|
|
|
|
মোহনপুর |
বাসিন্দাদের দানের জমিতেই কলেজ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়্গপুর |
জমি-জটে যেখানে থমকে যাচ্ছে একের পর এক প্রকল্প, সেখানে স্থানীয় বাসিন্দাদের ব্যতিক্রমী ভূমিকা দেখা গেল পশ্চিম মেদিনীপুরের মোহনপুরে। কলেজ তৈরির জন্য জমি দিলেন ১৭ জন। বৃহস্পতিবার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দানপত্র জমা দিয়ে মোট ৩ একর ২০ ডেসিমেল জমি দিয়েছেন এঁরা। এই পরিমাণ জমিতেই কলেজ গড়া যাবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ৮টি নতুন কলেজ গড়ার কথা বারবারই ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারি খাস জমি ও ব্যক্তিগত দানের জমিতেই কলেজগুলি তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। নারায়ণগড় ও চন্দ্রকোনা-১ ব্লকে এখনও জমি পায়নি প্রশাসন। শালবনিতে একটি কলেজ নির্মাণের কাজ চলায় আর একটি কলেজের জন্য জমি দেওয়ায় আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। তবে দাঁতন-২, কেশিয়াড়ি, গোপীবল্লভপুর-২ ও খড়্গপুর-২ ব্লকে জমি পাওয়ার প্রক্রিয়া প্রায় শেষ। মোহনপুরে কিছুটা দেরিতে হলেও এ দিন সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেল।
মোহনপুর ব্লকে এতদিন কোনও কলেজ ছিল না। উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী পড়ুয়াদের ভরসা বলতে দাঁতন ভট্টর কলেজ অথবা এগরায় সারদা শশীভূষণ কলেজ। সমস্যা সমাধানে চলতি বছর ১৬ জানুয়ারি বেলদার জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খড়্গপুর মহকুমার মোহনপুরে নতুন কলেজ তৈরির কথা ঘোষণা করেন। প্রশাসনিকভাবে জমি পেতে স্থানীয়দের কাছে আবেদন জানানো হয়। প্রথমের দিকে সমস্যা হলেও পরে বেশ কিছু জমি মালিকেরা এগিয়ে আসেন। প্রশাসনিক কর্তারা খাকুড়দা থেকে মোহনপুর যাওয়ার পিচ রাস্তার ধারের শিয়ালসাই গ্রাম পঞ্চায়েতের শ্রীরামপুর মৌজায় জমি বাছাই করেন। গ্রামবাসীদের লিখিত সমর্থন নিয়ে জমি চিহ্নিতকরণের পর মাস দু’য়েক আগে ব্লক থেকে প্রস্তাব পাঠানো হয় জেলা প্রশাসনে। পরে উচ্চশিক্ষা দফতরের আধিকারিকেরা এসে জমি পরিদর্শন করেন। তারপরই জমি রেজিস্ট্রেশনের অনুমতি দেওয়া হয়। জমিদাতা কৃষিজীবী বামনচাঁদ মান্না, হারোচরণ দাস, প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক চতুর্ভূজ মাইতিরা বলেন, “আমরা সবসময় চেয়েছি এলাকায় কলেজ হোক। ছেলেমেয়েদের উচ্চশিক্ষার স্বার্থে আমরা ১৬ ডেসিমেল থেকে ১ একর পর্যন্ত জমি দিয়েছি। আমরা চাই দ্রুত কলেজ তৈরি হোক।”
ঠিক হয়েছে, কলেজের নাম হবে মোহনপুর বিবেকানন্দ সার্ধ শতবার্ষিকী মহাবিদ্যালয়। এ জন্য সর্বনিম্ন ৩ থেকে সর্ব্বোচ্চ ৫ একর জমি প্রয়োজন বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। ইতিমধ্যে ৩০ জন জমিদাতা এগিয়ে আসায় জমির পরিমাণ সর্ব্বোচ্চ লক্ষ্যমাত্রাকে ছাপিয়ে যাবে বলে আশাবাদী বিডিও সুলোককুমার প্রামাণিক। তিনি বলেন, “জমি পেতে বেশি বেগ পেতে হয়নি। এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের চাহিদা এই কলেজ। এখনই ৩ একর ২০ ডেসিমেল জমি পাওয়া গিয়েছে। প্রাপ্ত জমি ৫ একর ছাড়িয়ে যাবে বলে আমি আশাবাদী। গ্রামবাসীদের এই উদ্যোগ ইতিবাচক।” শিগগিরি কলেজের শিলান্যাস হবে বলে জানা গিয়েছে। ব্লক তৃনমূল সভাপতি প্রদীপ পাত্র বলেন, “সেপ্টেম্বরের শেষে মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরে আসবেন। তখনই কলেজের শিলান্যাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।” |
|
|
|
|
|