ইউনাইটেড স্পোর্টস-২ (র্যান্টি, এরিক)
রাঙ্গদাজিদ ইউনাইটেড-০ |
আই লিগের শুরুতে র্যান্টির সামনে পড়লে সন্তোষ কাশ্যপের কি নিস্তার নেই?
গত বার লিগের শুরুতে এই যুবভারতীতেই তো র্যান্টির গোল বর্তমান রাঙ্গদাজিদ কোচের গা থেকে খুলে নিয়েছিল মোহনবাগান কোচের জোব্বা। রবিবার সেই মাঠেই ‘মুম্বইয়ের কৃশানু’ জোব্বা পালটে বদলা নিতে পারলেন কোথায়?
উলটে সন্তোষের রক্ষণকে ধোঁকা দিয়ে র্যান্টি দ্বিতীয়ার্ধে এরিকের ফ্রিকিক থেকে হেডে এমন দর্শনীয় গোল করলেন যা দেখে রাঙ্গদাজিদ কোচ বললেন, “রাইট ব্যাক প্রতীক র্যান্টিকে ধরতে গিয়ে মুহূর্তের ভুল করায় ম্যাচটা বেরিয়ে গেল।”
মুহূর্তের ভুল আরও প্রকট এগারো মিনিট পরে। লালকমলের পা ঘুরে আসা বল এল শিলংয়ের দলটির ডিফেন্সিভ থার্ডের ডান দিকে দাঁড়ানো এরিকের পায়ে। লাইবেরিয়ার ফুটবলারটির ঘাড়ে তখন রাঙ্গদাজিদের সেনেগালিজ স্টপার ল্যামিন তাম্বা। তাম্বাকে ইনসাইড ডজে ছিটকে দিয়ে এরিকের গোল বাঁ পায়ের জোরালো শটে। আর এই জোড়া গোলের সুবাদেই আই লিগের প্রথম ম্যাচ থেকে তিন পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়লেন এলকো সাতোরি। |
জয়ের তিন কারিগর। দুই গোলদাতা র্যান্টি ও এরিকের সঙ্গে ম্যাচের সেরা লালকমল। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস |
নেই স্পনসর। নেই বেতন। নেই আর্থিক নিশ্চয়তা। মাত্র একুশ দিনের অনুশীলন। নেই রাজ্যে থেকেও ময়দানের বিখ্যাত ‘হাতে টাকা পায়ে বল’ মার্কা স্লোগান দিয়ে সরে যাননি দীপকরা। দেখিয়েছেন দায়িত্ববোধ। এ দিনও যেমন ম্যাচ সেরা লালকমল বলে গেলেন, “দু’তিন মাসের টুর্নামেন্টে খেলার বদলে আমরা সবাই মিলে একটা লড়াই চালাচ্ছি।” সেই লড়াই যাতে মাঠ থেকে তিন পয়েন্ট আনে, তার জন্য ডাচ কোচ মাঠে নামার আগেই ড্রেসিংরুমে বলে দিয়েছিলেন, “টাকা নয়। ফুটবলের প্রতি ভালবাসাটাকে জেতাও।”
মাঠে নেমে তাই ঢিলে দেননি ইউনাইটেডের দীপক-এরিকরা। রক্ষণে অনুপম ধরে নিলেন রাঙ্গদাজিদের ব্রাজিলীয় স্ট্রাইকার এডমারকে। সিরিয়া থেকে যুদ্ধের ভয়ে ভারতে এসে এক বঙ্গসন্তানের দাপটে তিনি এমন কুঁকড়ে থাকবেন, কে জানত! ৪-৩-১-২ ছকে সাতোরির দল প্রথমার্ধ জুড়ে বলের দখল রাখাই শুধু নয়। মাঝমাঠে একসঙ্গে ছ’সাতটা পাস খেলে ঘুম ছুটিয়ে দিচ্ছিল তাম্বাদের রক্ষণের। কিন্তু গোলটাই হচ্ছিল না। চতুর সাতোরিও এই সুযোগে নিয়মের ফাঁকফোকর কাজে লাগিয়ে খেলা শুরুর পাঁচ মিনিটের মধ্যে আক্রমণে র্যান্টির সঙ্গী অনূর্ধ্ব-২৩ বিশ্বজিৎকে তুলে নামিয়ে দিলেন বিনীতকে।
৪-৪-১-১ ছকে নামা সন্তোষ পাল্টা মাঝমাঠে লোক বাড়িয়ে ছন্দটা নষ্ট করতে চেয়েছিলেন জোনাল মার্কিং এবং ফানেলিং দিয়ে। ডাচ কোচ তাই দ্বিতীয়ার্ধে বিনীতের জায়গায় রফিককে নামিয়ে গেলেন ৪-৩-২-১ ছকে। এতে আক্রমণের তীব্রতা যেমন বাড়ল, তেমনই র্যান্টিদের ত্রিভুজ আক্রমণ আটকাতে গিয়ে পাল্লা দিয়ে ক্লান্ত হল রাঙ্গদাজিদ। সেই সুযোগেই পকেটে তিন পয়েন্ট ইউনাইটেডের।
প্রথম ম্যাচ থেকে র্যান্টিদের প্রাপ্তি বলতে এরিক। রবিন ফান পার্সির ভক্ত কার্লোস হার্নান্ডেজ না হলেও বল ধরে অনেকটা জায়গা জুড়ে অপারেট করেন। বাঁ পায়ে ডজ এবং ফ্রিকিকও ভাল। ফিটনেসটা বাড়ালে আরও কার্যকরী হবেন। আর ক্ষতি? তপন মাইতির চোট। যুবভারতীর ফিল্ড টার্ফের বদান্যতায় ডান পায়ের লিগামেন্ট ছিঁড়ে তিন সপ্তাহ মাঠের বাইরে চলে গেলেন এই মিডিও।
আগামী সপ্তাহে আই লিগে সাতোরির দলের পরের ম্যাচ স্পোর্টিং ক্লুব দ্য গোয়ার বিরুদ্ধে। র্যান্টি বলছেন, “প্রথম ম্যাচের পর নিজেদের দশে নয় দিচ্ছি। যত সময় যাবে তত ভাল খেলব আমরা।”
|
ইউনাইটেড স্পোর্টস: সংগ্রাম, দীপক, বেলো, অনুপম, ধনচন্দ্র, তপন (বলদীপ), আসিফ, লালকমল, এরিক, র্যান্টি, বিশ্বজিৎ (বিনীত, রফিক)। |