নিজস্ব সংবাদদাতা • আসানসোল |
বেশ কিছু দিন ধরেই গৃহশিক্ষকের কাছে যাতায়াতের পথে এক কিশোরীকে উত্ত্যক্ত করত এক দল যুবক। সে কথা সে বাড়িতে জানায়। শনিবার সন্ধ্যায় তাই আসানসোলের ধাদকা এলাকার তপসিতে মিশনারি স্কুলের পড়ুয়া মেয়েকে সঙ্গে নিয়েই ফিরছিলেন বজরঙ্গ পণ্ডিত নামে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী। তাঁর সামনেই মোড়ের মাথায় ফের মেয়ে ও তার বন্ধুদের কটূক্তি করে কয়েক জন যুবক। বজরঙ্গবাবু এগিয়ে গিয়ে তার প্রতিবাদ করলে তাঁকে মাটিতে ফেলে মারধর করা হয়। তাঁর মাথা ফেটে গিয়েছে। ওই এলাকাটি থেকে খুব কাছেই আসানসোল উত্তর থানা। স্থানীয় লোকজন ঘটনার পরে ছুটে এলে ওই যুবকেরা কেউ কেউ থানার সামনে দিয়েই মোটরবাইকে চড়ে পালায় বলেও অভিযোগ। |
জখম বজরঙ্গ পণ্ডিত। ছবি: শৈলেন সরকার। |
গত সপ্তাহেই কলকাতার তপসিয়ায় শিক্ষকের বাড়ি থেকে ফেরার পথে বাড়ির কাছাকাছি এক ছাত্রীকে কটূক্তি করে কিছু যুবক। তার হাত ধরে টানার চেষ্টা হয়। কোনওরকমে ফোন করে দাদাদের ডেকে নেয় মেয়েটি। তখনকার মতো পালায় যুবকেরাও। কিন্তু রাতে বোনের শ্লীলতাহানি রোখার ‘অপরাধে’ তাঁদের উপর রড-ভোজালি-খুর নিয়ে চড়াও হয় জনা কুড়ি সশস্ত্র যুবক। বাধা দিতে গিয়ে জখম হন মেয়েটির বাবাও। ঘটনায় এক জনকে ধরে পুলিশ।
আসানসোলের ঘটনায় পুলিশ অবশ্য রবিবার পর্যন্ত কাউকে ধরতে পারেনি। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি (সেন্ট্রাল) সুরেশ কুমার বলেন, “ছেলেগুলিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।” তবে তদন্তের স্বার্থে ওই যুবকদের পরিচয় সম্পর্কে পুলিশ মুখ খুলতে চায়নি। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ওই যুবকেরা কেউই এলাকার বাসিন্দা নয়। তারা মোটরবাইকে করে এসে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের কাছে এই এলাকার চায়ের দোকানে বসে রোজ আড্ডা দেয়। বজরঙ্গবাবু বলেন, “আমাদের মেয়েরা ওদের জ্বালায় অতিষ্ঠ। প্রতিবাদ করতেই আমাকে মারধর করে ওরা।” তারপরে মোটরবাইকে চড়ে পালায়। আহত অবস্থাতে প্রথমে তিনি বাড়িই চলে যান। সেখান থেকে কয়েকজন পড়শিকে সঙ্গে নিয়ে থানায় যান তিনি। আসানসোল মহকুমা হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা করিয়েছে পুলিশ।
কিন্তু থানার এত কাছে এই ঘটনার পরে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয়দের দাবি, পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল বলেই ওই যুবকেরা এত সাহস পেয়েছে। আসানসোলের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে পড়ে এই এলাকাটি। ডেপুটি মেয়র অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়ও বলেন, “ওই এলাকায় ছাত্রীদের উত্যক্ত করা হত বলে আগেও অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশকে বলেছিলাম টহলদারি বাড়াতে। পুলিশ তৎপর ছিল না, তাই এমন হল।” |