ঘড়িতে তখন রাত সাড়ে আটটা। বন্ধুকে নিয়ে মেরিলবোনে আইভোর প্লেসের রাস্তায় হাঁটতে বেরিয়েছিলেন টনি ব্লেয়ারের মেয়ে ক্যাথরিন। সঙ্গে ছিল পোষ্য সারমেয়টিও।
হঠাৎই বন্দুকধারী দুই যুবকের আবির্ভাব। পথ আটকে দাঁড়ায় তারা। সঙ্গে থাকা টাকা-পয়সা, গয়নাগাঁটি সব কিছু দিয়ে দিতে বলে। হকচকিয়ে গিয়েছিলেন ক্যাথরিন। ভয়ও পেয়েছিলেন খানিকটা। কিন্তু কোনও কিছু বুঝে ওঠার আগে ডাকাতেরা খালি হাতেই চম্পট দেয়। এতে আরও হতবাক ক্যাথরিন।
বছর উনত্রিশের ক্যাথরিন পেশায় ব্যারিস্টার। থাকেন বাবা প্রাক্তন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের দেওয়া মেরিলবোনের বাড়িতে। সদ্য বাকিংহামশায়ার থেকে ফিরেছিলেন। গত সপ্তাহেই দাদার বিয়ে ছিল। বাবা-মায়ের সঙ্গে সেখানে গিয়েছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার রাতে ক্যাথরিন ওঁর বন্ধুর সঙ্গে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন। হঠাৎই দুই যুবক বন্দুক হাতে এগিয়ে আসে। বলে, “যা কিছু দামি জিনিস সঙ্গে আছে, এখনই দিয়ে দাও।” পুলিশের এক কর্তা আরও জানিয়েছেন, মেরিলবোনে সচরাচর এই ধরনের ঘটনা ঘটে না। তবে সে দিন রাতেই এ রকম আরও একটি ঘটনা ঘটেছে। মাত্র আধ ঘণ্টার ব্যবধানে। বন্দুকবাজের কবলে পড়েছিলেন আরও এক দম্পতি। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তবে এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। |
প্রশ্ন উঠছে দেশের নিরাপত্তা নিয়েও। উত্তর খুঁজে পাচ্ছেন না তদন্তকারী অফিসাররা। তবে তাঁদের যুক্তি, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে হয়ে নিরাপত্তারক্ষী ছাড়া ক্যাথরিনের বাইরে বেরনো উচিত হয়নি। এমন আশঙ্কাও দানা বাঁধছে, এ বার হয়তো বন্দুকবাজদের নিশানা হবেন স্বয়ং টনি ব্লেয়ার। কারণ, পশ্চিম এশিয়ার শান্তিদূত টনি ব্লেয়ারই ২০০৩ সালে ইরাকে সেনা পাঠিয়েছিলেন। আমেরিকার সঙ্গে অংশ নিয়েছিলেন যুদ্ধে। সে নিয়ে এখনও অনেকেরই বিদ্বেষ রয়েছে।
সংবাদমাধ্যমকে ক্যাথরিন পরে বলেন, “তিন বছর হয়ে গেল আমি এখানে আছি। কোনও দিনও কারও সঙ্গে এই ধরনের ঘটনা ঘটতে দেখিনি। প্রথমে খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। বন্দুক দেখালে কে না ভয় পায়! কিন্তু ওরা কিছু না নিয়েই কেন চলে গেল সেটা বুঝলাম না।”
ঘটনা জানাজানির পর ক্যাথরিনের এক প্রতিবেশীর বক্তব্য, “আমার সঙ্গে এ রকম হলে জানি না কী করতাম। সত্যি বলতে গেলে আমি তো ভাবতাম জঙ্গিহানা। ক্যাথরিন যে খুব সাহসী মেয়ে, তা মানতেই হবে।” প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে হয়েও ক্যাথরিনকে এ ভাবে ডাকাতের হাতে হেনস্থা হতে হয়েছে ভেবে অবাক খোদ টনি ব্লেয়ারও। তবে দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর আস্থা হারাননি তিনি। সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, “ক্যাথরিন বন্ধুর সঙ্গে বেড়াতে বেরিয়েছিল। তখনই ঘটনাটি ঘটে। কারওই কোনও ক্ষতি হয়নি। কিছু চুরিও যায়নি। আশা করি পুলিশ দোষীদের খুব তাড়াতাড়ি গ্রেফতার করতে পারবে।” |