পরিবর্তনের পক্ষে প্রচারে প্রাক্তন মন্ত্রী
নিবার্চন বড় বালাই, বদলেছেন বিশ্বনাথ
বাম আমলে পুরভোটের সময় বালুরঘাটে তাঁকে একের পর এক পথসভায় দেখা যেত না। সাধারণত, বড় মাপের একটি সমাবেশে তিনি বক্তৃতা দিতেন। অনায়াসে পুরবোর্ড দখল করার আসার ব্যাপারে এতটাই আত্মবিশ্বাস ছিল বামফ্রন্টের শরিক আরএসপির। এ বার বালুরঘাটে টানা পথসভা করতে দেখা যাচ্ছে প্রাক্তন কারা ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রীকে। কারণ, বিধানসভা ভোটে হারের পরে এবার নিজের শহরের পুরসভা দখলে রাখতে চেষ্টা করছেন সত্তরোর্ধ্ব বিশ্বনাথবাবু। ভোটের দিন যত এগোচ্ছে নানা ঘটনাক্রম দেখেশুনে প্রাক্তন কারামন্ত্রীর উদ্বেগ যেন বাড়ছে। অন্তত আরএসপির সদর দফতরের গেলে সেই উদ্বেগের ছবিই ধরা পড়ছে।
অনেক আছে। আপাতত তিনটি ঘটনার কথা বলা যাক।
এক, ভোটারদের টাকা বিলি করা হচ্ছে, এই অভিযোগে আরএসপির দুই নেতাকে দীর্ঘক্ষণ ঘিরে রেখেছেন তৃণমূলের কর্মীরা। বালুরঘাট শহরের এ কে গোপালন কলোনির ঘটনা। যে এলাকা একদা ছিল আরএসপির ঘাঁটি। পিছু হটতে হয়েছে আরএসপিকে।
দুই, সমাজকল্যাণ দফতরের প্রাক্তন মন্ত্রীর নেতৃত্বে কোনও মিছিলে অঙ্গনওয়ারি কর্মীদের যে ভিড় উপচে পড়ত তা এ বার দেখা যাচ্ছে না। বরং তৃণমূলের মিছিলে মহিলাদের ঠাসাঠাসি ভিড়। যা দেখে কয়েক বছর আগের বামেদের মিছিলের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে শহরবাসীর।
তিন, যে কোনও ওয়ার্ডে গেলেই বাম কাউন্সিলরদের নানা স্বজনপোষণ, দুর্নীতি, বেহাল নিকাশি, ভাঙাচোরা রাস্তা নিয়ে দু-কথা শোনাতে ছাড়ছেন না অনেক বাসিন্দাই। তা শুনেটুনেই সুযোগ পেলে বাকি কাজও করার আশ্বাস দিতে শোনা যাচ্ছে বামেদের।
বস্তুত, লোকসভা ভোটে সামান্য মার্জিনে জেলার আসনটি বামেরা ধরে রাখলেও বিধানসভায় পর্যুদস্ত হন। গত পঞ্চায়েত বামেদের অবস্থা আরও শোচনীয় হয়েছে। ৩২ বছর ধরে বালুরঘাট পুরসভা দখলে থাকলেও ‘পরিবর্তন’-এর বাতাসের ধাক্কায় সেটাও হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা বামেরা পুরোপুরি উড়িয়ে দিতে পারছেন না। তা বলে লড়াকু বিশ্বনাথবাবু কিন্তু হাল ছাড়তে রাজি নন। সে জন্যই আশ্বিনের গোড়ায় তীব্র দাবদাহ উপেক্ষা করে এক ওয়ার্ড থেকে অন্যত্র ঘাম ঝরাতে দেখা যাচ্ছে তাঁকে। বারেবারেই বিশ্বনাথবাবু সভা-সমাবেশে বলছেন, ‘‘হাওয়া থেমে গিয়েছে। পুরসভায় আমরাই ফের ক্ষমতায় আসব।”
বাস্তবে হাওয়া ক্রমশ প্রবল হচ্ছে বলেই বিশ্বনাথবাবুরা ফের ক্ষমতায় ফেরার দুঃস্বপ্ন দেখছেন বলে দাবি করছেন তৃণমূলের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা নেতৃত্ব। বালুরঘাট পুর এলাকার বস্তি উন্নয়ন, নিকাশির বেহাল দশা, পুরসভায় নিয়োগে অনিয়ম ও স্বজনপোষণ নিয়ে বিস্তর অভিযোগ প্রতিটি সভায় তুলে ধরছেন তৃণমূল নেতারা। এমনকী, বাড়ি-বাড়ি পানীয় জল সরবরাহ কেন হল না সেই প্রশ্ন তুলে প্রায় সর্বত্রই হাততালি আদায় করছেন তৃণমূলের নেতারা। তৃণমূলের দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র বলেন, “পিছিয়ে পড়া বালুরঘাটকে রেল যোগাযোগের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গে মূল ভূখন্ডের সঙ্গে যুক্ত করা থেকে বালুরঘাট হাসপাতালের সার্বিক চিকিৎসা ব্যবস্থা ও শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নয়নের কৃতিত্ব যাঁর, সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে বালুরঘাট শহরের সামগ্রিক উন্নয়নের দায়িত্ব তুলে দেবেন নাগরিকরা।” সেই সঙ্গে বিপ্লববাবুর সংযোজন, “মনে রাখতে হবে গত বিধানসভা পুরসভার ২৫টি ওয়ার্ডে তৃণমূল ১০ হাজার ভোটে বামেদের চেয়ে এগিয়ে ছিল।”
কিন্তু, বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট ছিল। এবার তো নেই। উপরন্তু, কংগ্রেসও ২৪ ওয়ার্ডে প্রার্থী দিয়েছে। যদিও কংগ্রেসের জেলা কিংবা প্রদেশ নেতারা বালুরঘাট পুরসভা দখলের কথা সে ভাবে ভাবতে পারছেন না। তবে বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে কংগ্রেস ভাল সংখ্যক ভোট পাবে বলে দাবি করছে। বালুরঘাটে পুরভোটের প্রচারে যিনি নানা ওয়ার্ডে ঘুরেছেন, সেই প্রদেশ কংগ্রেস নেতা ওমপ্রকাশ মিশ্র বলেন, “এবারের পুরভোটে হয়তো আমরা জিতব না। তবে কয়েকটি ওয়ার্ডে আমরা ভাল ভোট পাব।”
তাতেই কিছুটা হলেও যেন আশার আলো দেখছেন বামেরা।
এক নজরে
আসন ২৫
ভোটার ৫২ হাজার
তৃণমূল সব আসনে
আরএসপি ১৯ ও সিপিএম ৬ আসনে
কংগ্রেস ২৫টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.