|
|
|
|
কয়লা-বালির কারবার বন্ধের নির্দেশ মমতার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
অবৈধ কয়লার কারবার কমেছে ঠিকই। কিন্তু তা এখনও বন্ধ হয়নি। অবিলম্বে তা করে ফেলতে হবে। বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের পুলিশ আধিকারিকদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ জানিয়ে দেন, কয়লার চোরা কারবার কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। পাশাপাশি বৈঠকে অবৈধ বালি খাদান নিয়েও সরব হন মুখ্যমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার অন্ডালে বিমাননগরী থেকে ফিরে দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারে সৃজনী প্রেক্ষাগৃহে প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠক চলে প্রায় ঘন্টা দুয়েক। রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীদের সঙ্গে হাজির ছিলেন সেই সব দফতরের সচিবরাও। ছিলেন মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্রও। এ ছাড়াও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের আধিকারিকরা, বিধায়ক, জেলা পরিষদের সদ্য নির্বাচিত সদস্যরাও। প্রশাসনের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী কয়লার চোরাচালান একেবারে বন্ধ করার নির্দেশ দেন। তিনি জানান, অবৈধ কয়লার কারবার কমিশনারেট গঠনের পরে অনেকটাই কমেছে। কিন্তু তা এখনও বন্ধ হয়নি। যেভাবে হোক কয়লার বেআইনি কারবার বন্ধ করতেই হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বর্ধমানের দুই বড় নদ অজয় ও দামোদরে যেভাবে অবৈধ বালির কারবার চলছে তাও বন্ধের নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকদের। বালির অবৈধ কারবার রোধ করা গেলে রাজ্য সরকারের ঘরে রাজস্বের পরিমাণ বাড়বে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে অবৈধ বালির কারবারের রমরমা আগের থেকে অনেকটাই বেড়েছে। রাজ্য সরকারের নজর অবৈধ কয়লার দিকে কেন্দ্রীভূত হওয়ার সুযোগে বালি মাফিয়ারা কারবার বাড়িয়েছে। কিন্তু এদিনের বৈঠকের পরে তাদের কারবারের রমরমা যে এবার প্রশ্নের মুখে তা জানিয়েছেন প্রশাসনের এক আধিকারিক। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বলে দিয়েছেন যত দ্রুত সম্ভব ব্যবস্থা নিতে হবে।” তিনি জানান, এ দিনের বৈঠকে জেলার বিভিন্ন রাস্তাঘাটের বেহাল দশা ঘোচাতে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রশাসনিক বৈঠক সেরে এদিন তিনি যান পানাগড়ে। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা তুলে দেন স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতে। পরে জনসভায় তিনি জানান, মেমারি, কাটোয়া, কালনা ও দুর্গাপুরে নায্য মূল্যের ওষুধের দোকান গড়ে তোলা হবে। জেলায় ২৪টি নবজাতকদের জন্য বিশেষ ক্লিনিক গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। ডিসেম্বর মাসের মধ্যে জেলার একশো শতাংশ বিপিএল পরিবারকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আরও জানান, পানাগড় শিল্পতালুকে ইতিমধ্যেই ১২ হাজার কোটি টাকা লগ্নি এসেছে। দুর্গাপুরের দ্বিতীয় পর্যায়ের ক্ষুদ্রশিল্প তালুকে প্রায় ৪৬ হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ গড়ে উঠবে বলে জানান তিনি। মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, বর্ধমানের শক্তিগড়ে ক্ষুদ্রশিল্প হাব গড়ে তোলা হবে।
লোকশিল্পীদের জন্য সরকার বিশেষ ভাতা দেওয়ার বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এর বাইরেও আপনারা সরকারের বিভিন্ন কাজের প্রচার করবেন। তা থেকেও আয় হবে আপনাদের।” আশা কর্মীদের ভাতা পুজোর মাস থেকে ১৩০০ থেকে বাড়িয়ে দেড় হাজার করা এবং মিড ডে মিলের কর্মী যাঁরা একই সঙ্গে রান্না ও সহকারীর ভূমিকা পালন করেন তাঁদের ভাতা এক হাজার থেকে বাড়িয়ে দেড় হাজার টাকা করার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। |
|
|
|
|
|