খানাখন্দে ভরা ৩১ ডি জাতীয় সড়ক |
টালবাহানায় মাঝপথেই কাজ থমকে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি |
শিলিগুড়ি থেকে জলপাইগুড়ি হয়ে ধূপগুড়ি পর্যন্ত ৩১-ডি জাতীয় সড়কের সংস্কারের কাজে ঢিলেমির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, রাজ্য সরকারের বরাদ্দ ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে শুরু হওয়া সড়ক সংস্কারের কাজ মাঝপথে থমকে গিয়েছে। তেমনই প্রায় তিন মাস হতে চললেও কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অনুমোদন করা ১০৫ কোটি টাকার বরাদ্দ রাজ্যর কাছে পৌঁছায়নি। এই দুইয়ের জাঁতাকলে শিলিগুড়ি থেকে ধূপগুড়ি পর্যন্ত জাতীয় সড়কের হাল ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ।
গত জুলাই মাসে ৩১-ডি জাতীয় সড়কের প্রায় ৫৯ কিলোমিটার অংশ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব কেন্দ্রের থেকে রাজ্য সরকারের পূর্ত দফতরের হাতে যাওয়ার পরে প্রায় ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। ৫৯ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু করে পূর্ত দফতর। বাস মালিক সংগঠন এবং নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি প্রায় ৪৫ কিলোমিটার সড়কের বেশির ভাগ অংশেই মেরামতির কাজ হয়নি। সড়কের বড় গর্তে যানবাহনের চাকা পড়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা লেগেই রয়েছে। জলপাইগুড়ি থেকে ধূপগুড়ি পর্যন্ত সড়কে রাস্তার কিছু অংশে গত জুলাই মাসে টেন্ডারের প্রায় এক মাসেরও বেশি সময় পরে সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ। ওই সময়ের মধ্যে বৃষ্টির কারণে জাতীয় সড়কে গর্তের সংখ্যা বেড়ে যায়। পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, সংস্কারের যে পরিকল্পনা পূর্ত দফতর তৈরি করেছিল, কার্যক্ষেত্রে দেখা যায়, তার থেকে অন্তত দ্বিগুন পরিমাণ বেশি কাজ করতে হবে। নতুন করে পরিকল্পনা না করে পুরোনো নির্দেশ মতই রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হওয়ায় সড়কে যাতায়াতের দুর্ভোগ বেড়ে চলেছে বলে অভিযোগ।
ঢিলেমি বা কাজ শুরু না করার মতো অভিযোগ উঠলেও পূর্ত দফতর থেকে কোনও ঠিকাদারই সংস্থার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা না নেওয়ায় সংস্কারের কাজে গতি আসেনি বলে অভিযোগ। পূর্ত দফতরের জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের নির্বাহী বাস্তুকার নির্মল মণ্ডল বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আজ, বৃহস্পতিবার দিল্লিতে বৈঠক রয়েছে। তবে কেন্দ্রের টাকাটা না পাওয়ায় সমস্যা হয়েছে। বর্ষার কারণে কিছু জায়গায় সংস্কার কাজ শুরু করা যায়নি। আশা করছি, দুই সপ্তাহে পরিস্থিতি বদলে যাবে।”
পূর্ত দফতরের দাবি, গত জুলাই মাসে ৫ কোটি টাকা দিয়ে সংস্কারের কাজ শুরু হলেও একমাসের মধ্যেই সড়ক সংস্কারের জন্য কেন্দ্রীয় বরাদ্দের ১০৫ কোটি টাকা মঞ্জুর হওয়ার কথা ছিল। সেই টাকা বরাদ্দ না হওয়াতে সংস্কারের কাজ মাঝপথেই থেমে গিয়েছে। রাস্তা নিয়ে চলছে রাজনৈতিক নেতাদের চাপানউতোরও। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “কেন্দ্র সরকারের ১০৬ কোটি টাকা জাতীয় সড়ক সংস্কারের জন্য দেওয়ার কথা ছিল। তা কেন্দ্র দেয়নি। রাজ্য ৫ কোটি টাকা দিয়ে কাজ শুরু করেছে। বর্ষার কারণে সে কাজ কিছুটা হলেও বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। কেন্দ্র সরকার টাকা না দিলে আমরা আন্দোলন শুরু করব।” অন্যদিকে প্রদেশ কংগ্রেস নেতা তথা আলিপুরদুয়ারের কংগ্রেস বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায় বলেন, “কেন্দ্রীয় সড়ক মন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। দু-একদিনের মধ্যেই কেন্দ্রের বরাদ্দ চলে আসবে। তবে মহাসড়ক তৈরি না হলে এই সমস্যা মিটবে না। তাই রাজ্য জমি অধিগ্রহণ করুক। তবেই স্থায়ী সমাধান সম্ভব।”
|