বঙ্গ ক্রিকেটের রোগ সারাতে সৌরভের ডজন-দাওয়াই
বাংলার হয়ে রঞ্জি জিতেছেন তিনি। বাংলাকে অবনমনের হাত থেকে বাঁচাতে ত্রাতার ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল তাঁকে। এ বার বঙ্গ ক্রিকেটের হাল ফেরাতে আসরে নামলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। নামলেন তাঁর এক ডজন দাওয়াই নিয়ে। বুধবার সিএবি-তে বাংলার বিভিন্ন স্তরের কোচ, ট্রেনার, ফিজিওদের সঙ্গে বৈঠক করলেন সৌরভ। ছিলেন সিএবি প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়া-সহ একাধিক কর্তা। বৈঠক শুরুর তিন দিন আগেই নিজের ‘প্রেসক্রিপশন’ ই-মেল করে সবার কাছে পাঠিয়ে দেন সৌরভ।
এক ঘণ্টার বৈঠকে যেমন নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলেন সৌরভ, তেমন কোচদের সুবিধা-অসুবিধার কথাও জিজ্ঞাসা করেন। নভজ্যোৎ সিংহ সিধুর ফোনে হরভজন সিংহের খোঁজ পেয়ে কী ভাবে তাঁকে ভারতীয় দলে নিয়েছিলেন, সে কথা জানান তিনি। বলেন, “কোন প্লেয়ারকে কী ভাবে পাওয়া যাবে, তা কেউ বলতে পারে না। অনূর্ধ্ব ১৯-এর একটা ছেলের যদি রঞ্জি স্তরে খেলার ক্ষমতা ও প্রতিভা থাকে, তা হলে তাকে রঞ্জি ট্রফিতে খেলাতে আপত্তি কোথায়? তার প্রতি যাতে কোনও অবিচার না হয়, তা কোচদেরই দেখতে হবে।” বৈঠক থেকে বেরিয়ে সৌরভ বললেন, “যোগ্য কোচেরা দায়িত্বে আছেন। আমি অযথা তাঁদের কাজে নাক গলাতে চাই না। আজ যা আলোচনা হল, সে ভাবে কাজ হলে বোধহয় বাংলার ক্রিকেটে উন্নতি হবে।”
অশোক মলহোত্রদের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দিতে সিএবি-তে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।
সৌরভ আরও জোর দিয়েছেন কোচ, ফিজিও, ট্রেনার, ম্যানেজারের মধ্যে সঠিক কো-অর্ডিনেশনের উপর। ক্রিকেটারদের কঠোর শৃঙ্খলা এবং নিয়মানুবর্তিতার উপরও। বাংলার কোচ অশোক মলহোত্র, অনূর্ধ্ব ২৫ কোচ জয়দীপ মুখোপাধ্যায় এবং অনূর্ধ্ব ১৯ কোচ গৌতম সোমদের (জুনিয়র) সঙ্গে আলোচনায় বার বার উঠে এসেছে সাপ্লাই লাইনের কথা। প্রধান সমস্যাটা যে সাপ্লাই লাইনে, তা বুঝিয়ে সৌরভ রাজ্যের প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান, পেসার ও স্পিনারদের নিয়ে আলাদা তিনটি ২০ জনের পুল তৈরি করতে বলেছেন। এই ক্রিকেটারদের সারা বছর ধরে ক্রিকেটের মধ্যে রাখতেই হবে, এমনই পরামর্শ সৌরভের। বছরে অন্তত ৩০ দিন বাইরে থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের এনে পুলের ক্রিকেটারদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রস্তাবও দেন সৌরভ। যাঁরা বাংলা দলে সুযোগ পাচ্ছেন না, তাঁদের জন্য দু’টি দ্বিতীয় ডিভিশন ও একটি প্রথম ডিভিশন ক্লাবের হয়ে খেলার সুযোগ করে দেওয়ার কথাও বলেন। ঠিক হয়েছে, রঞ্জিতে প্রতি দুই ম্যাচ অন্তর কোচকে নিয়ে বৈঠকে বসবে কোচেস কমিটি। অশোকের সঙ্গে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তাতে মলহোত্রও খুশি। বলেন, “বাংলার ক্রিকেটের ভালর জন্য সবাই মিলে এ ভাবেই কাজ করা দরকার।” অশোক তাঁর দল নিয়ে অখুশি নন। তবে আরও কিছু নেট বোলার চেয়েছেন সিএবি-র কাছে। অশোক এ দিন এক সপ্তাহের জন্য দিল্লি চলে গেলেন। বাংলার প্র্যাক্টিসের দায়িত্ব দিয়ে গেলেন লক্ষ্মীরতন শুক্লকে।

‘দাদা’র প্রেসক্রিপশন
বাংলা দলের কোচ, ট্রেনার, ফিজিও ও ম্যানেজারের ১২ মাসের চুক্তি প্রয়োজন।
ক্যাপ্টেন ও কোচদের বৈঠক প্রয়োজন খুব তাড়াতাড়ি।
মাসে একবার ক্রিকেটারদের ফিটনেস রিপোর্ট দিতে হবে ট্রেনারকে।
ভবিষ্যতে পেসার ও স্পিনারদের কোচ প্রয়োজন।
২০ জন করে ব্যাটসম্যান, পেসার ও স্পিনার নিয়ে তিনটি পুল তৈরি করতে হবে। প্রতিটির বাজেট ২৫ লক্ষ টাকা।
২০ দিন অন্তর কোচ, ট্রেনার, সৌরভ, সচিব বৈঠক প্রয়োজন।
দল বাছাইয়ে কোচ, ক্যাপ্টেনের মতামত নিয়মিত নিতে হবে।
ট্রেনারকে পূর্ণ স্বাধীনতা ও ক্ষমতা দিতে হবে।
ঘাসে ভরা প্র্যাক্টিস-পিচ প্রয়োজন।
দলের প্রয়োজন অনুযায়ী কোচ ও ক্যাপ্টেনের সঙ্গে আলোচনা করে ঘরের মাঠের কিউরেটরকে উইকেট তৈরি করতে হবে পুরো পয়েন্ট পাওয়ার উদ্দেশ্যে। পাটা নয়, সজীব উইকেট চাই।
ঘরোয়া মরসুমের সঙ্গে স্থানীয় ক্লাব মরসুমও চলা প্রয়োজন, যাতে বাংলা দলের আন্ডারপারফরমাররা ক্লাব ম্যাচে খেলে ফর্মে ফেরে।
অফ ফর্মের ক্রিকেটারকে ফর্মে ফেরাতে সঠিক পরিকল্পনা দরকার।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.