|
|
|
|
সম্মান রক্ষার্থে হত্যা |
পিটিয়ে, মাথা কেটে খুন মেয়ে ও তার প্রেমিককে, গ্রেফতার বাবা-মা |
সংবাদসংস্থা • রোহতক |
বাবা-মা ফোন করে ভরসা দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ফিরে আয়, তোদের কোনও ক্ষতি হবে না। সেই আশ্বাসেই প্রেমিকের সঙ্গে বাড়ি ফিরে এসেছিলেন বছর কুড়ির তরুণী।
বাবা-মা কথা রাখেননি। মেয়ে ফিরে আসার পরে পরিবারের সম্মান রক্ষার জন্য জনসমক্ষে পিটিয়ে মেরে ফেলেছেন নিজেদের মেয়েকেই। তাঁদের সাহায্য করেছেন পরিবারের বাকি সবাই। রেহাই পাননি প্রেমিকও। নৃশংস ভাবে মারধর করে হাত পা ভেঙে দিয়ে তাঁর মাথা কেটে দেওয়া হয়। মুণ্ডহীন দেহ ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয় গ্রামের এক প্রান্তে।
ফের সম্মান রক্ষার্থে হত্যার ঘটনায় আরও একটি মর্মান্তিক উদাহরণ যোগ করল হরিয়ানার ঘারনাবতী গ্রাম। যে গ্রামের তরুণী নিধি বারাক পড়াশোনা করতেন চারুকলা নিয়ে। আর তাঁর প্রেমিক বছর ২২-এর ধর্মেন্দ্র বারাক পড়তেন প্রযুক্তিবিদ্যা। রোহতকের একই কলেজে। নিধি-ধর্মেন্দ্র জানতেন, ওঁদের কারও বাড়িতেই সম্পর্কটা মেনে নেবে না। কারণ ওঁরা এক গ্রামের ছেলেমেয়ে। তার উপরে দু’জনে একই সম্প্রদায়ের। তাই মঙ্গলবার দু’জনে পালিয়ে চলে এসেছিলেন দিল্লিতে। ভেবেছিলেন, পরিবারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দু’জনে এক সঙ্গে বাঁচবেন, ঘর বাঁধবেন। কিন্তু স্বপ্নটা স্বপ্নই রয়ে গেল। |
রোহতক জেলা আদালতে নিধির বাবা-মা। ছবি: পিটিআই। |
বাড়ি থেকে ফোনটা পেয়ে নিধির মনে হয়েছিল, এ বার হয়তো বাবা-মা বুঝেছেন। এ বার হয়তো বিয়েতে আর আপত্তি করবে না কেউ। বুধবার তাই আশায় বুক বেঁধে গ্রামে ফিরে আসেন নিধি আর ধর্মেন্দ্র।
দু’জনের কেউই জানতেন না, তাঁদের জন্য অপেক্ষা করে আছে মৃত্যু। দিল্লি থেকে বাড়ি ফিরে আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সব শেষ। নিধির দেহ সৎকারের সময়ে পুলিশ এসে উপস্থিত হয় ঘটনাস্থলে। গ্রেফতার করা হয় নিধির বাবা-মা এবং কাকাকে। এক গ্রামবাসী মারফত পুলিশ আসার খবর পেয়ে অবশ্য আগে থেকেই পালিয়ে যায় নিধির দাদা।
নিধির বাড়ির লোকজন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকলেও ধর্মেন্দ্রর পরিবারের মন্তব্য, যা হয়েছে, ঠিক হয়েছে। তাঁরা ধর্মেন্দ্রকে খুনের জন্য কোনও অভিযোগ দায়ের করতেও চাননি। আর নিধির কাকিমার বক্তব্য, “যা হয়েছে, তা হয়তো ভুল। কিন্তু যখন কোনও বাবা এই ধরনের কাজ করে, তার পিছনে নিশ্চয়ই সেই রকমই কারণ থাকে।”
হরিয়ানার মানবাধিকার কমিশন ঘটনার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট চেয়েছে পুলিশের কাছে। |
|
|
|
|
|