নিজস্ব সংবাদদাতা • রায়গঞ্জ |
উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারের ডক্টর মেঘনাদ সাহা কলেজের অধ্যক্ষা সহ তিন জনকে নিগ্রহের ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূল কংগ্রেস নেতা গৌতম পাল ও তাঁর স্ত্রীর আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দিল রায়গঞ্জের জেলা ও দায়রা আদালত। বুধবার জেলা ও দায়রা বিচারক অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই নির্দেশ দেন। এদিন আইনজীবী আশিস সরকার ওই দুজনের আগাম জামিনের আর্জি জানান। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, মামলাটি প্রাথমিক তদন্তের পর্যায়ে থাকায় বিচারক গৌতমবাবু ও তাঁর স্ত্রীর আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন। গৌতমবাবু ও তাঁর স্ত্রীকে আগাম জামিন দেওয়া হলে সমাজে নানা সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে বলেও আদালত আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
এ দিন গৌতমবাবুদের আইনজীবী আদালতে দাবি করেন, “এফআইআরে শ্লীলতাহানির চেষ্টা ও মোবাইল পড়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। চুরি সহ ভিত্তিহীন অভিযোগে পুলিশ মামলা করেছে।” সরকারি আইনজীবী শেখর পাল বলেন, “কেস ডায়েরির তথ্য, নিগৃহীতদের জবানবন্দি, মেডিক্যাল রিপোর্টের গুরুত্ব বুঝে আদালতে আগাম জামিন আবেদনের বিরোধিতা করি। সেই সঙ্গে সরকারি কর্মীদের বাধা দেওয়ার অভিযোগে গৌতমবাবু সহ বাকি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশ জামিন অযোগ্য ৩৫৩ ধারা কেনও প্রয়োগ করল না তা নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তুলব।” সরকারি আইনজীবী মনে করেন, গৌতমবাবু ও তাঁর স্ত্রীর আগাম জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ায় পুলিশ তাঁদের দুজনকে গ্রেফতার করতেই পারে। এ দিন দুপুরে আদালত চত্বরে গৌতমবাবু ও তাঁর অনুগামীদের দেখা গেলেও বিচারক জামিনের আবেদন খারিজ করে দেওয়ার আগেই তাঁরা চলে যান। জেলা পুলিশ সুপার অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, “গৌতমবাবু ও তাঁর স্ত্রীর আগাম জামিনের আবেদনের বিষয়ে কিছু জানা নেই। তদন্তে ওই মামলার যে সমস্ত অভিযুক্ত দোষী প্রমাণিত হবেন তাঁদের ধরা হবে।” ২৭ অগস্ট প্রথম বর্ষের ছাত্রী গৌতমবাবুর স্ত্রী পরীক্ষায় নকল করছিলেন। তাতে বাধা দেওয়া অধ্যক্ষা সহ তিনজনকে মারধরের অভিযোগ আছে গৌতমবাবু ও তাঁর স্ত্রী সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। তৃণমূল নেতার দুই অনুগামী গ্রেফতার হন। তবে গৌতমবাবুর অভিযোগ, “মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারি এড়াতেই আগাম জামিনের আবেদন করেছিলাম। আমাকে গ্রেফতার করতে হলে আমার স্ত্রী-র শ্লীলতাহানিতে অভিযুক্ত স্বপ্না দেবীসহ অভিযুক্ত তিন শিক্ষকশিক্ষিকা ও ওই শিক্ষাকর্মীকে গ্রেফতার করতে হবে” স্বপ্নাদেবীর পাল্টা হুঁশিয়ারি, “মিথ্যা মামলায় শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীকে ধরা হলে জেলার সমস্ত কলেজের শিক্ষক শিক্ষিকারা অনির্দিষ্ট কালের কর্মবিরতি শুরু করবেন।”
|