তিন দফায় ই-টেন্ডার ডেকেও কোনও ঠিকাদার সংস্থা এগিয়ে না আসায় তোর্সার জল শোধন করে বাড়ি বাড়ি সরবরাহ করার প্রকল্পের কাজ শুরুই করতে পারছে না কোচবিহার পুরসভা। সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে পুরসভা চেয়ারম্যান বীরেন কুন্ডু বলেন, “বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী ৫০ লক্ষ টাকার বেশি কাজের ক্ষেত্রে ই-টেন্ডার ডাকতে হবে। তোর্সার জল উত্তোলন প্রকল্পের জন্য ২০ কোটি টাকার কাজের ই-টেন্ডার তিন দফায় করেছি। কিন্তু কোনও আগ্রহী ঠিকাদার সংস্থা এগিয়ে আসছে না। কাজও শুরু করা যাচ্ছে না।” চেয়ারম্যানের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দিষ্ট বিধির জন্য ওই সমস্যা তৈরি হয়েছে।
তিনি জানান, কেন্দ্রীয় ওই প্রকল্পে ৩৬ কোটি টাকা অনুমোদন হয়েছে। প্রথম দফায় গত বছর ৮ কোটি টাকা বরাদ্দ এসেছে। নিয়ম অনুযায়ী প্রায় ২০ কোটি টাকার ই-টেন্ডারে অংশগ্রহণকারী সংস্থাগুলিকে পুরসভার তহবিলে প্রায় ২৪ লক্ষ টাকা ‘সিকিউরিটি মানি’ হিসাবে জমা দিতে হবে। কোন সংস্থাই ওই টাকা দিতে চাইছে না বলে টেন্ডারে অংশ নেয়নি। রাজ্য পুর দফতরে বিষয়টি জানিয়েছি। পাশাপাশি, মামলার নিষ্পত্তি হলেই ‘আইএসএইচডিপি’ প্রকল্পে দ্বিতীয় দফায় ৪৭০টি বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করা যাবে। উল্লেখ্য, ওই প্রকল্পের আর্থিক নয়ছয়ের অভিযোগে কোচবিহারের কয়েকজন বাসিন্দা কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থে মামলা করেছেন। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার দুই বছর আগে কোচবিহার পুরসভাকে পানীয় জল প্রকল্পের জন্য ৩৬ কোটি টাকা অনুমোদন দেয়। ২০১২ সালে ৮ কোটি টাকা পান পুর কর্তৃপক্ষ। তারপরেই শহর লাগোয়া কালীঘাট থেকে তোর্সার জল তুলে বাড়ি বাড়ি সরবরাহের প্রকল্প নিয়ে সমীক্ষা শুরু হয়। প্রকল্পের ‘ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট’ ও ‘রিজার্ভা’র তৈরির জন্য বিবেকানন্দ স্ট্রিট লাগোয়া নন্দন কাননে গাছও কেটে ফেলা হয়। কিন্তু আগ্রহী ঠিকাদার সংস্থা না মেলায় অবশ্য কাজই আর শুরু হচ্ছে না। পুরসভার কয়েকজন অফিসার জানান, রাজ্য সরকার অধিগৃহীত কিছু সংস্থা টেন্ডার ছাড়া প্রকল্পের কাজ করতে পারেন। সেরকম একটি সংস্থাকে রাজ্য সরকার বাছাই করে দিলে ওই কাজ শুরু করা যাবে। বিরোধী দলনেতা সিপিএমের মহানন্দ সাহা বলেন, “ওই জল প্রকল্পের কাজ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই টালবাহানা হচ্ছে। কাজ শুরু না হলে আন্দোলনে নামব।” |