মুজফ্ফরনগরে গোষ্ঠী সংঘর্ষে উস্কানি দেওয়ায় অভিযুক্ত এক রাজনীতিককে অবশেষে গ্রেফতার করল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। আজ বিধানসভা থেকে বেরিয়ে বিজেপি কার্যালয়ে যাওয়ার পথে বিধায়ক সুরেশ রানাকে ধরা হয়। এ দিনই বিধানসভায় মুজফ্ফরনগরের গোষ্ঠী সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন সমাজবাদী পার্টি ও বিজেপির বিধায়করা।
গোষ্ঠী সংঘর্ষে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে বিজেপি বিধায়ক সঙ্গীত সোম, ভার্তেন্ডু সিংহ, সুরেশ রানা, ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের নেতা রাকেশ ও নরেশ টিকায়েত, বিএসপি সাংসদ কাদির রানা, বিএসপি বিধায়ক নুর সালিম রানা, জামিল আহমেদ ও কংগ্রেস নেতা সইদুজামার বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছিল।
বিধানসভার অধিবেশন চলায় বিধায়করা গত বেশ কয়েক দিন সেখানে হাজির ছিলেন। পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করার জন্য দল পাঠালেও কাজ হয়নি। বিজেপি বিধায়কদের গ্রেফতার করা হলে অখিলেশ যাদব সরকারকে ফল ভুগতে হবে বলে হুমকি দিয়েছিলেন উমা ভারতী। বিধানসভার বাইরে বিজেপি সমর্থকদের নিয়ে এক দিন বিক্ষোভও দেখান তিনি। ফলে, ফিরে আসতে বাধ্য হয় পুলিশ।
আজ বিধানসভার অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতুবি হয়ে যাওয়ার পরে গোমতী নগরে বিজেপি কার্যালয়ে যাচ্ছিলেন সুরেশ রানা। সমতা মুলক সমাজ চকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারির আগে রানাকে কেন্দ্র করেই বিধানসভায় গোলমাল শুরু হয়। মুজফ্ফরনগরে প্ররোচনামূলক বক্তৃতা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে রানার বিরুদ্ধে। আজ তাঁকে নিজের বক্তব্য পেশ করার সুযোগ দেন স্পিকার মাতাপ্রসাদ পাণ্ডে। রানা জানান, তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআরের কথা সংবাদমাধ্যম থেকে জানতে পেরেছিলেন। তাঁর বক্তৃতার সিডি সরকার পরীক্ষা করে দেখুক। দোষী হলে তিনি শাস্তি পেতে প্রস্তুত। কিন্তু, গোষ্ঠী সংঘর্ষে সমাজবাদী পার্টির নেতারা জড়িত। রানা এ কথা বলার পরেই চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন সমাজবাদী বিধায়করা।
স্পিকার রানাকে কেবল নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যাতেই সীমাবদ্ধ থাকতে বলেন। সঙ্গে সঙ্গে বিজেপি সদস্যরা প্রতিবাদ করেন। তাঁরা দাবি করেন, “পরিষদীয় মন্ত্রী আজম খানকে এক ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়েছিল। রানাকে আরও সময় দিতে হবে।” এই দাবিতে ওয়েলে নেমে পড়েন তাঁরা। স্পিকার তাঁদের দাবি মেনে নেন।
রানা দাবি করেন, গোষ্ঠী সংঘর্ষে বিধ্বস্ত শ্যামলী এলাকায় শান্তি ফেরানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি ও বিজেপি বিধায়ক হুকুম সিংহ। ফের প্রতিবাদ করেন সমাজবাদী বিধায়করা। অখিলেশ যাদব সরকারের তীব্র সমালোচনা শুরু করেন বিজেপি বিধায়ক উপেন্দ্র তিওয়ারি। তাঁকে ‘চুপ করে বসতে বলেন’ মন্ত্রী অম্বিকা চৌধুরি। চৌধুরির মন্তব্যের পরে পুরো দস্তুর হট্টগোল শুরু হয় বিধানসভায়। স্পিকারের চেয়ারের দিকে তেড়ে যান বিজেপি সদস্যরা। তাঁদের ধাক্কা দেন দুই মন্ত্রী পবন পাণ্ডে ও বিনোদ সিংহ পণ্ডিত। বিজেপি নেতা হুকুম সিংহের সঙ্গে মন্ত্রী নারদ রাইয়ের হাতাহাতি হয়।
পরে অম্বিকা চৌধুরি তাঁর মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়ে নেন। মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবও বলেন, “ওই মন্ত্রীর মন্তব্যের জন্য আমি দুঃখিত। বিধানসভার কার্যবিবরণী থেকে তা বাদ দেওয়া উচিত।” তবে সেই সঙ্গে তাঁর হুঁশিয়ারি, “গোষ্ঠী সংঘর্ষে যে বিজেপি নেতারা উস্কানি দিয়েছেন তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হবে না।”
|