ইঙ্গিতের ভাষায় প্রাণের আনন্দের হদিস দিচ্ছে ক্লাব
ঙ্গিতের ভাষা ভিন্ন আর ভাষা জানা নেই। সে ভাষাতেও সবাই সড়গড় নন। গোলমাল তাতেই। মূক-বধির বলে হেলাফেলা জোটে। সহানুভূতি মেলে, তবে সবার থেকে নয়। ঠিক এই জায়গা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় ক্লাব খুলেছেন অভিজিৎ, হাফিজ, গিয়াসউদ্দিন, সুভাষ আর তাঁদের মতো কয়েকজন। শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধীদের নিয়ে ‘ডানকুনি বধির-বন্ধু’ ক্লাব গড়ে উঠেছে ডানকুনি হাউজিংয়ের কাছে, দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে। ইশারায় নির্ভেজাল আড্ডা দেওয়া, ইঙ্গিতের ভাষা শেখা, খেলাধুলোর চর্চাও চলছে।
খাতায়-কলমে ক্লাবের সদস্য ১৫। তাঁরা মূলত চণ্ডীতলা এবং ডানকুনিতে থাকেন। আড্ডায় অবশ্য আরও অনেকে আসেন। উত্তরপাড়া, শ্রীরামপুর, দমদম, শিয়ালদহ-সহ নানা জায়গা থেকে। রোজ সন্ধ্যে ৬টা থেকে আড্ডা বসে। উত্তরপাড়ার মাখলার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পৃষ্ঠপোষকতায় তৈরি হয়েছে এই ক্লাব। নিজস্ব ভবন নেই। আপাতত চলছে এক জনের আশ্রয়ে।
আড্ডায় সদস্যেরা। —নিজস্ব চিত্র।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির তরফে ক্লাবের সদস্যদের মূকাভিনয় শেখানো হয়। মেয়েদের শেখানো হয় নাচ। ক্লাব-সদস্যেরা প্রতিবন্ধীদের ক্রিকেট, ফুটবল প্রতিযোগিতায় যোগ দেন। নিজেরা জোগাড়যন্ত্র করে রাখিবন্ধন অনুষ্ঠান করলেন এই সে দিন। ভিজিৎ রায়ের বাড়ি ডানকুনিতে। আকার-ইঙ্গিতে জানালেন, ছোটবেলায় সাধারণ স্কুলে ভর্তি হতে পারেননি মূক-বধির বলে। সংগঠনটির সাহায্যে ইঙ্গিতের ভাষায় অনেকটাই সড়গড় হয়েছেন। গোবরার বিশ্বজিৎ ঘোষ ক্লাবের সম্পাদক। ইঙ্গিতে বললেন, “আমি বোবা বলে মাকে বাবা মারত। দিদিমা আর মায়ের কাছেই বড় হয়েছি।” তাঁর আর অভিজিতের বক্তব্য, “পাড়ার ক্লাবে সবাই নিজেদের মধ্যে কথা বলত। আমাদের কথা কেউ বুঝত না। আমরাও ওদের কথা বুঝতাম না। এখানে সবাই সবার ভাষা বুঝি।”
সম্প্রতি অহল্যাবাঈ রোডের ধারে চণ্ডীতলার বাক্সায় ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের একটি অনুষ্ঠানে এসেছিলেন ক্লাবের সদস্যেরা। তাদের তিন কিশোরীর অভিজ্ঞতা, “বেশির ভাগই বুঝতে চান না আমাদেরও অনেক কিছু বলার আছে।” স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির কর্মী রুকসানা মল্লিক নিজেও শারীরিক প্রতিবন্ধী। তাঁর বক্তব্য, “মূক-বধিরদের বোঝাতে চাই, শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে সমাজের মূল স্রোতে থাকা যায়। ইঙ্গিতে ওঁরা যখন কথা বলেন, মুখ দেখে বুঝি কতটা আনন্দ পাচ্ছেন।” স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির কর্ণধার মলয় সেন বলেন, “মূক-বধিরদের শারীরিক প্রতিবন্ধকতার সুযোগ নেয় অনেকে। মেয়েদের উপরে অত্যাচারও হয়। আমরা চাই, সদস্যদের ইঙ্গিতে দক্ষ করে তুলতে, কারওর সমস্যা হলে সবাই একসাথে সমস্যা মেটাতে পারে।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.