সময়ের আগে মৃত সন্তান প্রসব করায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জেরে মৃত্যু হল এক হস্তিনীর। রবিবার মাঝরাতে ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার বড়জোড়া রেঞ্জের খাঁড়ারি-কাঞ্চনপুর গ্রাম লাগোয়া ঘগরাবাঁধ এলাকায়। সোমবার সকালে বাসিন্দারা ধান জমিতে হস্তিনীটির দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। দেহটি পরীক্ষা করে পশু চিকিৎসক সঞ্জয় শীট বলেন, “প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে শিশু হাতিটি মায়ের গর্ভেই মারা গিয়েছিল। নির্দিষ্ট সময়ের কয়েক মাস আগেই গর্ভপাত হয়েছে। এ সবের জেরে হস্তিনীর জরায়ুতে সংক্রমণ হয় এবং অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে।” মৃত হস্তি-শাবকের দেহ অবশ্য মেলেনি। বনকর্তাদের ধারণা, শিশুটির দেহ রাতে কোনও জন্তু জঙ্গলের গভীরে টেনে নিয়ে যেতে পারে। |
হস্তিনীর দেহ ঘিরে ভিড় গ্রামবাসীর। ছবি: অভিজিৎ সিংহ। |
বনদফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ময়ূরঝর্না থেকে ২৫-৩০টি হাতির একটি দল কয়েক মাস ধরে বড়জোড়া রেঞ্জের জঙ্গল দাপিয়ে বেরাচ্ছে। মৃত হাতিটি ওই দলেরই বলে অনুমান বনদফতরের আধিকারিকদের। স্থানীয় খাঁড়ারি, কাঞ্চনপুর, উঁয়াড়া গ্রামের বাসিন্দারা জানান, রবিবার রাত প্রায় ১টা থেকে বিকট স্বরে চিৎকার শুরু করে হস্তিনীটি। ভোর রাত পর্যন্ত টানা চিৎকার শোনা যায়। সোমবার সকালে গ্রামবাসীরা গিয়ে দেখেন, ধান জমিতে পড়ে রয়েছে ওই হস্তিণীর দেহ। দেহের আশেপাশে চাপ চাপ রক্ত পড়ে ছিল। বনকর্মীরা জানান, হস্তিণীর দেহ থেকে কিছুটা দূরে কিছু নমুনা দেখে তাঁদের অনুমান, সেখানে শিশু-হাতিটির জন্ম হয়েছিল। পরে কুকুর, শেয়াল এসে হয়ত দেহটি টেনে নিয়ে যায়।
এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন বনদফতরের কর্তারা। অবিলম্বে এলাকা থেকে হাতির দলটিকে খেদানোর দাবি তোলেন তাঁরা। উঁয়াড়া গ্রামের উত্তম মণ্ডল, কাঞ্চনপুরের দীপক বাউরি, খাঁড়ারি গ্রামের অমিতাভ কর্মকাররা বলেন, “হাতির উপদ্রবে আমরা নাজেহাল। বছরের ১২ মাসই এই উপদ্রব সহ্য করতে হয় আমাদের। বিঘা-বিঘা জমির ধান খেয়ে, পায়ে মাড়িয়ে নষ্ট করে হাতির দল। মানুষও রেহাই পায় না। অথচ বনদফতর আমাদের কোনও রকম নিরাপত্তা দিতে পারে না।” তাঁদের দাবি, হাতিগুলিকে অবিলম্বে এলাকা থেকে সরাতে হবে। |