পুকুরে চুরি রুখতে বেড়ায় বিদ্যুৎ, মৃত্যু
মাছ চুরি রুখতে কাঁটাতারের বেড়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে বাড়ির পুকুর ঘিরে রাখা হয়েছিল। ভোরবেলা মাছ ধরতে গিয়ে কাঁটাতারের বেড়ায় তড়িদাহত হয়ে মৃত্যু হল এক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রের। সোমবার সকালে ওই ঘটনায় জলপাইগুড়ি গোমস্তাপাড়ায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। যে বাড়ির পুকুরে ঘটনাটি ঘটেছে, সেই বাড়িতে ভাঙচুর চালায় বাসিন্দারা। দুই সদস্যকে অনিচ্ছাকৃত খুনের অভিযোগে ধরেছে পুলিশ।
নিহতের নাম শুভাশিস বিশ্বাস (২০)। আনন্দচন্দ্র কলেজের কলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র শুভাশিস, দুই বন্ধুর সঙ্গে ভোর চারটে নাগাদ পাড়ার ‘রায়চৌধুরী বাড়ির’ পুকুরে মাছ ধরতে যায়। গোমস্তাপাড়ার গলির শেষ মাথায় থাকা পুকুরটি কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘেরা থাকলেও, ঢোকার জন্য একটি ছোট ফাঁক রয়েছে। এদিন ভোরে সেই ফাঁক দিয়ে তিন ছাত্র পুকুর পাড়ে মাছ ধরতে শুরু করে। সে সময়ে শুভাশিসের হাত বেড়ার তারে লাগার পরেই ছটফট করে লুটিয়ে পড়ে বলে অভিযোগ। হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করা হয়। জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, “তড়িদাহত হয়েই ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। লোকালয়ের এক পুকুর দিয়ে ঘিরে রাখার অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।”
মৃত্যুর খবর পেয়েই গোমস্তাপাড়ায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। গলির রাস্তার পাশে থাকা যে বাড়ির পুকুরের বেড়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে রাখা হয়েছিল তাঁদের গ্রেফতার করার দাবি জানাতে থাকেন বাসিন্দারা। ছাত্র পরিষদ এবং যুব কংগ্রেসের সমর্থকরা চার ঘণ্টা ধরে এলাকায় বিক্ষোভ দেখায়। বাড়ির দরজা-জানালাও ভেঙে দেয় বাসিন্দারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে লাঠি চালাতে হয় বলে জানা গিয়েছে। শুভাশিসের সঙ্গী নারায়ণ বিশ্বাস বলেন, “এদিন সকালে মাছ ধরতে যাই। তখনও ভোরের আলো ঠিকমতো ফোঁটেনি। পুকুর পাড়ে বসে ছিলাম। একটু দূরে গিয়ে বসার জন্য শুভাশিস পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়ে ওর হাত বেড়ায় লাগলে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।” অন্য সঙ্গী প্রথম বর্ষের ছাত্র সুমন সাহা বলেন, “ও পড়ে যেতে আমরা দৌড়ে গিয়ে পাড়ার সকলকে ডেকে আনি।”
লোকালয়ে থাকা কোনও পুকুর বা বাড়িতে বিদ্যুতবাহী তার দিয়ে ঘিরে রাখা বেআইনি। কোনও কারণে, ঘিরে রাখার প্রয়োজন হলে বিদ্যুৎ দফতর সহ প্রশাসনের থেকে অনুমতি নিতে হয়। বড় হরফে ও সর্তকীকরণ চিহ্ন ব্যবহার করে সর্তক করতে হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গোমস্তাপাড়ার ওই পুকুরে সে সবের কোনও বালাই ছিল না। এমনকী সকালে ঘটনার পরে পরিবারের সদস্যরা দ্রুত বেড়ার থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ খুলে নেয়।
পুকুরটি গোমস্তাপাড়ার রায়চৌধুরী পরিবারের শরিকদের। মূল মালিক বাইরে থাকেন। এদিন ঘটনার পরে পরিবারের এক শরিক পালিয়ে গিয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দা এবং পুলিশের দাবি। ওই পরিবারের স্বপন রায়চৌধুরী এবং তাঁর ছেলেকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। যদিও, ধৃত স্বপনবাবু পুকুরটি তাঁর নয় বলে দাবি করেছেন। তাঁর অভিযোগ, “আমি বা আমার ছেলে এই ঘটনায় জড়িত নই। পুকুরের বেড়ায় আদৌও বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল কিনা তা আমি জানি না।” মৃত ছাত্রের বাবা পেশায় ফল ব্যবসায়ী কমলবাবু বলেন, “বেড়ায় যে বিদ্যুৎ সংযোগ লাগানো ছিল, তা পাড়া প্রতিবেশীদের জানানো হয়নি। আমার ছেলেকে ফিরে আর পাব না। তবে যাদের দোষে আমার ছেলে মারা গেল তাদের শাস্তি চাই।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.