চিডিদের লক্ষ করে ছোড়া হল ইট, জলের বোতল
উৎসব ভুলে ইস্টবেঙ্গল এখনই দেখছে মিশন কুয়েত
লাল হলুদে ইতিহাস গড়ার পরও মেহতাব, চিডিরা দুর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচতে দৌড়তে শুরু করলেন ড্রেসিংরুমের দিকে!
উৎসব করবেন কী, ম্যাচের পর তাঁদের উপর পাদাং গ্যালারি থেকে নাগাড়ে উড়ে এল জলের বোতল, ইটের টুকরো!
ড্রেসিংরুমে উচ্ছ্বাস ছিল সামান্যই। লাল হলুদ ব্রিগেড সব উচ্ছ্বাস তুলে রাখল ফাইনালে ওঠার দিনের জন্য। শেষ চারে ওঠার দু’ঘণ্টা পরে পাদাংয়ের হোটেলে যখন মার্কোস ফালোপাকে ফোনে ধরা হল তখন তিনি পরের ম্যাচের কথা ভাবতে শুরু করে দিয়েছেন। কোচের ভাবনায় ‘মিশন কুয়েত’। “কুয়েত এসসি খুব শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। আমাদের এখন থেকেই সেমিফাইনালের জন্য মনঃসংযোগ করতে হবে। আজ আমার দল একটা দারুণ সাফল্য পেয়েছে। কিন্তু এখনও সেলিব্রেট করার সময় আসেনি। ফাইনালে ওঠার পর সেলিব্রেশন হবে,” সতর্ক গলা ব্রাজিলিয়ান কোচের।
উৎসব দূরে সরিয়ে রাখলেও মাঠের মধ্যে এ দিন যে বিশ্রী ঘটনা ঘটেছে এবং ম্যাচ চলাকালীন যে ভাবে গ্যালারিতে বাজি ফাটানো হয়েছে তাতে রীতিমতো ক্ষুব্ধ লাল-হলুদ শিবির। তারা ইতিমধ্যেই এএফসি-র কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগও জানিয়েছে।
যাঁর গোলে এ দিন ডেম্পোর পাঁচ বছর আগে করা রেকর্ড ছুঁল লাল-হলুদ জার্সি, সেই জেমস মোগা অবশ্য উচ্ছ্বসিত। এ বারই ক্লাব বদলে এসে ইতিহাস ছোঁয়ার সুযোগ পেয়ে বলছিলেন, “একটা অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছে। গোল শোধ করার পর আমরা সবাই খুব স্বস্তি পেয়েছিলাম। তবে আমার জন্য নয়, পুরো টিমের পারফরম্যান্সের জন্যই এই জয় এসেছে,” বলছিলেন মোগা।
মাঠে এ দিন হাজার দশেক পাদাং সমর্থক উপস্থিত ছিলেন। হাতে গোনা দু’চার জন ভারতীয় শুধু চিৎকার করছিলেন ফালোপার দলের জন্য। যাঁরা আবার হাই কমিশনের লোকজন। কিন্তু তাতে দমানো যায়নি ইস্টবেঙ্গলকে।
ইস্টবেঙ্গল আর্কাইভে মোগার নাম স্কোরলাইনে লেখা থাকলেও, তার আসল কারিগর কিন্তু বলজিৎ সাইনি-ই। ইস্টবেঙ্গলের কোচ বলছিলেন “ওই সময় আক্রমণে আরও চাপ বাড়াতে চেয়েছিলাম। বলজিৎকে যে কাজে নামিয়েছিলাম সেটা ও ঠিকঠাক করেছে।”
“দারুণ সাফল্য। ভারতীয় ফুটবলের উল্লেখযোগ্য দিন। তবে সেমিফাইনালটা বেশ কঠিন হবে। অবশ্য, কোন সেমিফাইনালই বা সোজা হয়? এএফসি কাপের সেরা চারটে দল খেলবে। কুয়েতের লিগটা খুব হাড্ডাহাড্ডি হয়। সেই লিগে খেলে আল কুয়েত এসসি। ওদের কয়েকজন ভাল ফুটবলার আছে। তবে ম্যাচে সব কিছুই হতে পারে। ইস্টবেঙ্গলের এ দিনের ম্যাচটা দেখা হয়নি। ওদের প্লেয়ার ও সমর্থকদের জন্য ভাল লাগছে। মিস্টার ফালোপাকে আর কী বলব, উনি দলের ব্যাপারে যথেষ্ট ভাল জানেন, বোঝেনও।” —
বাংলার ফুটবলে ইতিহাস গড়ার পরও কোচের মতো সাবধানী অধিনায়ক মেহতাব হোসেনও। বলছিলেন, “আসিয়ান কাপ জয়ের উচ্ছ্বাস দেখেছিলাম। এ বার এএফসি কাপ জিতে সেটা উপভোগ করতে চাই। তবে এখনও আমাদের অনেকগুলো হার্ডল টপকাতে হবে। কুয়েতের টিমটা গতবারের চ্যাম্পিয়ন। অ্যাওয়ে ম্যাচে ভাল ফল করতে পারলেই আমাদের ফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে।”
ইস্টবেঙ্গলের সুখের দিনে কাঁটা হয়ে থাকল সুয়োকার চোট। ওখানকার স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে জাপানি মিডিও-র প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়। কলকাতায় ফিরে এমআরআই করানোর পরই বোঝা যাবে সুয়োকার চোট কতটা গুরুতর। ফালোপা অবশ্য বললেন, “সুয়োকার চোট গুরুতরই মনে হচ্ছে। ওকে কবে পাওয়া যাবে তা এখনই বলা সম্ভব নয়। মনে হচ্ছে ১ অক্টোবর সেমিফাইনালের অ্যাওয়ে ম্যাচে সুয়োকা ছাড়াই নামতে হবে।”
এএফসি-র সেমিফাইনালে পৌঁছনোর পর ইস্টবেঙ্গলে কোনও উৎসব হয়নি ঠিকই, তবে ফুটবলারদের প্রত্যেককে পঞ্চাশ ডলার করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। ক্লাবের শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার বলে দিলেন, ‘‘আসল উৎসবটা করব এএফসি কাপ জেতার পরই।” ময়দানের ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে অবশ্য সন্ধ্যায় ভিড় করেছিলেন কিছু লাল-হলুদ সমর্থক। পটকা ফাটিয়ে, আবির মেখে উৎসব পালন করেন তাঁরা। আজ, বুধবার বিকেলে শহরে ফিরছেন চিডি-মোগা-মেহতাবরা।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.