ললিত মোদী বনাম শ্রীনিবাসন ফিরতি ম্যাচে প্রবল ভাবে ফিরে এলেন অপসারিত আইপিএল চেয়ারম্যান। বোর্ডের বিশেষ সাধারণ সভার উপর স্থগিতাদেশ জারি করল দিল্লি আদালত। যে সভায় মোদীকে চিরনির্বাসনে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা ছিল।
শনিবার আদালতের এই রায় শোনার পর মোদীর হুঙ্কার, “খেলা শুরু। শ্রীনি... আমাকে নির্বাসনে পাঠানোর চেষ্টা করতে পারে... আমি কিন্তু লড়াইয়ে আছি, লড়াই ছাড়ছি না।”
বিশেষ সাধারণ সভা নিয়ে মোদীকে ২ সেপ্টেম্বর যে নোটিস পাঠিয়েছিল বোর্ড, তাতে স্বাক্ষরকারী সচিব সঞ্জয় পটেলের অধিকার নিয়েই প্রশ্ন তুলে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মোদী। অরুণ জেটলি, চিরায়ু আমিন ও জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার তিন সদস্যের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি মোদীর কার্যকলাপ নিয়ে যে রিপোর্ট দিয়েছিল, তার ভিত্তিতেই মোদীকে চিরনির্বাসনে পাঠানোর সিদ্ধান্তের প্রবল সম্ভাবনা ছিল ২৫ তারিখের বৈঠকে। যে সম্ভাবনা আপাতত ঝুলে রইল।
দিল্লির অতিরিক্ত জেলা আদালতে বিচারপতি রুবি অলকা গুপ্ত এ দিন বলেন, “আবেদনকারী আদালতে যথেষ্ট যুক্তি দিয়ে দেখিয়েছেন যে, এই সভার নোটিস বৈধ অধিকারবলে পাঠানো হয়নি। বোর্ডের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির রিপোর্ট এক অবৈধ সভায় আলোচনা হলে ও তার ভিত্তিতে হওয়া কোনও চরম সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তাঁর যা ক্ষতি হবে, তা পূরণ হওয়া কোনও ভাবেই সম্ভব নয়।” এই ধারণার ভিত্তিতে তিনি রায় দেন, “সুতরাং, বিসিসিআই ও তার পদাধিকারীরা ও শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির সদস্যরা আপাতত ২৫ সেপ্টেম্বর বিশেষ সাধারণ সভার আয়োজন করতে পারবেন না।” মোদীর অভিযোগের জবাব দেওয়ার জন্য বোর্ড, জগমোহন ডালমিয়া ও সঞ্জয় পটেলকে চার দিন সময় দিয়েছে আদালত। ৩০ সেপ্টেম্বর আগামী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
মোদীর আইনজীবী এ দিন আদালতে জানান, বিশেষ সাধারণ সভার যে নোটিস পাঠিয়েছেন সঞ্জয় পটেল, তাতে তাঁকে ওই চিঠিতে স্বাক্ষরের জন্য কোনও অনুমোদন দেওয়া হয়নি। এবং এই নোটিস সেই এন শ্রীনিবাসনের নির্দেশে পাঠানো হয়েছিল, যিনি স্পট ফিক্সিংয়ে তাঁর জামাইয়ের জড়িয়ে থাকার অভিযোগ ওঠায় নিজেকে বোর্ড প্রেসিডেন্টের পদ থেকে সাময়িক ভাবে সরিয়ে নিয়েছেন। মোদীর আইনজীবীর বক্তব্য ছিল, “এই নোটিস অবৈধ এবং ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী।”
তবে এ দিন শুধু বিশেষ সভার ওপর স্থগিতাদেশের আবেদন বিবেচনা করে আদালত। মোদীর অন্যান্য অভিযোগ পরবর্তী শুনানির দিন অর্থাৎ ৩০ সেপ্টেম্বর আলোচনা হবে বলে জানানো হয়েছে। জগমোহন ডালমিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট পদে আসীন হওয়াকেও বোর্ডের গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী বলে দাবি করেছেন মোদী। সঞ্জয় পটেলের সচিব পদে নিয়োগও তাঁর মতে আইনানুগ নয়। আইপিএলে তাঁর কার্যকলাপ নিয়ে তদন্ত করছে যে কমিটি, সেই কমিটির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আগেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মোদী। সেই মামলার নিষ্পত্তি এখনও হয়নি। এই আবেদনে সেই মামলার প্রসঙ্গ টেনে এনে ফের তিনি দাবি করেছেন, তাঁর কার্যকলাপের যে তদন্ত হচ্ছে, তা পক্ষপাতদুষ্ট ও অস্বচ্ছ।
|
টুইটারে ললিত মোদী |
• রাক্ষস শ্রীনির পিছনে থাকা সব ক’টা ষড়যন্ত্রকারী আরও বেশি দায়ী। জেটলি, শুক্ল, ঠাকুর, ডালমিয়া প্রত্যেককে কাঠগড়ায় তোলা উচিত। এদের সরে যেতেই হবে।
• এরা চার জনের সেই আদি জোট যাদের মুখে সর্বদা মধু ঝরে আর পিছন থেকে ছুরি মারায় ওস্তাদ। ক্ষমতার কেন্দ্র যখনই বদলায় এরা দল বদলে সেই দিকে চলে যায়। জেটলিটা এদের নেতা।
• ২০০৩-এ ফিরে গিয়ে দেখুন। আমরা ডালমিয়াকে সরিয়েছিলাম ২০০৫-এ। কিন্তু ২০০৪-এ ওকে সরানোর চেষ্টা করেও পারিনি। আন্দাজ করুন সেই সময় কারা ডালমিয়াকে সমর্থন করেছিল-- অরুণ জেটলি, রাজীব শুক্ল, শ্রীনি, ঠাকুর। সব ক’টা চোর।
• মিডিয়ার সামনে এদের মিষ্টি মিষ্টি কথা বলা আর বারবার অবস্থান পালটানো থেকেই বোঝা যায় এই জোচ্চোরগুলোর একটা সুপরিকল্পিত ছক রয়েছে।
• বেটিং, ফিক্সিং এদের মন্ত্র। আর সেই লক্ষ্যে নীচে নামতে নামতে মাফিয়াকে পর্যন্ত ব্যবহার করেছে। এর থেকে বেশি নীচে আর নামা যায় না।
• সমর্থকদের রুখে দাঁড়ানো উচিত। সোশ্যাল মিডিয়ায়, মাঠে, সংবাদমাধ্যমকে ব্যবহার করে নিজেদের ক্ষোভটা প্রকাশ করতে হবে।
• ...এসজিএমের উপর স্থগিতাদেশ মঞ্জুর...খেলা সবে শুরু হল...শ্রীনি...আমাকে নির্বাসনে পাঠানোর চেষ্টা করতে পারে...আমি কিন্তু এখনও লড়ে যাচ্ছি। |
|