পুরসভার রাশ কার হাতে থাকবে তা নিয়ে দড়ি টানাটানি অব্যাহত থাকল দ্বিতীয় দফায় বাজেট পেশের দিনেও। সোমবার শিলিগুড়ি পুরসভায় ফের বাজেট পেশ করেন মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত। যা কি না ‘বিলম্বিত বাজেট’ বলে পুরসভার প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। কিন্তু, প্রতিবেদনে কী রয়েছে তা শোনার চেয়ে সভায় হইহল্লাই যেন বেশি হল। বামেরা গত ২৩ মার্চ প্রথমবার বাজেট পেশ হয়েছিল তা শোনার উপরেই জোর দিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, সেই সময়ে চেয়ারম্যান পদে বিতর্কিত কাউন্সিলর নান্টু পাল থাকায় তাঁরা বাজেট পেশের সময়ে গরহাজির ছিলেন।
পক্ষান্তরে, তৃণমূল কাউন্সিলররা পুরানো বাজেট শোনার সময় নেই, এ কথা জানিয়ে সভাকক্ষ ছেড়ে চলে যান। তাই পুরসভার অন্দরে প্রশ্ন উঠেছে, যদি পেশের দিনই এমন ডামাডোল হয়, তা হলে বাজেট বিতর্কের দিন কী হবে? শেষ পর্যন্ত বাজেট অনুমোদন হবে তো? আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর ওই বাজেট বিতর্ক হওয়ার কথা। মেয়র অবশ্য আশাবাদী। তিনি বলেন, “আইন মেনে বাজেট পেশ হয়েছে। পুজোর মুখে শহরবাসীর পরিষেবা পেতে যাতে কোনও অসুবিধে না হয়, সে জন্য সকলের সহযোগিতা নিশ্চয়ই পাব।”
এ দিন প্রস্তাবিত বাজেট পেশ হতেই তৃণমূল কাউন্সিলর কৃষ্ণ পাল বলেন, “আগের বাজেট পাস হয় নি তা আগে স্বীকার করতে হবে মেয়রকে। এতদিন তিনি কেন পুরানো বাজেট পড়তে থাকেন। তখন ফের বিরোধিতা করে তৃণমূল। তাঁদের অভিযোগ, “কেন ছ’মাস আগের বাজেট আজকে পড়বেন মেয়র। তবে মেয়র মিথ্যে বলেছিলেন আগে সেটা স্বীকার করতে হবে।” বামেরা কংগ্রেসের বোর্ডের পেশ করা বাজেটের সমালোচনা করলেও তা অনুমোদনে বাধা দেওয়ার কোনও সিদ্ধান্ত নেননি। অন্তত পুরসবার বিরোধী দল নেতা নুরুল ইসলামের কথায় তেমনই আশা করছেন কংগ্রেসের কাউন্সিলররা। কারণ, নুরুলবাবু বলেন, “এই বাজেট প্রস্তাব কংগ্রেস-তৃণমূল জোট থাকার সময়ে তৈরি হয়েছিল। মনে হচ্ছে বাজেট দিশাহীন। আমরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।” ২৭ সেপ্টেম্বর শিলিগুড়ি পুরসভা ঘেরাওয়ের হুমকি দিয়েছে দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্ট। বামফ্রন্টের আহ্বায়ক তথা প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যের অভিযোগ, “শিলিগুড়ি শহরের পুর পরিষেবা পুরোপুরি বিপর্যস্ত। কংগ্রেস-তৃণমূল বোর্ড গড়ার পরে ৪ বছরে শহরের উন্নয়ন ৪০ বছর পিছিয়ে গিয়েছে। শহরবাসী তিতিবিরক্ত। তাই পুরসভা ঘেরাও করে প্রতিবাদ জানাব।” |