রাত বাড়লেই নেশার ঠেক বসে যায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে
সারাদিন চরে বেরায় গরু। রাত বাড়লে দুষ্কৃতীদের অবাধ আনাগোনা। আশেপাশে নেশার ঠেক। এটাই হল মন্তেশ্বর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের রোজনামচা। মন্তেশ্বর ব্লকে কোনও গ্রামীণ হাসপাতাল নেই। কালনা মহকুমার পাঁচটি ব্লকের মধ্যে সবথেকে বড় এই ব্লকে রয়েছে ১৩টি পঞ্চায়েত। ‘সবেধন নীলমণি’ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপর শুধু মন্তেশ্বরের ছাড়াও নির্ভরশীল পূর্বস্থলী, ভাতার ও কাটোয়ার বাসিন্দারা। স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে খবর, প্রতিদিন গড়ে প্রায় চারশো রোগী এখানে চিকিৎসা করাতে আসেন। কিন্তু বর্তমানে নানা সমস্যায় জর্জরিত এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি।
আগাছায় ঢেকেছে ময়নামপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রও। —নিজস্ব চিত্র।
সবথেকে বড় সমস্যা হল চিকিৎসক সঙ্কট। স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে নিয়ে বর্তমানে চিকিৎসকের সংখ্যা মাত্র দু’জন। পরিস্থিতি সামাল দিতে পাশের ময়নামপুর ও ধান্যখেড়ুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে দু’জন চিকিৎসককে পাঠানো হলেও তাঁরা অনিয়মিত। কারণ, ওই দুই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে একজন করেই চিকিৎসক রয়েছেন। শুধু চিকিৎসক নয়, কম রয়েছে নার্স ও সাফাইকর্মীর সংখ্যাও। ৯ জন নার্সের জায়গায় মন্তেশ্বর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রয়েছেন ৪ জন। তাঁদের মধ্যে দু’জনকে আনা হয়েছে ধান্যখেড়ুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে। তিন জন সাফাই কর্মীর জায়গায় রয়েছেন দু’জন।
মাসে দেড়শোরও বেশি প্রসব হলেও ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এখনও নেই সিজারের পরিষেবা। ম্যালেরিয়া ছাড়া কোনও রক্ত পরীক্ষাও হয় না। সমস্যার কথা স্বীকার করে মন্তেশ্বরের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক কৃষেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, “পাঁচমাস ধরে সমস্যা চলছে। সব থেকে বেশি সমস্যা হচ্ছে চিকিৎসক নিয়ে। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।” মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক সুভাষচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “চেষ্টা চলছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার।”
অভাবের খতিয়ান
• দু’জন স্থায়ী ও দু’জন অস্থায়ী চিকিৎসক আছেন। তবে তাঁরাও অনিয়মিত ।
• ন’জন নার্স থাকার কথা, আছেন চার জন।
• কমতি রয়েছে সাফাইকর্মীরও।
সমস্যা নিয়ে সরব স্থানীয় বাসিন্দারা। মন্তেশ্বরের স্থানীয় বাসিন্দা বিপ্লব সামন্ত বলেন, “মাস চারেক আমার বৌমার প্রসব বেদনা ওঠায় তাঁকে মন্তেশ্বর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। কিন্তু ভর্তি করার পর চিকিৎসকেরা জানান, বৌমাকে সিজার করাতে হবে। ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সিজারের পরিকাঠামো নেই। বাধ্য হয়ে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে বৌমাকে নিয়ে যেতে হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে।”
রবিবার, এই হাসপাতাল পরিদর্শনে এসেছিলেন বর্ধমানের নব নির্বাচিত জেলা সভাধিপতি দেবু টুডু। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পঞ্চায়েত স্তরের জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেন তিনি। সেখানে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বেহাল হাল নিয়ে সরব হন অনেকেই। মন্তেশ্বর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে গ্রামীণ হাসপাতালে রূপান্তরিত করার দাবিও ওঠে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.