র্যাগিংয়ের দায়ে সাজা পাওয়া দুই ছাত্রের শাস্তি মকুবের দাবিতে রিলে অনশন চালাচ্ছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল পড়ুয়া। তার আগে তাঁরা উপাচার্য, সহ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রারকে টানা ৫০ ঘণ্টা ঘেরাও করে রেখেছিলেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্তে অনড়। সোমবার রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়ে দিলেন, র্যাগিং রুখতে রাজ্য সরকার আরও কঠোর ব্যবস্থার পক্ষপাতী। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর সুপারিশ অনুযায়ী এই ব্যাপারে নিয়মকানুন আরও কড়া করা হবে।
এ দিন কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় সংগঠনের সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের সূচনা করেন শিক্ষামন্ত্রী। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমরা যে-কোনও মূল্যে র্যাগিং রুখতে বদ্ধপরিকর। এই ব্যাপারে ইউজিসি-র সুপারিশ মাথায় রেখে আরও কঠোর ব্যবস্থার কথা ভাবা হচ্ছে।” মন্ত্রীর মতে, অনেক সময় র্যাগিংয়ের শুরুটা হয় মজার ছলে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার পরিণতি হয় ভয়াবহ। এমনকী র্যাগিং কখনও কখনও আত্মহত্যারও কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে র্যাগিং হলে সেখানকার সব পড়ুয়ার অভিভাবকেরাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এই সব দিক বিবেচনা করে র্যাগিং থেকে বিরত থাকার জন্য পড়ুয়াদের পরামর্শ দিয়েছেন ব্রাত্যবাবু।
সম্প্রতি রাজ্যের অগ্রণী দুই বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটে। একটি বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটি বা বেসু-তে, অন্যটি যাদবপুরে। দু’টি ক্ষেত্রেই কর্তৃপক্ষ কড়া ব্যবস্থা নেন। বেসু-তে শাস্তি দেওয়া হয় পাঁচ ছাত্রকে, যাদবপুরে দু’জনকে। কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের জেরে বেসু-তে কোনও ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখা যায়নি। কিন্তু যাদবপুরে এক দল ছাত্র ওই শাস্তি প্রত্যাহারের দাবিতে কর্তৃপক্ষকে ঘেরাও করে রাখেন। পরিস্থিতির চাপে শেষ পর্যন্ত তাঁরা ঘেরাও তুলে নিতে বাধ্য হন। কিন্তু তার পর থেকে তাঁরা রিলে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে র্যাগিংয়ের ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রীর কড়া অবস্থান বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের মনোবল বাড়াবে বলে অনেকেই মনে করছেন। |