হাইকোর্টের তোপ শুনে রাজ্য বলল, আজই অনুমোদন
হাইকোর্টের নির্দেশ না-মানার প্রবণতা রাজ্য সরকারের উপরে চেপে বসেছে বলে মনে করছে কলকাতা হাইকোর্ট। প্রসঙ্গ: হলদিয়া মেডিক্যাল কলেজ। যে প্রতিষ্ঠানের কেড়ে নেওয়া অনুমোদন চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে ফিরিয়ে দিয়ে আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যে পড়ুয়াভর্তির প্রক্রিয়া শুরু করতে শুক্রবার যথাক্রমে রাজ্য সরকার ও কলেজ-কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিল ডিভিশন বেঞ্চ।
হাইকোর্টের বিচারপতি নিশীথা মাত্রে ও বিচারপতি কাঞ্চন চক্রবর্তীর বেঞ্চ এ মাসের গোড়ায় রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছিল, দু’সপ্তাহের মধ্যে হলদিয়া মেডিক্যালের অনুমোদন ফিরিয়ে দিতে হবে, যাতে সেখানে অবিলম্বে ছাত্রভর্তির প্রক্রিয়া শুরু করা যায়। কিন্তু নির্দেশটি এখনও কার্যকর হয়নি। সুপ্রিম কোর্টে সেটিকে চ্যালেঞ্জও করা হয়নি। এমতাবস্থায় হলদিয়া মেডিক্যাল কলেজ-কর্তৃপক্ষ আদালত আবমাননার মামলা করেছিলেন।
এবং শুক্রবার মামলার শুনানি শুরু হতেই রাজ্য সরকার, রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া (এমসিআই) আদালতের তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়ে। “হাইকোর্টের আদেশ পালন না-করার প্রবণতা সরকারকে পেয়ে বসেছে।” মন্তব্য করেন বিচারপতি মাত্রে। এ দিন বেঞ্চের নির্দেশ: শনিবারের মধ্যে হলদিয়া মেডিক্যাল কলেজকে অনুমোদন ফিরিয়ে দিতে হবে। কলেজ-কর্তৃপক্ষকে পড়ুয়া ভর্তি সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন প্রকাশ করতে হবে রবিবারের মধ্যে, আর ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সারতে হবে ভর্তি প্রক্রিয়া।
নির্দেশ না-মানার ‘ভুল’ স্বীকার করে রাজ্য সরকার ও এমসিআইয়ের তরফে এ দিন ডিভিশন বেঞ্চকে জানিয়ে দেওয়া হয়, তারা শনিবারের মধ্যে হলদিয়া মেডিক্যালকে প্রয়োজনীয় অনুমোদন দিয়ে দেবে। তা এসে গেলে রবিবারই ভর্তি-বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন কলেজ-কর্তৃপক্ষ। সব মিলিয়ে এ দিনের ঘটনা-পরম্পরায় প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়া ও শিক্ষকমহলে কিছুটা হলেও স্বস্তিতে।
দু’বছর আগে রাজ্যে ক্ষমতার পালাবদলের পরেই নতুন সরকার, রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় ও এমসিআই কয়েক দিনের ব্যবধানে হলদিয়া মেডিক্যাল কলেজের অনুমোদন বাতিল করে। কলেজ কর্তৃপক্ষ হাইকোর্টে গেলে বিচারপতি গিরীশ গুপ্ত অনুমোদন বাতিলের সিদ্ধান্ত খারিজ করে দেন। “যে রাজ্যে চিকিৎসকদের এত অভাব, সেখানে একটা চালু মেডিক্যাল কলেজ বন্ধ করে দেওয়ার বিলাসিতা শোভা পায় না।” বলেছিলেন বিচারপতি গুপ্ত। রাজ্য সরকার, স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় ও এমসিআই তাঁর রায় চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে। শীর্ষ আদালত তা হাইকোর্টেই ফেরত পাঠায়। হাইকোর্টের বিচারপতি মাত্রে ও বিচারপতি চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ মামলার শুরুতেই জানিয়ে দিয়েছিল, পড়ুয়া-স্বার্থের কথা মাথায় রেখে তারা রায় দেবে। শুনানি শেষে এ মাসের গোড়ায় বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, দু’সপ্তাহের মধ্যে অনুমোদন ফিরিয়ে দিয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।
নির্ধারিত সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরে, অবশেষে আদালতের নির্দেশ কার্যকর হওয়ার আশা দেখা দিয়েছে। যে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা হলদিয়ার মেডিক্যাল কলেজটি চালায়, তার কর্ণধার সিপিএমের প্রাক্তন সাসংদ লক্ষণ শেঠ। এ দিন হাইকোর্টের নির্দেশ জানার পরে তাঁর প্রতিক্রিয়া, “সরকারের আক্রোশ তো আমার উপরে! ওঁরা আমার উপরেই আক্রোশ মেটান না! ছাত্রছাত্রীরা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেটাই কাম্য।” রাজ্য সরকার হলদিয়া মেডিক্যালে ছাত্রভর্তি নিয়ে আর কোনও সমস্যার সৃষ্টি করবে না বলেই আশা লক্ষ্মণবাবুর।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.