাথেলেটিক্সে সফল হয় স্বপ্না। এরপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। হাই জাম্পে জেলা, রাজ্য এবং জাতীয় স্তরে সফল হয়েছে সে। স্বপ্নার বাবা পঞ্চাননবাবু বলেন, “সকলের সহযোগিতা নিয়ে আমার মেয়ে সফল হচ্ছে। আমিও চাই সে জীবনে আরও এগিয়ে যাক।”
শুধু এশিয়ান স্কুল মিটেও নয়, কোচিতে চলা ইন্টার জোনাল জুনিয়র অ্যাথলেটিক মিটেও ভাল ফল করেছে বাংলার ছাত্রছাত্রীরা। বাংলা দলের দায়িত্বে থাকা সুখেন মণ্ডল জানান, কোচির মহারাজা কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতায় রাজ্যের প্রতিযোগীরা পেয়েছে ৮টি সোনা, ১২টি রুপো ও ১১টি ব্রোঞ্জ।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.