|
|
|
|
বরাদ্দ মিলেছে, সেতু নিয়ে আশাবাদী |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মাড়গ্রাম |
অবশেষে ভাংলা সেতু নির্মাণে আশার আলো দেখতে পাচ্ছে জেলা প্রশাসন। তিন দিন আগে জেলা প্রশাসনের কাছে ওই সেতু নির্মাণের জন্য রাজ্য অর্থ দপ্তরের অনুমোদন সংক্রান্ত কাগজপত্র এসে পৌঁছেছে এবং ওই কাগজ আসার পরই জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, সেতুটি নির্মাণে কোনও জটিলতা থাকল না। বীরভুম জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, “ভাংলা কাঁদরের উপর সেতুরর জন্য এলাকাবাসী দীর্ঘদিন দাবি জানিয়ে আসছেন। সেতুটি তৈরির অনুমোদন মিলেছে। সেতুটি নির্মাণের জন্য খুব শীঘ্রই দরপত্র ডাকা হবে।”
অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলাপরিষদ) বিধান রায় বলেন, “রামপুরহাট মহকুমাশাসক হিসেবে কাজ করার সময় উপলব্ধি করেছিলাম, সেতুর অভাবে এলাকার মানুষ কী ভাবে বিছিন্ন দ্বীপের মতো বসবাস করেন। নানান জটিলতায় এত দিন সেতুটি নির্মাণের অনুমোদন মিলছিল না। অবশেষে সব ধরনের জটিলতা কাটিয়ে নাবার্ডের আর্থিক সহযোগিতায় গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন তহবিল (১৯) প্রকল্পে সেতুটি নির্মাণের জন্য অর্থদফতরের অনুমোদন মিলেছে।” এই সেতুটি নির্মাণের জন্য ১১ কোটি ২৩ লক্ষ ১২ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিধানবাবু। |
|
বাঁশের সাঁকোর বদলে হবে পাকা সেতু।
মাড়গ্রাম থানার দুনিগ্রামে অনির্বাণ সেনের তোলা ছবি। |
এই ভাংলা কাঁদর মাড়গ্রাম থানার দুনিগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার অধীন। ব্রাহ্মণী নদীর শাখা হিসেবে বীরভূম এবং লাগোয়া মুর্শিদাবাদ জেলার দশ-বারোটি গ্রামকে বদ্বীপের মতো বেষ্টন করে রেখেছে। বন্যার সময় ছাড়াও অতি বৃষ্টিতে পাঁচ মাস জলবন্দি থাকে এলাকার বাবলাডাঙা, গোপালপুর, জয়চন্দ্রপুর, টিঠিডাঙা, উলাপারা-সহ ৮টি গ্রাম। এলাকার মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা স্তব্ধ হয়ে পড়ে। দুনিগ্রাম পঞ্চায়েত থেকে ১৯৮৫ সালে সেতু নির্মাণের জন্য চেষ্টা করা হয়। কিন্তু বন্যার জন্য সে কাজ বাধাপ্রাপ্ত হয়। তার পরে ১৯৯৫ সালে রামপুরহাট ২ পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে কজওয়ে তৈরি হতে থাকে। সে ক্ষেত্রে কোনও এক অজানা কারণে সেতু নির্মাণের কাজ থমকে যায় বলে জানান বাবলাডাঙা গ্রামের বাসিন্দা বিনোদবিহারী মণ্ডল। বিনোদবাবু জানান, ২০০৭ সালে ওই কাঁদরের উপরে বীরভূম জেলাপরিষদ সেতু তৈরির জন্য উদ্যোগী হয়েছিল। কিন্তু গ্রামোন্নয়ন দফতরে ২০১০ সালে সেতু তৈরির জন্য যে ‘প্রোজেক্ট রিপোর্ট’ জমা পড়ে তাতে ভুল ধরা পড়ে। এর পর থেকে গ্রামোন্নয়ন দফতর, নাবার্ড, অর্থদফতর এবং বীরভুম জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সেতু নির্মাণ নিয়ে নানা টানাপোড়েন চলে।
কখনও অর্থের যোগানদারের অভাব, কখনও সঠিক পরিকল্পনার অভাব সেতু নির্মাণে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এই অবস্থায় এলাকার মানুষ ৭৫ মিটার দীর্ঘ বাঁশের সেঁতু নিজেদের খরচায় নির্মাণ করেন। তা দিয়েই বছরের পর পারপার চলছে। এলাকার বাসিন্দা গোপালপুরের হলধর মণ্ডল বলেন, “২০১২ সালের ১৯-২৩ মার্চ এলাকার ১৯ জন বাসিন্দা সেতুর দাবিতে রামপুরহাট ২ ব্লক অফিসের সামনে অনশনে বসেন।” অবশেষে প্রশাসনের টনক নড়ে।
সেতু তৈরির অনুমোদনও মিলেছে। তবুও এলাকাবাসীর সংশয় কাটছে না। তাঁদের কথায়, ফের জটিলতা তৈরি হবে না কে জানে! তাই যতদিন না সেতু তৈরি হচ্ছে, ততদিন ভরসা পাব না। |
পুরনো খবর: সেতুর দাবিতে আমরণ অনশনে বাসিন্দারা |
|
|
|
|
|