বেপরোয়া ম্যাটাডর থামাতে গিয়ে সপ্তাহ দুয়েক আগেই বাগবাজারে সেই ম্যাটাডরের চাকায় পিষ্ট হন শ্যামপুকুর থানার এক অফিসার। এ বার বেপরোয়া মোটরবাইক থামানোর অভিযানে গিয়ে আহত হলেন বৌবাজার থানার এক কনস্টেবল। মাসখানেক আগেও বেপরোয়া বাইক থামাতে গিয়ে বেকবাগানে জখম হয়েছিলেন এক পুলিশকর্মী। শহরে বেপরোয়া যানের তাণ্ডব নিয়ন্ত্রণ যে ক্রমেই পুলিশের হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে, তারই ইঙ্গিত দিচ্ছে পরপর এমন সব দুর্ঘটনা।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার বেশি রাতে গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউয়ে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। মোটরবাইকের ধাক্কায় জখম হন বৌবাজার থানার কনস্টেবল অজয় ঘোষ। তাঁর পায়ে আঘাত লাগে। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসা হয়।
ওই কনস্টেবলকে ধাক্কা মারা, হেলমেট না পরে বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানো এবং কর্তব্যরত সরকারি কর্মীর কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে আজিম আলি, মহম্মদ রিঙ্কু এবং মহম্মদ শাকিল নামে তিন যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের বাড়ি পার্ক সার্কাসে। পুলিশের অভিযোগ, ধৃতেরা তিন জন মত্ত অবস্থায় যাচ্ছিল।
পুলিশ জানায়, গাড়ি থামিয়ে রাস্তায় তল্লাশি অভিযান হচ্ছে দেখে অভিযুক্তেরা দ্রুত গতিতে পালানোর চেষ্টা করে। অজয়বাবু তাদের থামাতে গেলে মোটরবাইক আরোহীরা তাঁকে সজোরে ধাক্কা মারে। গাড়ির ধাক্কায় ছিটকে পড়েন ওই কনস্টেবল।
ট্রাফিক বিভাগের এক কর্তা জানান, শহরে বিভিন্ন থানা এলাকায় বাইক-বাহিনীর তাণ্ডব নিয়ে প্রায়ই অভিযোগ জমা পড়ছে। অনেক সময়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জখম হচ্ছে আরোহীরাও। এই ধরনের আরোহীদের বিরুদ্ধে কড়া আইনি ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার স্বয়ং। তা সত্ত্বেও বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো কমছে না। লালবাজারের এক কর্তা জানান, রাত দশটার পরে রাস্তায় ট্রাফিক-কর্মীদের সংখ্যা অনেক কমে যায়। মূলত সেই সময়েই উদ্দাম গতিতে মোটরবাইক চালিয়ে শহর দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এক শ্রেণির যুবক।
পুলিশের অভিযোগ, খিদিপুর, গার্ডেনরিচ, একবালপুর, রাজাবাজার, পার্ক সার্কাস, তপসিয়া, তিলজলা-সহ অনেক জায়গাতেই কোনও নিয়ম মানছেন না বাইক-আরোহীরা। অনেক ক্ষেত্রে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গিয়েও আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে।
লালবাজারের এক কর্তা জানান, অনেক ক্ষেত্রেই বেপরোয়া মোটরবাইক আরোহীদের ঠেকাতে গিয়ে পুলিশকর্মীদের প্রাণসংশয় হচ্ছে। ওই কর্তা জানান, বেপরোয়া গাড়িচালকদের বিরুদ্ধে নিয়মমাফিক ট্রাফিক আইনে মামলা দায়ের হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু শুধু তা দিয়ে এই তাণ্ডব বন্ধ করা যাবে না। নাগরিক সচেতনারও প্রয়োজন। |