শিলিগুড়িতে ডেঙ্গির প্রকোপ বেড়েই চলেছে। তা ছড়াচ্ছে জলপাইগুড়িতেও। জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদ সিপিএমের সদস্য আশা নার্জিনারি ডেঙ্গি আক্রান্ত। তাঁকে শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে তাকে ভর্তি করা হয়েছে। সপ্তাহখানেক আগে তিনি জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে স্বামী প্রভাসবাবু জানিয়েছেন। রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গির জীবানু মিললে তাঁকে শিলিগুড়িতে নিয়ে আসা হয়। ডুয়ার্সের নাগরাকাটা ব্লকের লুকসানে ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ হয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়।
এ অবস্থায় ডেঙ্গি নিয়ে রাজনৈতিক তরজা অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি এসে ডেঙ্গি মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের ব্যর্থতার অভিযোগ তুলেছিলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। এদিন শুক্রবার শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে ভর্তি ডেঙ্গি আক্রান্ত সিপিএম কাউন্সিলর জয় চক্রবর্তীকে দেখতে গিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী দাবি করেন, “শিলিগুড়ির ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে।” ডেঙ্গির প্রকোপ নিয়ে কংগ্রেস পরিচালিত শিলিগুড়ি পুরসভার উপেই দায় চাপিয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। ডেঙ্গি মোকাবিলায় রাজ্য সরকার ব্যর্থ বলে বলে পাল্টা অভিযোগ তুলে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরে বিক্ষোভ দেখিয়েছে কংগ্রেস। |
শহরের ডেঙ্গির প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য দফতর ব্যার্থ বলে অভিযোগ করে
জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরের সামনে কংগ্রেসের বিক্ষোভ। |
এদিন সকালে শিলিগুড়িতে স্বাস্থ্য দফতরের সামনে বিক্ষোভে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের জন্য ট্রপিক্যাল মেডিসিন থেকে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে আসার দাবি জানানো হয়। যাঁরা ডেঙ্গিতে মারা গিয়েছেন তাঁদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য করতে হবে বলে দাবি জানানো হয়েছে। কংগ্রেস নেতা বিমলেশ মৌলিক বলেন, “হাসপাতাল থেকে রোগীদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে, এই পরিস্থিতিতে শয্যা সংখ্যা বাড়ানোর প্রয়োজন থাকলেও তা করা হয় নি স্বাস্থ্য দফতরের থেকে।” তাঁদের আরও অভিযোগ, “হাসপাতালে রক্ত পরীক্ষা করা হচ্ছে না, বাইরে থেকে বেশি টাকা দিয়ে এই পরীক্ষা করতে হচ্ছে।”
এ সমস্ত অভিযোগ মানতে নারাজ স্বাস্থ্য মুখ্য আধিকারিক সুবীর ভৌমিক। তিনি বলেন, “দালাল চক্র চিহ্নিত করে অভিযোগ করলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। এছাড়া পাঁচজনকে নিয়ে একটি কমিটি তৈরি করা হয়েছে, যাঁর দায়িত্ব আছেন সুপার। তাঁদের কাছে এসে অভিযোগ জানাতে পারে। এছাড়া পুলিশকেও অভিযোগ জানাতে পারে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা ডেঙ্গি মোকাবিলার জন্য সমস্ত রকম ব্যবস্থা নিয়েছি। সচেতনতার জন্য টকিং ডল বিভিন্ন ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এদিন দেশবন্ধুপাড়া, বাবুপাড়া এলাকায় এই সচেতনতা অভিযান করা হয়।”
অন্যদিকে ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রফুল্লনগর নাগরিক কমিটির সদস্যদের অভিযোগ এলাকায় ডেঙ্গি রোগী রয়েছে। কমিটির সম্পাদক প্রাণেশ দেবনাথ বলেন, “এলাকার পরিস্থিতি জানিয়ে অনেকবার স্থানীয় কাউন্সিলর, মেয়রকে জানান হলেও কোন ব্যবস্থা হয় নি।” তাঁদের আরও অভিযোগ, “এলাকায় এখনও কাঁচা ড্রেন ও রাস্তা রয়েছে। সেগুলি ঠিক সময়ে পরিষ্কার করা হয় না। ফলে মশা বেড়ে চলেছে।” তবে পুরসভা তরফে সমস্ত কাজ করা হচ্ছে বলে এই দিন দাবি করেন মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত। তিনি বলেন, “আমরা সব রকম ব্যবস্থা নিয়েছি। এখন পরিস্থিতি অনেকটা স্থিতিশীল রয়েছে। যে সমস্ত জায়গায় জল জমে রয়েছে সে সমস্ত জায়গায় পাম্প বসিয়ে জল বের করা হবে।” স্বাস্থ্য দফতর এর তরফে তেমন কোন উদ্যোগ নেওয়া হয় নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
|