বার্ষিক নির্বাচন-পর্ব মিটেছে বেশ কিছু দিন। ময়দানের দলবদল শেষ। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন কোচ কমিটির প্রথম বৈঠক হয়ে গিয়েছে, দ্বিতীয় বৈঠক আজ, বুধবার। কিন্তু বাংলার নির্বাচন কমিটির সরকারি অস্তিত্বের কোনও খোঁজ নেই এখনও।
সিএবি সংবিধান বলে, ময়দানি দলবদল শেষে নির্বাচন কমিটি সরকারি ভাবে আবার গঠিত হয়। অর্থাৎ, ১৫ সেপ্টেম্বরের পর। কিন্তু যা খবর, তাতে চলতি মাসে নতুন নির্বাচন কমিটি গঠন হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে সেটা গিয়ে নাকি ঠেকতে পারে! যা সেপ্টেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহেই সাধারণত হয়ে যায়। এবং যে কারণে নির্বাচকমণ্ডলীর একটা অংশ বিভ্রান্ত বলেও শোনা যাচ্ছে। বাংলার রঞ্জি অভিযান শুরু হয়ে যাচ্ছে আগামী ২৭ অক্টোবর থেকে। সেখানে নির্বাচন কমিটিই যদি ঠিক হয় অক্টোবরের শুরুতে, প্রশ্ন উঠছে তা হলে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর কী হবে? যা কি না অত্যন্ত জরুরি।
উদাহরণ হিসেবে যেমন তুলে আনা হচ্ছে বাংলার অধিনায়কত্ব-জটের সমাধানকে। বলা হচ্ছে, লক্ষ্মীরতন শুক্ল না ঋদ্ধিমান সাহাদু’জনের মধ্যে কাকে শেষ পর্যন্ত অধিনায়ক করা হবে তার কোনও সমাধানসূত্র এখনও পাওয়া যায়নি। ঋদ্ধিমানের সঙ্গে কথাবার্তা বলার দায়িত্ব সিএবি-র পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছিল কোচ অশোক মলহোত্র এবং নির্বাচক কমিটির প্রধান দীপ দাশগুপ্তকে। কিন্তু ঋদ্ধি আবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টি টোয়েন্টি খেলতে চলে গিয়েছেন চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে। এবং তাঁর, ‘বিকল্প দিলে এখনও আমি সাধারণ প্লেয়ার হিসেবে খেলতে চাইব’ জাতীয় কথাবার্তা মিডিয়ায় প্রকাশিত হওয়ার পর নির্বাচকদের গরিষ্ঠ অংশ এখন লক্ষ্মীকে অধিনায়ক করার দিকে ঝুঁকে। পরোক্ষ ভাবে তাঁরা সেটা সিএবি-র উচ্চপদস্থ কর্তাদের বুঝিয়েছেন ঠিকই। কিন্তু জোরালো ভাবে সেটা জানানো যাচ্ছে না যেহেতু সরকারি ভাবে নির্বাচন কমিটির কোনও অস্তিত্ব নেই। অথচ অধিনায়ক বাছাইয়ে নির্বাচন কমিটির একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। আর এত টালবাহানা কেন? সিএবি কর্তাদের কেউ কেউ জানাচ্ছেন, বোর্ড নির্বাচন না মিটলে রঞ্জির ব্যাপারস্যাপার নিয়ে নাকি বসা যাচ্ছে না। ২৯ সেপ্টেম্বর না গেলে কিছু করা যাবে না। কিন্তু পাল্টা আবার প্রশ্ন উঠছে, বোর্ড নির্বাচনের সঙ্গে বাংলার নির্বাচন কমিটি ঠিক করে ফেলা বা অধিনায়ক নির্বাচন কী ভাবে ঝুলে থাকতে পারে? বিশেষ করে যখন নির্বাচকদের সবারই নির্ধারিত মেয়াদ বাকি। বলা হচ্ছে, এর পর কাউকে অধিনায়ক বাছলে তো সে সময়ই পাবে না রঞ্জি নিয়ে নিজস্ব পরিকল্পনা করার।
যা অবস্থা, তাতে সিএবি প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়ার হস্তক্ষেপে দল নির্বাচনে বাংলা নির্বাচকদের দিনের পর দিন ‘ব্রাত্য’ করে রাখার সমস্যা মিটেছে ঠিকই (বাংলার চূড়ান্ত ২৫ বাছা হয়েছে নির্বাচকদের সঙ্গে কথা বলে)। কিন্তু নির্বাচন কমিটির পুনর্গঠন নিয়ে এমন টালবাহানা যে নতুন জটের জন্ম দেবে বোঝা যায়নি।
|