এ বারেও দুর্গাপুজোয় ও পার বাংলার দর্শনার্থীরা ভিড় করবেন মহামায়াপাট এলাকার মণ্ডপ চত্বরে। মিলেমিশে এ পার বাংলার দর্শনার্থীদের সঙ্গে আনন্দে মাতবেন তাঁরা। উৎসবের চার দিন দুই বাংলার বাসিন্দাদের মিলন মঞ্চ হয়ে উঠবে ওই পুজো মণ্ডপ। স্বপ্নাদেশে শুরু হওয়া দিনহাটার ওই পুজো কাঁটাতারের বেড়ার ব্যবধান ঘুচিয়ে দেয়। উদ্যোক্তারা জানান, জনশ্রুতি রয়েছে কোচবিহারের মহারাজাদের আমলে ডুয়ার্সের জয়ন্তী থেকে রংপুর পর্যন্ত রেললাইন বসানোর কাজ চলছিল। সেই সময় মাটি খুঁড়তে গিয়ে শ্রমিকেরা গোলাকৃতি শিলাখন্ড দেখতে পান। ফনা তুলে ছিল বিশালাকার একটি সাপ। পরে স্বপ্নাদেশ পেয়ে শ্রমিকেরা দেবী মহামায়া হিসাবে শিলাখন্ডটিকে প্রতিষ্ঠা করেন।
শরতের আবাহনে ফের স্বপ্নাদেশে মহামায়াকে দশভূজারূপে দুর্গাপুজোর বন্দোবস্ত করেন বাসিন্দারা। এবার পুজোর ১২৩তম বছর। প্রতিমার বিশাল আকার আর প্রাচীনতার নিরিখে যা বাসিন্দাদের অনেকের কাছে বড়মার পুজো নামেও পরিচিত। পুজো কমিটির কর্মকর্তা কালীপদ পাল বলেন, “নিয়ম নিষ্ঠায় পুজোর আয়োজন হয়। দেবীর কাছে মানত করতে ভিড় উপচে পড়ে। প্রতি বছর বাংলাদেশের প্রচুর দর্শনার্থী আসেন।” মহামায়াপাট চত্বরের স্থায়ী মন্দিরে পুজো হয়। স্থানীয় মৃৎশিল্পী বিশ্বজিৎ পাল এবার প্রতিমা গড়ছেন। পুজোয় উপকরণের তালিকাও দীর্ঘ। মহষ্টমীতে ১০৮টি পদ্ম। গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, মানসাই, ধরলা, বানিয়াদহ প্রভৃতি নদীর জল, গঙ্গাপাড়ের মাটি। অজুর্ন বট পাকুড়ের ছাল। আর সন্ধিপুজোয় মানকচুর পাতার ওপর ১০৮টি প্রদীপ জ্বালানো হয়। মহাষ্টমীতেই লক্ষাধিক টাকার সন্দেশ ভোগ দেবীর উদ্দেশ্যে নিবেদন করা হয়। ৫ হাজার প্যাকেট সন্দেশ নিবেদন করেন বাসিন্দারা। যা সামলাতে সাত পুরোহিত দিনভরব্যস্ত থাকেন। দিনহাটা মহকুমার অন্যতম প্রাচীন এই পুজোকে ঘিরে মহামায়াপাট চত্বরে মেলা বসে। পুজো কমিটি সদস্য বিভুরঞ্জন সাহা বলেন, “এ বারেও বাংলাদেশ থেকে প্রচুর দর্শনার্থীরা পুজোর সময় আসবেন বলে তাঁদের আত্মীয়রা যোগাযোগ করেছেন।” |