নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
বারাসতের কামদুনিতে কলেজছাত্রীকে গণধর্ষণ করে খুনের ঘটনার পরে তিন মাসেরও বেশি সময় কেটে গিয়েছে। এত দিনে শুরু হল এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব। নিহত নির্যাতিতার ভাই বুধবার দুপুরে কলকাতার জেলা ও দায়রা আদালতে (বিচার ভবন) সাক্ষ্য দেন। তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন বিচারক সঞ্চিতা সরকার। প্রকাশ্যে বিচার চালাতে অভিযুক্তদের আবেদন খারিজ করে তিনি জানান, পুরো প্রক্রিয়াই চলবে গোপনে।
ওই ধর্ষণ-খুনের ঘটনা ঘটে ৭ জুন। তার পরে পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্যাতিতার বাড়ি গিয়ে আশ্বাস দিয়েছিলেন, এক মাসের মধ্যেই দোষীদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করবে রাজ্য সরকার। কিন্তু চার্জ গঠন করতেই কেটে যায় তিন মাস। ১০ সেপ্টেম্বর চার্জ গঠন হয়। দিল্লিতে চলন্ত বাসে ধর্ষণ করে হত্যার মামলায় ন’মাস ২৮ দিনের মাথায় বিচার শেষ করে সাজা ঘোষণা করেছিল আদালত। কামদুনির ক্ষেত্রেও তাড়াতাড়ি দোষীদের চরম শাস্তির দাবিতে আন্দোলন হচ্ছে।
বারাসত আদালতে ওই মামলার বিচার পর্ব শুরু হয়েছিল। ধৃত আট অভিযুক্তের বিরুদ্ধে সেখানে বিক্ষোভ দেখান নিহত ছাত্রীর আত্মীয়স্বজন-সহ স্থানীয় বাসিন্দারা। অভিযুক্তদের তরফে নিরাপত্তার অভাবের কথা জানানোর পরে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে মামলাটি সরিয়ে আনা হয় মহানগরে। মামলাটি বারাসত আদালতে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য নিহত নিগৃহীতার স্বজন, অন্যান্য কামদুনিবাসী এবং সাক্ষীদের আবেদন সুপ্রিম কোর্টে খারিজ হয়ে যায়।
তার পরে এ দিন কলকাতার জেলা ও দায়রা আদালতেই সাক্ষ্য নেওয়ার কাজ শুরু হয়। আট অভিযুক্তের আইনজীবীরা বিচারকের কাছে আবেদন জানান, ‘ইন ক্যামেরা’ বা গোপনে নয়, আদালতে ‘অন ক্যামেরা’ বা সর্বসমক্ষে বিচারের কাজ হোক। তাঁদের আরও আবেদন ছিল, বিচারের পুরো প্রক্রিয়াই তুলে রাখা হোক ভিডিও-য়। এ দিন সাক্ষ্যগ্রহণের আগে বিচারক দু’টি আবেদনই খারিজ করে দেন। ভিডিওগ্রাফির আবেদন খারিজ করা হয় পরিকাঠামো না-থাকায়। বিচারক নির্দেশ দেন, বিচার পর্ব চলবে গোপনেই। আদালতের অনুমতি নিয়ে এই বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা যেতে পারে।
অভিযুক্ত সইফুল আলি, আনসার আলি, শেখ এমানুল ইসলাম, আমিনুর ইসলাম, ভোলা নস্কর, গোপাল নস্কর, আমিন আলি ও নুর আলিকে এ দিন আদালতে তোলা হয়েছিল। তবে সরকারি আইনজীবীরা অভিযুক্তদের কোনও প্রশ্ন করেননি।
নিহত নিগৃহীতার পরিবারের আইনজীবী এ দিন বিচারকের কাছে আবেদন জানান, ওই ছাত্রীর মা-বাবা দু’জনেই অসুস্থ। নির্যাতিতার কাকা এবং এই মামলার মূল সাক্ষী সম্প্রতি মারা গিয়েছেন। তাঁর শ্রাদ্ধানুষ্ঠান বাকি রয়েছে। তাই বিচারক যেন পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ পিছিয়ে দেন। বিচারক সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন ২৭ সেপ্টেম্বর।
|