...গন্ধ এসেছে নির্মীয়মাণ বাড়িও
এ বার পুজো-মণ্ডপ
মাঠে মণ্ডপ হয়, পথে মণ্ডপ হয়। রাস্তা জুড়ে মণ্ডপ নিয়ে হয় বিতর্কও। কিন্তু নির্মীয়মাণ বাড়িতে পুজোমণ্ডপ একটু আলাদা রকম ভাবনা। এ বার ছ’তলা একটি নির্মীয়মাণ বাড়িকেই মণ্ডপ তৈরির জন্য বেছে নিয়েছে কেষ্টপুর প্রফুল্লকানন (পশ্চিম) অধিবাসীবৃন্দ। ফেলে দেওয়া ক্যান, পুরনো শিশি, বোতল, চট দর্মা, পুরনো বাঁশের টুকরো ও প্লাস্টার অফ প্যারিস দিয়ে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। তাদের এ বারের থিম ‘শক্তি যদি মুক্তি’। তাদের কথায়, সংযম ও আধ্যাত্মিক জ্ঞানই হল সেই শক্তি যা মানুষকে মুক্তি এনে দিতে পারে।
কাঁকুলিয়া গড়িয়াহাট পল্লি সর্বজনীন দুর্গাপূজা মণ্ডপে আবার দেখা যাবে নানা ধরনের হস্তশিল্প। অসমের বাঁশ, রাজস্থানের রঙিন সুতোর কাজ, নদিয়ার কৃষ্ণনগরের কাঠের পুতুল ও বিভিন্ন রাজ্য ও জেলার হস্তশিল্পের নিদর্শন থাকবে এই মণ্ডপে। প্রতিমা এখানে সাবেক। তবে মাটির তৈরি চালচিত্রটি হবে কুলোর আকৃতির।
সন্তোষপুর ত্রিকোণ পার্ক সর্বজনীন দুর্গোত্‌সব পূজা কমিটি-র থিম সের-পাই শিল্প। আগে সের, পাই, পোয়া, ছটাক, মন এই পরিমাপসূচক পাত্রগুলির মাধ্যমেই চলত জিনিস ওজন করে কেনাবেচা। বীরভূমের লোকপুর গ্রামের শিল্পীরা কাঠের গোল পাত্রের গায়ে পেতলের খোদাই করা এই অলঙ্করণ পদ্ধতি চালু করেন। সে রকম কাজই থাকবে মণ্ডপের দেওয়ালে। থাকবে সাবেক প্রতিমা।
উড়িষ্যার দক্ষিণে বসবাসকারী উপজাতিগুলির মধ্যে প্রচলিত শিল্পকলা সৌরার দেখা মিলবে স্বপ্নার বাগান যুবক বৃন্দের পুজো মণ্ডপে। মন্দিরের ধাঁচে তৈরি এই মণ্ডপে দেখা যাবে কাঠের উপর ফাইবার এবং মাটির কাজ। একচালার প্রতিমা এখানে থিমের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই।
উল্টোডাঙা সংগ্রামীর এ বারের থিম মধ্যপ্রদেশের গণ শিল্প। এই শিল্পকলায় তুলে ধরা হয় দৈনন্দিন জীবন, যেখানে মানুষের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী ভাবে জুড়ে যায় গাছপালা, পশুপাখি। প্রাচীন অতিসূক্ষ্ম এই রঙিন শিল্পকলা দেখা যাবে মণ্ডপের গায়ে। প্রতিমা হবে থিমের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে।
দেওয়ালের গায়ে কৃষ্ণনগরের মাটির পুতুলের মাধ্যমে নানা রকম গল্প বলা থাকবে যশোহর রোডের বাপুজী অধিবাসীবৃন্দ এবং বাপুজী মিলন সঙ্ঘের মণ্ডপে। কোথাও রামায়ণের বা রাস উত্‌সবের কিছু অংশ, কোথাও বা থাকবে গোপাল ভাঁড়ের কাহিনী। প্রতিমাতেও থাকবে কৃষ্ণনগরের সাবেক ধাঁচ।
পেরেকের মধ্যে সুতো জড়িয়ে দৈনন্দিন জীবনের নানা কাহিনী বলা থাকবে মোহনবাগান বারোয়ারির মণ্ডপের গায়ে। কুমোরটুলির তৈরি প্রতিমার রূপ এখানে যামিনী রায়ের পটচিত্রের আদলে, যার চালচিত্রটি একটি কুলোর আকারের।
রবীন্দ্রনাথে ‘হাট’ কবিতাটিই এ বার নিউ আলিপুরের সাহাপুর সর্বজনীন দুর্গোত্‌সব কমিটি (পশ্চিম)-এর থিম। মণ্ডপে ঢুকতেই মনে হবে যেন বসেছে শুক্রবারের জমজমাট হাট। এক পাশে একটি পাঠশালায় বসে ‘হাট’ কবিতাটি আবৃত্তি করছে একটি ছোট্ট মেয়ে। সেই সঙ্গে চারপাশে একে একে দেখা যাচ্ছে কবিতারই এক একটি দৃশ্য। মণ্ডপে আলো-শব্দের সহযোগে জনা পনেরো লোকজন মিলে তুলে ধরবেন এমনই কিছু দৃশ্য। প্রতিমা এখানে সাবেক।
চারদিকে সেজে উঠছে মণ্ডপ আর প্রতিমা। কলকাতার মধ্যেই আলাদা আলাদা দুনিয়া। কোথাও নানা হস্তশিল্পের সমাহার, কোথাও গ্রামবাংলার মৃত্‌শিল্প বা পটচিত্র, কোথাও বা মধ্যপ্রদেশের শিল্পকলা শহরটা এক্কেবারে বদলে যাবে কয়েক দিনের জন্য!
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.