ত্রিপুরার জন্য বরাদ্দ মেডিক্যাল কলেজের আসনে প্রতারণা করে অযোগ্য প্রার্থীদের সুযোগ দেওয়ার মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী রশিদ মাসুদ। আজ এই মামলার রায় ঘোষণা করেছে বিশেষ সিবিআই আদালত।
কোনও মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে জনপ্রতিনিধিরা তাঁদের পদ হারাবেন বলে জুলাই মাসে রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তাঁরা উচ্চ আদালতে আপিল করলেও সদস্য পদ রাখতে পারবেন না বলে জানিয়েছিল শীর্ষ আদালত। সেই রায়ের পরে এই প্রথম দোষী সাব্যস্ত হলেন কোনও জনপ্রতিনিধি। ফলে, সাংসদ পদ হারাতে হবে বর্তমানে রাজ্যসভার সদস্য মাসুদকে।
রশিদ মাসুদ |
১৯৯০ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত ভি পি সিংহের সরকারে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন মাসুদ। সিবিআইয়ের চার্জশিট অনুযায়ী, ত্রিপুরায় তখন কোনও মেডিক্যাল কলেজ ছিল না। তাই কেন্দ্রের হাতে থাকা আসন থেকে ভাগলপুর মেডিক্যাল কলেজ, পাটলিপুত্র কলেজ ও গ্বালিয়র মেডিক্যাল কলেজের মতো প্রতিষ্ঠানে ত্রিপুরার শিক্ষার্থীদের পড়ার ব্যবস্থা করা
হত। মাসুদ তাঁর ভাইপো-সহ বেশ কয়েক জন অযোগ্য প্রার্থীকে ওই বরাদ্দ আসনে এমবিবিএস পড়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।
এই কেলেঙ্কারিতে তাঁর সঙ্গে জড়িত ছিলেন দিল্লিতে ত্রিপুরার তৎকালীন রেসিডেন্ট কমিশনার গুরদিয়াল সিংহ ও ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সুধীররঞ্জন মজুমদারের সচিব অমলকুমার রায়। তাঁরাও দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। অভিযুক্তদের তালিকায় ছিলেন সুধীররঞ্জন ও ত্রিপুরার তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী কাশিরাম রিয়াংও। বিচার চলাকালীন তাঁদের মৃত্যু হয়।
প্রতারণা করে মেডিক্যাল কলেজে স্থান পাওয়া ন’জন শিক্ষার্থীও দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে মাসুদের ভাইপো-সহ দু’জন ঘটনার সময়ে নাবালক ছিলেন। জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে তাঁদের বিচার হয়েছে।
সিবিআই কৌঁসুলি জানিয়েছেন, এক জন যোগ্য প্রার্থী একটি মেডিক্যাল কলেজে ত্রিপুরার জন্য বরাদ্দ আসন থেকে বঞ্চিত হন। ওই আসনটি এক অযোগ্য প্রার্থীকে দেওয়া হয়েছিল। যোগ্য প্রার্থী গুয়াহাটি হাইকোর্টে মামলা করেন। তখনই অনিয়মের বিষয়টি নজরে আসে। ১৯৯৬ সালে হাইকোর্ট সিবিআইকে এফআইআর করার নির্দেশ দেয়।
ষড়যন্ত্র, প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন রশিদ। আগামিকাল তাঁর শাস্তি ঘোষণা করবে আদালত। আইন অনুযায়ী, তাঁর সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। |