নিজস্ব সংবাদদাতা • আসানসোল |
আসানসোল পুরসভায় কংগ্রেসের মেয়র পারিষদকে অপসারণের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য মেয়রকে দেওয়া চূড়ান্ত সময়সীমা শেষ হচ্ছে আজ, সোমবার। রবিবার পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সোমবারও যদি তিনি কিছু না বলেন, তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান পরিষদীয় দল নেতা তথা ডেপুটি মেয়র কংগ্রেসের অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, সেক্ষেত্রে বোর্ডের কোনও সঙ্কট দেখা দিলে দায়ী থাকবে তৃণমূলই।
প্রশাসনিক দায়িত্বে থেকে মেয়রের বিরুদ্ধে মামলা করা এবং পুরসভার বেনিয়মের অভিযোগ তুলে প্রকাশ্যে মুখ খোলায় ২৩ অগষ্ট কংগ্রেসের মেয়র পারিষদ গোলাম সরওয়ারকে পদ থেকে সরতে হয়। অভিযোগের আঙুল ওঠে তাপসবাবুর দিকে। এর বিরোধীতা করেন কংগ্রেসের ১২ জন কাউন্সিলর। তাঁদের অভিযোগ, আলোচনা না করে মেয়র একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। একাধিক দিন পুরসভায় বিক্ষোভ, অবস্থান, এলাকায় মিছিল করেন তাঁরা। মেয়রের আচরণে ক্ষুব্ধ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যও। দু’বার কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। সিদ্ধান্ত হয়, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অপসারণের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের করার জন্য মেয়রকে চিঠি দেওয়া হবে। সেই মতো ৭ সেপ্টেম্বর সাত দিনের সময় দিয়ে মেয়রকে চিঠি দেওয়া হয়। ১৩ সেপ্টেম্বর মেয়র পাল্টা চিঠি দিয়ে আরও কিছু দিন সময় চান। সেই দ্বিতীয়বারের সময়সীমা শেষ হচ্ছে আজ, সোমবার। অমরনাথবাবু বলেন, “মেয়রকে দু’বার সময় দিয়েছি। কোনও উত্তর পাইনি। এ বারও যদি তিনি টালবাহানা করেন, তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে নেব। সে ক্ষেত্রে বোর্ড সঙ্কটে পড়লেও তার দায় আমাদের নয়।”
আসানসোল পুরসভার ৫০টি আসনের মধ্যে তিন কাউন্সিলর মারা যাওয়ায় বর্তমানে ৪৭ জন রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে বামফ্রন্টের ১৮, তৃণমূলের ১৭ ও কংগ্রেসের ১২ জন। দলের একাংশের খবর, বতর্মান টানাপোড়েনে সাত কংগ্রেস কাউন্সিলর জোট থেকে বেরোনোর জন্য পা বাড়িয়ে আছেন। পুরসভার গত অধিবেশনেও তাঁরা যোগ দেননি। অপসারণের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহৃত না হলে ওই সাত জন সমর্থন প্রত্যাহার করে সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়ে অনাস্থা আনবেন বলেও শোনা গিয়েছে। এই ঘটনা নিয়ে এক মাস ধরে মেয়র ও কাউন্সিলরদের সঙ্গে কংগ্রেসের বিবাদ চলছিল। শুক্রবার মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম শহরে এলে তা চরমে ওঠে। পুরসভার সামগ্রিক উন্নয়ন ও জল প্রকল্প নিয়ে মেয়রের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন মন্ত্রী। কিন্তু বৈঠকে কংগ্রেসের ডেপুটি মেয়র অমরনাথবাবুকে ডাকা হয়নি বলে অভিযোগ। অমরনাথবাবু বলেন, “আমরা অপমানিত। এভাবে কী জোট বজায় রাখা সম্ভব।” তবে এ বিষয়ে কোনও কথাই বলতে চাননি মেয়র। |