রবিবার রাতে ম্যাঞ্চেস্টার ডার্বি দেখতে বসে একটাই প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল। প্রথম ডার্বির পরীক্ষায় কি পাশ করবেন মোয়েস? না কি পেলেগ্রিনির মগজাস্ত্র টেক্কা দিয়ে যাবে স্কটিশ কোচকে?
উত্তরটা স্কোরলাইনই দিচ্ছে। নতুন আর কী বলব?
নতুন করে বলতে হলে, বলব গত দশ বছরে ম্যান ইউকে এত খারাপ ফুটবল খেলতে আমি দেখিনি। বলব, রুনির ফ্রি কিক ছাড়া দলের খেলায় দেখার মতো কিছু ছিল না। বলব, ফুটবলারদের মধ্যে কোনও বোঝাপড়া ছিল না। আমার মনে হয়, এই ম্যাচের পরে কড়া প্রশ্ন উঠবে যে, মোয়েস কি তবে বড় ম্যাচের চাপ নিতে পারছেন না?
মোয়েসকে আমি সম্পূর্ণ দোষ দেব না। গত কয়েক বছরে অনেক বদলেছে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের দল। |
এক সময় যে দলে ছিল নেভিল, ব্রাউন, রোনাল্ডোর মতো নির্ভরযোগ্য ফুটবলাররা, তাদের পরিবর্তে এখন খেলছে অ্যাশলি ইয়ং, আন্তোনিও ভ্যালেন্সিয়া, ক্রিস স্মলিংয়ের মতো তরুণরা। যারা এখনও বিগ ম্যাচ প্রেশার নিতে শেখেনি। শেখেনি, কী ভাবে টিম কম্বিনেশন তৈরি করতে হয়। এরা পারবে না, বলব না। কিন্তু মোয়েসের ম্যাঞ্চেস্টারের আরও সময় লাগবে। ম্যাচের পর কেউ কেউ আমাকে জিজ্ঞেস করছিলেন, আজ সাইডলাইনের ধারে মোয়েসের বদলে স্যর অ্যালেক্স ফার্গুসন থাকলে কী হত? আমার যতটুকু যা ফুটবলবোধ আছে, তাতে মনে হয়
|
আগেরো।
জোড়া গোল দিয়ে নায়ক। |
ফার্গুসন থাকলে এত বিশ্রী ভাবে হয়তো হারত না ম্যাঞ্চেস্টার। আসলে উনি সেকেন্ডের মধ্যে এমন সব সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলতে পারতেন, যা বিপক্ষ কোচকে চূড়ান্ত সমস্যায় ফেলে দিত। মোয়েসের সেই মোক্ষম সময়ে ‘মাস্টারস্ট্রোক’ দেওয়ার ক্ষমতাটা এখনও দেখছি না। মনে আছে, বহু ম্যাচে স্রেফ আচমকা ফর্মেশন পাল্টেই ম্যাচ বার করে নিয়েছেন ফার্গুসন।
আজ বুঝলাম না, হাফটাইমে ০-২ টিম হারছে দেখেও কেন নানি বা জেভিয়ার হার্নান্দেজ নামল না? বুঝলাম না, কেন শিনজি কাগাওয়ার মতো ক্রিয়েটিভ মিডিওকে রিজার্ভ বেঞ্চে রেখে দিলেন মোয়েস? অনেক জায়গায় পড়েছি যে, চেলসি-লিভারপুলের মতো বড় টিমের বিরুদ্ধে নামার আগে নানারকম স্ট্র্যাটেজি তৈরি করতেন ফার্গুসন। মোয়েস ঠিক কী করেন, জানি না। বলতে পারব না। কিন্তু এটা দেখাই যাচ্ছে, ফার্গুসনের চেয়ারের উত্তরাধিকার পেতে গেলে ওঁকে আরও খাটাখাটনি করতে হবে। এ ভাবে চললে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ বাদ-ই দিলাম, প্রিমিয়ার লিগেও কিন্তু মোরিনহোরা ইউনাইটেডকে পিষে দেবে। আজ অবশ্য ফান পার্সির না থাকাটা একটা ফ্যাক্টর হয়ে গেল। উল্টো দিকে আবার পেলেগ্রিনির হাতে একটা সেট টিম ছিল। যারা দু’তিন বছর ধরে একসঙ্গে খেলছে। নেগ্রেদো, ফার্নান্দিনহোরা তার উপর চলে আসায় সিটি আরও শক্তিশালী হয়েছে। আর আগেরো? মারাদোনার এক সময়ের জামাইয়ের খেলা যা দেখছি, তাতে কিন্তু ব্রাজিল বিশ্বকাপে মেসির সঙ্গে ওকে আটকাতেও ঘুম উড়বে ডিফেন্ডারদের। পেলেগ্রিনির প্লাস পয়েন্ট হচ্ছে, উনি জানতেন কী ভাবে ডার্বির প্রেশার কুকারে বসেও মাথা ঠান্ডা রাখতে হয়। তা ছাড়া আগেরোরা ডার্বি খেলে খেলে অভ্যস্ত। কোলারভের দুর্দান্ত ওভারল্যাপ থেকে আগেরো স্রেফ অনুমানক্ষমতাকে ব্যবহার করে যে অবিশ্বাস্য গোলটা করে গেল, সেটা ওই অভিজ্ঞতার প্রমাণ। বল পজেশন থেকে পাসিং, কাউন্টার অ্যাটাক, কোথাও আগেরো-নাসরিরা দাঁড়াতেই দেয়নি ইউনাইটেডকে। এক সময় মনে হচ্ছিল, ওল্ড ট্রাফোর্ডের সেই ৬-১ গোলের ইতিহাস না ফিরে আসে! |
আপনি যদি ইউনাইটেড ভক্ত হন,
তা হলে চ্যানেল পাল্টে
ডে’ভিলিয়ার্সের ব্যাটিংটা দেখলেই মনে হয় ভাল।
গ্রেম স্মিথ |
হাওয়ার্ড ওয়েব নিশ্চয়ই
খুব তাড়াতাড়ি খারাপ
আলোর জন্য ম্যাচ বন্ধ করে দেবেন!
মাইকেল ভন |
|