|
|
|
|
লক্ষ্য সকলকে আওতায় আনা, কন্যাশ্রীর প্রচারে পথনাটিকা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
কন্যাশ্রী প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে ১ অক্টোবর। ঠিক ওই দিন থেকেই যাতে জেলাতেও উপযুক্ত ছাত্রীদের এই প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসা যায় সে জন্য পদক্ষেপ শুরু করল জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবারই এ নিয়ে ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক হয়। জেলা শাসকের সভাকক্ষের ওই বৈঠকে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের পাশাপাশি সমস্ত ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিরাই উপস্থিত ছিলেন। সেখানে প্রতিটি ব্যাঙ্ককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, দ্রুত গতিতে ১৩-১৭ বছয় বয়সী ছাত্রীদের ‘জিরো ব্যালেন্স’ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যবস্থা করতে হবে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষও অবশ্য এ ব্যাপারে পদক্ষেপ করার কথা জানিয়েছেন।
পশ্চিম মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) বাসব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা যত দ্রুত সম্ভব বেশিরভাগ ছাত্রীকে প্রকল্পের আওতায় আনতে চাইছি। যেহেতু প্রাপ্য টাকা সংশ্লিষ্ট ছাত্রীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দেওয়া হবে তাই সবার আগে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা জরুরি। এ দিন সব ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিদের এ ব্যাপারে উদ্যোগী হতে বলা হয়েছে।” ব্যাঙ্কের লিড ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার সমরেন্দ্র সন্নিগ্রাহী বলেন, “জেলার সব ব্যাঙ্ক এ ব্যাপারে পদক্ষেপ করবে। কোন ব্যাঙ্ক কতটা কাজ করছে, তা-ও নিয়মিত খতিয়ে দেখা হবে।”
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সচেতনতা প্রচারেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পথনাটিকা, চলচ্চিত্রের মাধ্যমে কন্যাশ্রী প্রকল্প কী, তার উদ্দেশ্য কী দেখানো হবে। প্রয়োজনে স্কুলে স্কুলে ‘কাউন্সেলিং’ও করানো হবে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) অরিন্দম দত্তের কথায়, “শিক্ষার জন্য সরকারের কোটি কোটি টাকা খরচ হয়। তার বাইরেও ছাত্রীদের সরাসরি অর্থ সাহায্য দিচ্ছে। এর প্রধান কারণ, উৎসাহ জোগানো। উন্নত মানসিকতা তৈরি করা। তারপরেও ছাত্রছাত্রীদের বিপথে পরিচালিত হওয়া উচিত নয়। প্রচারে সেটাই বোঝানো হবে।”
প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন না হলেও চারদিকে প্রকল্প নিয়ে হইচই শুরু হয়ে গিয়েছে। কারণ, ইতিমধ্যেই জেলার স্কুলে আবেদনপত্র পৌঁছে গিয়েছে। যে আবেদনপত্র পূরণ করলে তবেই এই প্রকল্পের আওতায় আসতে পারবে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এক্ষেত্রে দু’টি পদ্ধতিতে ছাত্রীদের সহায়তা করা হবে। কেউ এককালীন টাকা নিতে পারেন। তাহলে তাঁকে ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে। আবার কেউ মাসে মাসে টাকা নিতে পারেন। তাঁকে বছরে ৫০০ টাকা দেওয়া হবে। এই দুই ধরনের মিলিয়ে মোট ৬ হাজার আবেদনপত্র এসেছিল জেলায়। মাসিক কিস্তিতে নেওয়ার আবেদনপত্র ৬ হাজার ও এককালীন টাকা নেওয়ার ১ হাজার আবেদনপত্র। স্বাভাবিক ভাবেই এত অল্প সংখ্যক আবেদনপত্র আসায় তা হাতে গোনা কয়েকটি স্কুলে দেওয়া গিয়েছে। আর জানাজানি হতেই যে সব স্কুলে আবেদনপত্র পৌঁছয়নি সেখানে অভিভাবকদের ভিড় জমতে শুরু করেছে। প্রধান শিক্ষকেরাও জেরবার হচ্ছেন অভিভাবকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ধীরে ধীরে আরও আবেদনপত্র আসবে। সেই সব আবেদনপত্র বিডিওদের মাধ্যমে প্রতিটি স্কুলেই পৌঁছে দেওয়া হবে। এমনকি শীঘ্রই যাতে ‘অনলাইন’এও আবেদন করা যায় তার জন্যও পদক্ষেপ করা হচ্ছে। তাহলে আর স্কুলে স্কুলে আবেদনপত্র পৌঁছনোর ঝক্কি থাকবে না। এই সহয়তা পাবে ১৩-১৭ বছর বয়সের ছাত্রীরা। এই বয়সের ছাত্রী সংখ্যা কয়েক লক্ষ হবে। ‘অনলাইন’এ আবেদন করা গেলে শহরাঞ্চলের ছাত্রীদের আর আবেদনপত্রেরও প্রয়োজন হবে না। কিন্তু সবার আগে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় বিষয় হল ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা। কারণ, এককালীন হোক বা বাৎসরিক টাকা দেওয়া হবে সংশ্লিষ্ট উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। তাই যেখানে ব্যাঙ্ক রয়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকার যত স্কুল সেই এলাকায় থাকবে সেই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে তাঁরা যেন অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য পদক্ষেপ করেন। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ অবশ্য এ ব্যাপারে পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন। |
|
|
|
|
|