বন্দুকবাজদের দাপটে আতঙ্ক নয়াগ্রামের স্কুলে
স্কুল চলাকালীন যখন তখন ঢুকে পড়ছে দুষ্কৃতীরা। শিক্ষকদের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে তোলা আদায় করছে তারা। পুলিশ-প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও প্রতিকার হয়নি। বরং দুষ্কৃতীদের উৎপাত আরও বেড়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের নয়াগ্রাম থানার বেড়াজাল গ্রাম পঞ্চায়েতের ‘দোলগ্রাম বালকেশ্বর এসসি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়’টি দুষ্কৃতীদের উৎপাতে মাঝে মধ্যেই বন্ধ থাকছে। বুধবার ফের পিস্তল নিয়ে দুষ্কৃতীরা স্কুলে ঢুকে পড়ে টাকার দাবিতে। আতঙ্কে বৃহস্পতিবার স্কুলে যাননি শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীরা। স্কুলের অচলাবস্থার জেরে সমস্যায় পড়েছে ছাত্রছাত্রীরা। বৃহস্পতিবার ফের পুলিশ-প্রশাসনিক মহলে নিরাপত্তার আর্জি জানিয়েছেন শিক্ষকেরা।
দোলগ্রামের বাসিন্দা বাবু চৌধুরী নামে এক যুবকের নেতৃত্বে এলাকার কিছু যুবক অসামাজিক কাজকর্মে জড়িত বলে অভিযোগ। পঞ্চায়েত ভোটের আগে ওড়িশার জেল থেকে ছাড়া পেয়ে বাবু এলাকায় ফেরে। এরপরই বাবু ও তাঁর দলবল নয়াগ্রামের বিভিন্ন পেশাজীবী ব্যক্তির কাছ থেকে তোলাবাজি চালাচ্ছে বলে অভিযোগ। তৃণমূলের ক্ষমতাসীন নয়াগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির নারী, শিশু ও জনকল্যাণ কর্মাধ্যক্ষ মামনি চৌধুরী হলেন বাবুর সম্পর্কিত দিদি। বাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। মামনিদেবী বলেন, “বাবুর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক নেই। ওই স্কুলের সমস্যা মেটানোর জন্য ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় সূত্রের খবর, এলাকার আরও কয়েকটি স্কুলে ও প্রতিষ্ঠানে ঢুকে নিয়মিত তোলাবাজি চালাচ্ছে বাবু-বাহিনী। ভয়ে অনেকেই পুলিশে অভিযোগ করতে সাহস করছেন না। বাবু ও তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করে বিপাকে পড়েছেন দোলগ্রাম বালকেশ্বর এসসি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। স্কুল সূত্রের খবর, ঘটনার সূত্রপাত গত ৩ অগস্ট। ওই দিন ক্লাস চলাকালীন দুপুর দেড়টা নাগাদ বাবু ও তাঁর তিন শাগরেদ (রাজা, বাঙরু ও মান্না) পিস্তল হাতে স্কুলে ঢুকে পড়ে। বৃন্দাবন সর্দার নামে এক শিক্ষকের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে টাকা ৫ হাজার টাকা দাবি করে তারা। টাকা না দিলে খুন করার হুমকি দেয় বাবুরা। এরপর সব শিক্ষকেরা মিলে নগদ পাঁচ হাজার টাকা ওই দুষ্কৃতীদের হাতে তুলে দিতে বাধ্য হন। কিন্তু তৃণমূল প্রভাবিত স্কুল পরিচালন কমিটি পুলিশে অভিযোগ জানাতে গড়িমসি করছিল বলে অভিযোগ। গত ২৬ অগস্ট ফের ওই দুষ্কৃতীরা হানা দিয়ে প্রতি মাসে সব শিক্ষকদের বেতন থেকে পাঁচ হাজার টাকা করে চাইলে ২৭ অগস্ট নয়াগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন স্কুল সম্পাদক ভূপেন্দ্রনাথ রাউল। দু’জনকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। কিন্তু মূল অভিযুক্ত বাবু ও তার বাকি সঙ্গী-সাথীরা বহাল তবিয়তে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ। ওই ঘটনার পর আতঙ্কে কয়েক দিন স্কুলে যাননি শিক্ষকেরা। পুলিশ নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়ায় ২ সেপ্টেম্বর থেকে স্কুলে নিয়মিত পঠন-পাঠন শুরু হয়। এরপর ফের বুধবার পিস্তল হাতে স্কুলে চড়াও হয় বাবু। স্কুল কর্তৃপক্ষ নয়াগ্রাম থানায় খবর দেন। পুলিশ পৌঁছনোর আগেই অবশ্য বাবু চম্পট দেয়। নয়াগ্রামের বিডিও তাপস ভট্টাচার্য বলেন, কিছু সশস্ত্র দুষ্কৃতী এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তোলাবাজি চালাচ্ছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশকে বিষয়টি দেখতে বলেছি।” তৃণমূলের নয়াগ্রাম ব্লক সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত বলেন, “কোনও দুষ্কৃতীকেই আমরা মদত দিই না। আইন আইনের পথে চলবে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.