নন্দীগ্রাম নিখোঁজ মামলায় এ বার আত্মসমর্পণ তপনের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
মাঝে ১৬ দিনের ব্যবধান। সুকুর আলির পর এ বার আত্মসমর্পণ করলেন তাঁর ছায়াসঙ্গী, গড়বেতার আর এক সিপিএম নেতা তপন ঘোষ। দীর্ঘ দু’বছর ফেরার থাকার পরে সোমবার তমলুক আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তপনবাবু। সুকুরের মতো তাঁর আত্মসমর্পণও নন্দীগ্রাম নিখোঁজ মামলায় অভিযুক্ত হিসেবে।
এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ ঘনিষ্ঠ কয়েকজনের সঙ্গে তমলুকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা আদালতে আসেন সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটির সদস্য তথা গড়বেতা জোনাল সদস্য তপনবাবু। তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করে জেলা ও দায়রা বিচারক মধুমতি মিত্র তপনবাবুকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। |
|
আদালতে আত্মসমর্পণের পরে তপন ঘোষ। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস |
গত ৭ সেপ্টেম্বর সুকুর আলির আত্মসমর্পণের সময়ই আঁচ মিলেছিল এ বার তপনের পালা। সিপিএম সূত্রেও খবর, বিভিন্ন মামলায় নাম জড়ানো ফেরার দলীয় নেতাদের অনেকেই শারীরিক, আর্থিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে, আত্মসমর্পণ করতে চাইছেন। তাঁদের পরিজনেরাও সে মর্মে দরবার করায় ‘চাপ’ বাড়ছিল দলের উপরে। তবে কি চাপের মুখেই ধরা দিলেন তপন ঘোষ? সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক দীপক সরকার শুধু বলেন, “মামলাটাই তো মিথ্যে।” এ দিন পুলিশ পাহারায় তপনকে কোর্ট লক-আপে নিয়ে যাওয়ার সময় তৃণমূলের লোকজন বিক্ষোভ দেখায়। তপন ঘোষের ফাঁসির দাবিতে স্লোগান ওঠে। তপনবাবুর অবশ্য বিশেষ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। কোর্ট লক-আপে নিয়ে যাওয়ার পথে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখেও তিনি আগাগোড়া চুপ ছিলেন।
২০০১ সালে ছোট আঙারিয়া গণহত্যা মামলায় প্রথম নাম জড়ায় তপনবাবুর। ওই বছর ৪ জানুয়ারি ছোট আঙারিয়ায় তৃণমূলকর্মী বক্তার মণ্ডলের বাড়িতে সিপিএম হামলা চালায় বলে অভিযোগ। নিহতদের দেহ লোপাট করা হয় বলেও অভিযোগ। ওই মামলায় তপন, সুকুর-সহ মোট ১৪ জন সিপিএম নেতা-কর্মীকে অভিযুক্ত করে সিবিআই। তবে গড়বেতার বিধায়ক সুশান্ত ঘোষের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তপন-সুকুর
ধরা পড়েননি।
২০০৭ সালে সিপিএমের নন্দীগ্রাম ‘পুনর্দখল’ পর্বে ধরা পড়েন তপন-সুকুর। ওই বছর ১০ নভেম্বর গোকুলনগরে ‘ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি’র মিছিলে গুলিবর্ষণে অনেকে জখম হন। সে দিন তিন আহতকে এগরা হয়ে বেলদার দিকে ‘পাচারে’র সময় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের হাতে ধরা পড়েন তপন-সুকুর। পুলিশ সময়ে চার্জশিট দিতে না পারায় তাঁরা জামিন পান।
২০১১ সালের মে মাসে রাজ্যে পালাবদলের পরে ছবিটা পাল্টায়। ছোট আঙারিয়া মামলায় অভিযুক্ত দিল মহম্মদ ধরা পড়ায় মামলাটি প্রাণ পায়। এর পরেই গা ঢাকা দেন তপন-সুকুর। স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, মঙ্গলাপোতা হাইস্কুলের শিক্ষক তপনবাবু দীর্ঘদিন স্কুলে না আসায় বেতন আগেই বন্ধ হয়েছিল। আদালত জেল হেফাজতে পাঠানোয় এ বার তাঁকে ‘সাসপেন্ড’ করা হবে।
|
পুরনো খবর: সুকুর আলির পুলিশি হেফাজত |
|