বিপর্যয় কি ‘আকস্মিক’, ময়নাতদন্ত সিপিএমে
পুর নির্বাচনে বর্ধমানে হেরে যাওয়াটা আকস্মিক কোনও ঘটনা নয় বলেই মনে করছেন স্থানীয় সিপিএম নেতা-কর্মীরা। তাঁদের বক্তব্য, দীর্ঘ দিন ধরেই বর্ধমান শহরের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করেছেন জেলার গ্রামীণ এলাকার নেতারা। ক্ষমতায় থাকার ফলে সংগঠনের সেই দুর্বলতা বোঝা যায়নি। পালাবদলের পরে তা সামনে এসে পড়েছে।
বর্ধমান শহরের সংগঠন নিয়ন্ত্রণ করেন গ্রামীণ এলাকার নেতারা। আর তা নিয়েই দলের মধ্যে কথা উঠেছে। পুর নির্বাচনে বিপর্যয়ের কাটাছেঁড়া করতে গিয়ে শহরের এক তাবড় সিপিএম নেতা বলছেন, “শহর থেকে নতুন কোনও নেতাই এত দিন তুলে এনতে পারেনি দল। গ্রামীণ নেতাদের দিয়েই শহরের সমগঠন চলছে তার ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে।”
বর্ধমান শহরে যুব সংগঠন এবং ছাত্র সংগঠনে যাঁরা নেতৃত্ব দিয়েছেন তাঁদের তুলে ধরা হয়নি। উল্টে সব ক্ষেত্রেই গ্রামীণ এলাকার নেতাদের ওপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই কর্মীরা সংগঠনের এই সমস্যার কথা বারবার দলীয় নেতৃত্বের কাছে জানিয়েছেন বলেও জানা গিয়েছে। দলীয় খবর, ২০০৮ সালের পুর নির্বাচনের ফল থেকেই এই ব্যাপারটা ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছিল। সে বার নানা কৌশলে কার্যত জোর করে ক্ষমতার দখল নেওয়া হয়েছিল। তখন থেকে শহর এলাকায় নেতৃত্ব তৈরির চেষ্টা করলে এমন ফল হত না।
দক্ষিণ দামোদর এলাকা এক সময়ে ছিল সিপিএমের ঘাঁটি। বর্ধমানের জেলা সম্পাদক অমল হালদার, প্রাক্তন সভাধিপতি উদয় সরকার, পুর চেয়ারম্যান আইনুল হক-সহ অনেক নেতাই এই এলাকা থেকে জেলা রাজনীতিতে এসেছেন। পরে তাঁরা শহরে থাকতে শুরু করেন। কিন্তু শহরের নানান চাহিদার সঙ্গে, নিজেদের পুরনো ধ্যানধ্যরণা ছেঁটে ফেলে মিশে যেতে পারেননি। পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা নেতাদের এলাকায় ভোট ব্যাঙ্কে ধস নেমেছে। শহরের সংগঠনেও তার প্রভাব পড়েছে। আগে বর্ধমান শহরে ভোট হলে গ্রামীণ এলাকার কর্মী-সমর্থকেরা ভিড় জমাতেন। ভোটের কাজে সাহায্য করতেন। পাশপাশি ক্ষমতায় থাকার সুবাদে পুলিশ বিরোধীতা তো করতই না উল্টে মদত দিত। এ বারে স্বাভাবিক ভাবে তা হয়নি।
সর্বোপরি, বর্ধমান শহরের বেশির ভাগ বাসিন্দা সিপিএমের প্রতি বিরূপ হয়ে উঠছিলেন। দলের নেতারা তা বুঝতেই পারেননি বলে মনে করছে সিপিএমের একটি অংশ। বাম বিরোধী সেই সব শহুরে মানুষের প্রথম পছন্দ ছিল কংগ্রেস। কিন্তু সন্ত্রাসের ভয়ে অনেকেই সে সময়ে সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে গিয়েছিলেন।
২০০৯ সালে পরিবর্তনের সম্ভবনা দেখতে পেয়ে অনেকেই সক্রিয় রাজনীতিতে ফেরেন। ওই নেতারা আগে থেকেই শরিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। তাঁদের থেকে সরকারি নানা সুবিধাও নিতেন। সেই গোষ্ঠী সরে যাওয়াতেও সিপিএমের ক্ষমতা কমেছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.