পুজো নিয়ে প্রশাসনের ডাকা বৈঠকে যোগ না দেওয়ায় কোচবিহার সদরের সহকারি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে শোকজ করল প্রশাসন। বৃহস্পতিবার কোচবিহারের রবীন্দ্র ভবনে পুলিশ, দমকল, পুরসভা, বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য, পূর্ত-সহ বিভিন্ন দফতরের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়। শহরের ৫২ টি পুজো কমিটি এবং একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে বৈঠকে ডাকেন মহকুমাশাসক বিকাশ সাহা। বৈঠকে বেশিরভাগ পুজো কমিটি, দফতরের প্রতিনিধিরা যোগ দেন। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে কেউ বৈঠকে যোগ দেননি। বৈঠকের পর তা নিয়ে প্রশাসনের কর্তারা অসন্তোষ প্রকাশ করেন। বৈঠকে উপস্থিত না থাকার কারণ জানাতে সহকারি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরে চিঠি পাঠান মহকুমাশাসক। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তরফে অবশ্য পাল্টা দাবি করা হয়েছে ডেঙ্গি সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের কাজে ব্যস্ত থাকায় সহকারি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বৈঠকে যোগ দিতে পারেননি। কোচবিহার সদর মহকুমাশাসক বিকাশ সাহা বলেন, “ডেঙ্গি-সহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য বিধি সংক্রান্ত ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে পুজোর ভিড়ে ঠাসা মণ্ডপ চত্বরকে আমরা কাজে লাগাতে চাই। সহকারি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বা তাঁর প্রতিনিধি এ দিনের বৈঠকে যোগ না দেওয়ায় এ সব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে আলোচনা করা যায়নি।” মণ্ডপে প্রাথমিক চিকিৎসার বন্দোবস্ত রাখা, স্বাস্থ্য পরিষেবা সচল রাখার মতো বিষয়ে আলোচনা জরুরি ছিল। তা না হওয়ায় তিনি অসন্তুষ্ট। সোমবারের মধ্যে ওই অনুপস্থিতির ব্যাপারে কারণ জানতে চেয়ে সহকারি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে এদিন চিঠি দেওয়া হয়। কোচবিহার সদর সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৈকত প্রধান অবশ্য বলেন, “কোচবিহার-২ নম্বর ব্লকের এক বাসিন্দা ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। তাতে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। এদিনও পুণ্ডিবাড়ি ছিলাম। ওটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলেই সেখানে যাই। আমার দফতরে অন্য আধিকারিক না থাকায় প্রতিনিধি পাঠাতে পারিনি। শোকজের চিঠি হাতে পেলে তা জানিয়ে দেব।”
বৈঠকে দমকল, বিদ্যুৎ দফতরের কর্তারা নির্দিষ্ট বিধি মেনে আয়োজনের ব্যাপারে উদ্যোক্তাদের সতর্ক করে দেন। দমকলের তরফে জানানো হয় প্রতিটি মণ্ডপের সামনে যাতায়াতের রাস্তা চওড়া রাখা, মণ্ডপে আগুন নেভানোর ব্যবস্থা রাখার কথা জানানো হয়। পুজো কমিটি যাদের গত বছরের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে তা দ্রুত না মেটালে সংযোগ দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেন বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানি প্রতিনিধিরা। বড় পুজো কমিটিগুলিকে তাদের প্রতিদিনের চাহিদার কথাও আগাম জানানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। বিদ্যুৎ সংক্রান্ত সমস্যা হলে উদ্যোক্তারা কোন নম্বরে যোগাযোগ করবেন তা জানিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশের তরফে কোচবিহারের ডিএসপি হেডকোয়ার্টার ইন্দ্রজিৎ রায় পুরুষ ও মহিলা দুই দল স্বেচ্ছাসেবক মণ্ডপ চত্বরে রাখার ওপর জোর দেন। পুজো উদ্যোক্তাদের তরফে রাস্তার বেহাল পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে মেরামতের দাবি জানানো হয়। রাতে বিগ বাজেটের পুজোগুলিতে ভিড়ের কথা মাথায় রেখে পুলিশের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা, যানজট মোকাবিলার মত বিভিন্ন বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে আর্জি করা হয়। দর্শনার্থী পরিষেবার আশ্বাস দেন তারা। কোচবিহারের মহিলা পরিচালিত পুজো কমিটির প্রতিনিধি কনক মিত্র বলেন, “দর্শনার্থীদের জন্য আমরা মণ্ডপের কাছেই পানীয় জলের ব্যবস্থা করার কথা জানিয়ে দিয়েছি।” |