|
|
|
|
মেয়েকে মেরে বেশ করেছি, বলছে বাবা |
সংবাদসংস্থা • রোহতক |
এখনও থমথম করছে ঘারনাবতী গ্রাম। দু’দিন আগেই হরিয়ানার যে গ্রামে দু’টি ছেলেমেয়েকে সম্মান রক্ষার নামে জনসমক্ষে নৃশংস ভাবে খুন করেছে মেয়েটির পরিবার। কিন্তু গ্রামের কেউ সেই হত্যাকাণ্ড নিয়ে মুখ খুলছেন না।
রোহতকের কাছের ওই গ্রামের ছেলেমেয়ে ধর্মেন্দ্র আর নিধির অপরাধ ছিল, তাঁরা দু’জনেই সমগোত্রের হওয়া সত্ত্বেও পরস্পরকে ভালবেসেছিলেন। তাই তাঁদের খুন করে ‘উচিত শিক্ষা’ দিয়ে তৃপ্ত নিধির বাবা নরেন্দ্র ওরফে বিল্লু। নিধির ঠাকুমা জানিয়েছেন, মেয়ের সঙ্গে ধর্মেন্দ্রর সম্পর্ক জানার পরেই মাথায় রক্ত চড়ে গিয়েছিল বিল্লুর। গ্রেফতার হওয়ার পরেও এতটুকু অনুতাপের চিহ্ন নেই মুখে।
মেয়েকে পিটিয়ে মেরে বিল্লু সদর্পে বলেছে, “আমার কোনও আফশোস নেই। আমায় যদি আবার এমন করতে হয়, আমি করব। সবাই যদি এই নিয়ম মেনে চলে, তা হলে ঝামেলাই থাকে না।” নিধির পরিবারের সাত সদস্যই খুনে জড়িত। জাঠ সম্প্রদায়ের এই দুই পরিবার নিজেদের সম্মান রক্ষায় একজোট।
তাই নিধির পরিবারের লোকজন ধর্মেন্দ্রকে খুন করার পরেও তাদের বিশেষ হেলদোল নেই। ধর্মেন্দ্রর হাত-পা ভেঙে দিয়ে বারবার ছুরি মারা হয় তার শরীরে। কেটে ফেলা হয় মাথা। ধর্মেন্দ্ররই বাড়ির বাইরে এই সব চলছিল। ছেলের কাতর চিৎকার শুনেও বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসেনি কেউ। ধর্মেন্দ্রর দেহ ছুড়ে ফেলা হয় তাঁর বাড়ির সামনেই। এর পরেও ধর্মেন্দ্রর পরিবার পুলিশে অভিযোগ তো দায়ের করেনইনি, বরং বলেছেন, ওদের এই পরিণতিই হওয়ার ছিল। ধর্মেন্দ্রর ভাইয়ের কথায়, “ভাই বোনের কি বিয়ে হয়? ছেলেমেয়েদের শাস্তি দেওয়াই আমাদের কর্তব্য।”
নিধির ভাই সানিকে আজ গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধরা হয়েছে সন্দেহভাজন এক ট্যাক্সিচালককেও। রোহতকের ডিএসপি অনিল কুমার জানিয়েছেন, নিধির মা রীতাও নিজের দোষ স্বীকার করেছে। তার প্রশ্ন, “এক গ্রামের এক গোত্রের ছেলেমেয়ের ভাই-বোনের সম্পর্ক। তাদের বিয়ে হবে কী করে?”
নিধি-ধর্মেন্দ্র খুনের ভয়ঙ্কর দৃশ্যের সাক্ষী অনেকেই। অথচ গ্রাম ঘুরে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য কাউকেই জোগাড় করতে পারেনি পুলিশ। উল্টে গ্রামবাসীদের কেউ কেউ বলছেন, “আমার মেয়ে এমন করলে, আমিও নিজে হাতে মেয়েকে মেরে ফেলতাম। তাতে আমার যা হওয়ার হতো।” দু’বছর আগেই সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, সম্মান রক্ষার্থে হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে।
|
পুরনো খবর: পিটিয়ে, মাথা কেটে খুন মেয়ে ও তার প্রেমিককে, গ্রেফতার বাবা-মা |
|
|
|
|
|