দল-ছাড়া নেতার ভূমিকায় ক্ষোভ মহিলা চা শ্রমিকদের |
সদ্য তৃণমূলে যোগদানকারী নেতা অলোক চক্রবর্তীর ভূমিকা নিয়ে সরব হলেন মহিলা চা শ্রমিকদের একাংশ। বুধবার শিলিগুড়িতে মিত্র সম্মিলনী হলে ইনটাক অনুমোদিত মহিলা চা শ্রমিক সংগঠনের প্রথম সম্মেলনের প্রতিনিধিদের অনেকেই অলোকবাবুর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলেন। ওই প্রতিনিধির একাংশের অভিযোগ, বহু বার বলা সত্ত্বেও তরাইয়ের অধিকাংশ চা বাগানে মহিলা চা শ্রমিকদের জন্য পৃথক শৌচাগারের ব্যবস্থা করাতে উদ্যোগী হননি অলোক। মাতৃত্বকালীন ছুটি ছাড়াও মহিলারা শিশুদের দেখার জন্য যাতে বাড়তি সুবিধা পান, সেই ব্যবস্থাও করাতে পারেননি অলোকবাবু। অলোকবাবুর বিরুদ্ধে বাগানে-বাগানে শুধু গাড়ি নিয়ে ঘুরে দিনের পর দিন আশ্বাস দিয়ে দায়িত্ব সারার অভিযোগও করেন মহিলা শ্রমিকদের কয়েকজন। |
সম্প্রতি কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন অলোকবাবু। তিনি ইনটাক অনুমোদিত চা শ্রমিক সংগঠনের নেতা ছিলেন। দীর্ঘদিন দার্জিলিং জেলা ইনটাকের সভাপতি পদে ছিলেন তিনি। দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস (সমতল) সভাপতি শঙ্কর মালাকারের সঙ্গে তাঁর কিছু দিন ধরেই নানা কারণে বিরোধ চলছিল। উপরন্তু, এসজেডি-এর দুর্নীতি কান্ডের বিষয়ে জানতে দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর মালাকারকে পুলিশ ডাকার পর অলোকবাবু ‘স্বচ্ছ রাজনীতির’ দাবিতে সরব হন। তা নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরে কোন্দল বেড়ে যায়। এর পরে অলোকবাবু কলকাতায় গিয়ে তৃণমূলে যোগ দেন। তাঁর হাতে চা শ্রমিক সংগঠনের তরাই ও উত্তর দিনাজপুরের দায়িত্ব দেন মুকুলবাবু।
এদিন অলোকবাবু বলেন, “তরাই ও উত্তর দিনাজপুরের বিস্তীর্ণ এলাকার চা শ্রমিক সংগঠনের মহিলাদের বেশি মাত্রায় অংশগ্রহণ করানোর উপরে বরাবরই জোর দিয়েছি। মহিলারা যাঁতে নিজের সমস্যা নিয়ে সোচ্চার হতে পারেন, সেটা বাগানে-বাগানে গিয়ে শিখিয়েছি। তাই ওঁরা এখন অধিকার আদায়ের কথা বলতে পারেন।” তিনি বলেন, “আগে দলের তরফে প্রতি পদে নানা ধরনের বাধা পেতাম। দলের অনেকে কায়েমি স্বার্থে শ্রমিকদের দাবি আদায়ে তৎপর ছিলেন না। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব পাশে থাকায় সে সব কাজ সহজ হয়ে যাচ্ছে।”
যদিও চা শ্রমিকদের উন্নয়নের জন্য নির্বাচনের আগে তৃণমূল যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা কী রূপায়ণ হয়েছে সে প্রশ্ন তুলে ইনটাক নেতা কনক দেবনাথ বলেন, “নির্বাচনী ইস্তাহারে বাগানের শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি, চিকিৎসার জন্য ব্যবস্থা, রেশন ইত্যাদি সুযোগ সুবিধে দেওয়া হবে। কিন্তু কোনওটিই হয়নি।” জেলা কংগ্রেস সভাপতি (সমতল) শঙ্কর মালাকার বলেছেন, “অলোকবাবু কংগ্রেস দলীয় দফতর দখল করেছেন। আমরা অভিযান করব।” অলোকবাবুর প্রতিক্রিয়া, “শঙ্করবাবু দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযানে নামেন কি না তা দেখব।”
|