গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের বাসনপত্র ও চাল চুরি হয়েছিল মঙ্গলবার রাতে। বুধবার থানায় অভিযোগও হয়েছে। কিন্তু, পুলিশ তদন্তে নামার আগেই বৃহস্পতিবার গ্রামের মন্দিরে গ্রামবাসীদের ডেকে তাঁরা ‘চুরির ঘটনায় জড়িত নন’, এই মর্মে শপথ করিয়ে বিতর্কে জড়ালেন ওই প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক। তার জেরে দিনভর স্কুলে পড়াশোনাই বন্ধ রইল।
মঙ্গলবার রাতে তালা ভেঙে চুরির ঘটনাটি ঘটে বোরো থানার কুলটাঁড় প্রাথমিক স্কুলে। প্রধান শিক্ষক ভদ্রলাল মাহাতো এ দিন গ্রামের হরিমন্দির চত্বরে গ্রামবাসীদের জড়ো হতে বলেন। স্থানীয় বাসিন্দা ঈশ্বর হাঁসদা, হরেকৃষ্ণ মাহাতো, পরমেশ্বর সরেনদের দাবি, “প্রধান শিক্ষক বলেছিলেন, যে আসবে না, তার বিরুদ্ধে থানায় নালিশ হবে। সেই ভয়েই অধিকাংশ গ্রামবাসী মন্দির চত্বরে এসেছে চুরি করেননি বলে শপথ নিয়েছেন।” কিছু গ্রামবাসীর কথায়, “আমরা প্রধান শিক্ষকের এই কাজকে সমর্থন করি না। কিন্তু, মন্দিরে উঠতে অস্বীকার করলে তাকে চোর আখ্যা দেওয়া হতে পারে এই আশঙ্কায় সবাই শপথ নিয়েছে।” আজ, শুক্রবারও এই শপথ-পর্ব চলবে।
প্রধান শিক্ষক এ দিন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চাননি। বোরোর অবর স্কুল পরিদর্শক সৌমেন মণ্ডল বলেন, “স্কুলে চুরির ঘটনা কেউ আমাকে জানায়নি। আর চুরির কিনারা করার এমন পদ্ধতি নেওয়া হলে, তা ঠিক হয়নি। এ জন্য পুলিশ আছে। প্রধান শিক্ষককে ডেকে সব জানতে চাইব।” পুরুলিয়া জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) বৃন্দাবন দাসের ক্ষোভ, “পঠনপাঠন বন্ধ রেখে ওঁকে এ সব কে করতে বলেছে? শুক্রবারই ওই স্কুলে পরিদর্শন দল পাঠাব।” আর পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার দুপুরে প্রধান শিক্ষক লিখিত অভিযোগে জানান, স্কুলের ৮৬টি থালা ও ৯৩ কেজি চাল চুরি হয়েছে। তাঁকে স্টক রেজিস্টার-সহ নথিপত্র আনতে বলা হয়েছিল। কিন্তু, বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে এগারটা নাগাদ তদন্তে গিয়ে স্কুলে কাউকে পাওয়া যায়নি বলে পুলিশ জানায়। |