আজ, শুক্রবার সিঙ্গুরে জেলার উন্নয়ন নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করতে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই উপলক্ষে গত পাঁচ দিনে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে মোট দু’লক্ষ ২৪ হাজার ৬২৭টি শ্রমদিবস তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার জেলাশাসক মনমীত নন্দা দাবি করলেন, লক্ষ্যমাত্রার ৯৫ শতাংশ কাজ হয়ে গিয়েছে। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে প্রশাসনেরই একটি অংশ।
বর্ষা নেমে যাওয়ায় জুন মাসের শেষ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের ‘মন্দা মরসুম’ হিসেবেই চিহ্নিত। পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, এই সময়ে ওই প্রকল্পে মূলত নিকাশি নালা সংস্কার, বনসৃজন এবং গ্রামীণ রাস্তা সংস্কারের কাজ চলে। গত ১৩ সেপ্টেম্বর হুগলির অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) তথা ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে জেলার অতিরিক্ত কো-অর্ডিনেটর মুক্তা আর্যের তরফে ব্লক প্রশাসনগুলির কাছে পাঠানো নির্দেশে বলা হয় ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে ১৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ওই প্রকল্পে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হবে। এই নির্দেশে দিশাহারা হয়ে পড়ে ব্লক প্রশাসনগুলি। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৩ সেপ্টেম্বর অব্দি এই আর্থিক বছরে জেলায় মোট শ্রমদিবস তৈরি হয়েছে ১৮ লক্ষ ৭৫ হাজার ৩৭৩টি। মুখ্যমন্ত্রী আসার আগে জেলা প্রশাসন চাইছিল অন্তত ২১ লক্ষ শ্রমদিবস তৈরির কৃতিত্ব অর্জন করতে। যাতে এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কোনও প্রশ্ন তুললে সন্তোষজনক উত্তর পান।
বৃহস্পতিবার জেলাশাসক বলেন, “একশো দিনের কাজে পাঁচ দিনের জন্য যে লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল, তার ৯৫ শতাংশই হয়ে গিয়েছে।” কিন্তু প্রশাসনেরই একটি অংশ দাবি করেছে, পরিসংখ্যানে অনেক অনিয়ম বা ফাঁকফোকর রয়েছে। কাজের মানও আশানুরূপ নয়। যা শুনে জেলাশাসক বলেন, “কোনও গরমিল হলে তা অডিটে ধরা পড়বে। তখন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
প্রশাসনের কর্তাদের কয়েক জন জানিয়েছেন, বর্ষার আগেই যে সব জায়গায় নিকাশি নালা এবং গ্রামীণ রাস্তা সংস্কারের কাজ একবার হয়েছে, লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য ফের সেই সব এলাকার অনেক জায়গাতেই আরও একবার একই কাজ করতে হয়েছে। যেখানে একটি নিকাশি নালা পরিষ্কার করতে ১০ জন লাগে, সেখানে ১০০ জন শ্রমিককে কাজে লাগিয়ে শ্রমদিবসের লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি পৌঁছনোর চেষ্টা হয়েছে। জেলার ১৮টি ব্লকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয় আরামবাগ ব্লককে। তাদের পাঁচ দিনে ১৫টি পঞ্চায়েত এলাকায় শ্রমদিবস তৈরি করার লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল ৪৩ হাজার ২১৫টি। ব্লক প্রশাসনের দাবি, ৯০ শতাংশেরও বেশি কাজ হয়েছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) মুক্তা আর্য অবশ্য জানিয়েছেন, ব্লকগুলিকে লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হলেও প্রশাসনের কাছে জেলায় সামগ্রিক ভাবে এই পাঁচ দিনে কতটা কাজ হল, সেটাই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সে ক্ষেত্রে কোনও ব্লক লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম বা বেশি কাজ করতেই পারে। পঞ্চায়েতগুলিতে প্রচুর কাজের চাহিদা রয়েছে।
|