অবশেষে হলদিয়ায় দ্বিতীয় বন্দর নির্মাণে বেসরকারি সংস্থা নির্বাচন চূড়ান্ত করলেন কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ। ১৪০০ কোটি টাকা লগ্নি করে দুটি বার্থ নির্মাণের পর ২০১৭ সালে শালুকখালির এই বন্দরে জাহাজ আসা শুরু হবে বলে দাবি করেন কর্তৃপক্ষ। সোমবারই বন্দরের অছি পরিষদের বৈঠকে কোরিয়ার হুন্ডাই ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ভারতের কনকাস্ট ইনফ্রাটেক লিমিটেডের এক কনসোর্টিয়ামকে বন্দর নির্মাণের বরাত দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বন্দরের চোয়ারম্যান রাজপাল সিংহ কাহালোঁ বলেন, “আয় বাড়াতে এই লগ্নি সাহায্য করবে। হলদিয়া বন্দরের লক গেটের সমস্যার জন্য জাহাজ এসে স্যান্ড হেডে দাঁড়িয়ে থাকে। শালুকখালিতে জাহাজকে কোনও লক গেটের মধ্যে দিয়ে আসতে হবে না। ফলে আরও জাহাজ আসবে, অতিরিক্ত আয়ের পথ খুলে যাবে। আগামী ৩০ বছরে এই বন্দর থেকে আয় হবে ১২০০ কোটি টাকা।”
বন্দর সূত্রের খবর, বেশ কয়েক বার দরপত্র চাওয়া হলেও কেউ এই বন্দরে লগ্নি করতে এগিয়ে আসছিল না। কারণ, বন্দর কর্তৃপক্ষ নতুন বন্দরের যে-নাব্যতা থাকার কথা ঘোষণা করেছিলেন, তা অবাস্তব বলে মনে করছিলেন লগ্নিকারীরা। ফলে মোটা টাকা লগ্নির পর এখান থেকে লক্ষ্মীলাভে সংশয় ছিল তাঁদের। প্রাথমিক ভাবে ১৫টি সংস্থা বন্দর নির্মাণে ইচ্ছা প্রকাশ করলেও, শেষ পর্যন্ত দু’টি সংস্থার ওই কনসোর্টিয়ামই দরপত্রে সাড়া দেয়। বাধ্য হয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদেরই বরাত দিয়েছেন। এই কনসোর্টিয়াম শালুকখালিতে দুটি বার্থে বছরে ১ কোটি ১৭ লক্ষ টন পণ্য খালাস করবে। তার জন্য যে-পরিমাণ রাজস্ব আয় হবে, তার ৬.৮% তারা বন্দরকে দেবে। বন্দর কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই এই এলাকায় ১৬৩ একর জমি অধিগ্রহণ করে রেখেছেন। এই জমিতেই যাবতীয় পরিকাঠামো নির্মাণের কাজ হবে।
বন্দরের কর্তারা জানিয়েছেন, এত দিন দ্বিতীয় হলদিয়া বন্দরের জন্য কোনও লগ্নিকারীই পাওয়া যাচ্ছিল না। এ বার অন্তত কেউ লগ্নি করতে এগিয়ে এসেছে, এটাই আশার কথা। কিন্তু প্রকল্পটি থেকে বন্দর কতৃর্পক্ষ ১২-১৪% রাজস্ব পেলে ভাল হত। এ ক্ষেত্রে মাত্র ৬.৮% রাজস্ব পেয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে। যেহেতু একটি মাত্র কনসোর্টিয়াম এগিয়ে এসেছে, ফলে রাজস্ব ভাগাভাগির ক্ষেত্রে তারা যে-দর দিয়েছে, তা মেনে নিতে হয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষকে। |