শ্বশুরবাড়িতে মেয়ের ‘ভাল থাকা’ নিশ্চিত করতে সাধ্যের বাইরে গিয়েও ৮০ হাজার টাকা পণ দিয়েছিলেন বাবা। বাকি কুড়ি হাজার টাকা পরে মিটিয়ে দেবেন বলে কথা দিয়েছিলেন মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে। কিন্তু তর সয়নি শ্বশুরবাড়ির। টাকা না পাওয়ায় মিনাখাঁ থানার নেরুলি-২ চৈতলের বাসিন্দা রেজিনা বেগমের (২০) মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ উঠল স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। বুধবার রাতের ওই ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখান এলাকাবাসী। মিনাখাঁ থানার পুলিশ গিয়ে দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ ওঠে। রেজিনার বাবা আবদুল বারি গাজি জামাই আবদুল ফারাক গাজি, শাশুড়ি হাফিজা বিবি-সহ ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। সকলেই পলাতক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, গত জুন মাসে রেজিনা ও আবদুল ফারাকের বিয়ে হয়। জামাইয়ের দাবি মতো সোনার গয়না-সহ নানা জিনিস যৌতুক দেন রেজিনার বাবা। আরও দাবি ছিল, মেছোভেড়ির ব্যবসার জন্য লাখ খানেক টাকা দিতে হবে। কয়েক মাস পরে সেই টাকা দেবেন বলে জানান আবদুল বারি। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই ওই টাকার দাবিতে রেজিনার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চলত। ইতিমধ্যে স্বামীর সঙ্গে এক আত্মীয়ার বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের কথা জেনে ফেলেন রেজিনা। প্রতিবাদ করায় অত্যাচার আরও বাড়ে। বিষয়টি বাবাকে জানানোর পরে মেয়ের ‘সুখের কথা’ ভেবে কষ্ট করেও ৮০ হাজার টাকা জামাইয়ের হাতে তুলে দেন রেজিনার বাবা। তার পরেও বাকি টাকার দাবিতে অত্যাচার চলতে থাকে। মঙ্গলবার বাপের বাড়ি চলে আসে রেজিনা। বুধবার সকালে আবদুল ফারাক তাকে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। রাত ৮টা নাগাদ রেজিনার বাপের বাড়িতে ফোন করে সে জানায়, রেজিনা অসুস্থ। মৃতার পরিবার শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে দেখেন, সেখানে কেউ নেই। দোতলার একটি ঘর বাইরে থেকে বন্ধ। সেখানে খাটে পড়ে রয়েছে রেজিনার মৃতদেহ। নাক, মুখ থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়েছে।
আব্দুল বারির দাবি, মেয়েকে শ্বাসরোধ করে খুন করার পর ঘটনা ধামাচাপা দিতে ওই ঘরে কীটনাশক ছড়িয়ে পালায় শ্বশুরবাড়ির লোকজন। |