চেন্নাইয়ে নির্বাচনী যুদ্ধের আর সপ্তাহ দেড়েক বাকি। কিন্তু তার আগেই বোর্ড কর্তাদের কাছে সতর্কবার্তা চলে গেল নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন নিয়ে। রীতিমতো চিঠি পাঠিয়ে বোর্ড সদস্যদের বলা হল, আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর চেন্নাইয়ের বোর্ড নির্বাচনে শ্রীনির প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়নপত্র এক কথায় খারিজ করে দিতে! সতকর্বার্তায় এও জানানো হল, শ্রীনির সঙ্গে বৈঠক করলে তাঁরাও ফেঁসে যেতে পারেন।
চিঠির প্রেরকের নাম আন্দাজ করাটা মোটেও শক্ত নয়। বিহার ক্রিকেট সংস্থার সচিব আদিত্য বর্মা।
চিঠিতে আদালতে শ্রীনির হলফনামা সরাসরি তুলে দিয়ে বলা আছে যে, চেন্নাইয়ে গত ২ জুনের বৈঠকে শ্রীনি নিজেই বলেছিলেন যত দিন না তদন্ত কমিশন আইপিএল স্পট ফিক্সিংয়ে অভিযুক্ত গুরুনাথ মইয়াপ্পন নিয়ে নির্দিষ্ট কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছচ্ছে, তত দিন বোর্ডের দৈনন্দিন কাজকর্ম থেকে দূরে থাকবেন তিনি। এবং যত দিন শ্রীনি দূরে থাকবেন, তত দিন বোর্ডের কাজকর্ম দেখবেন জগমোহন ডালমিয়া। চিঠিতে এক সংবাদপত্রের খবরকে উদ্ধৃত করে আরও বলা আছে যে, মইয়াপ্পনের স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকা নিয়ে মুম্বই পুলিশের হাতে জোরালো প্রমাণ আছে। পুলিশের সূত্র অনুযায়ী, টিমের স্ট্র্যাটেজি সংক্রান্ত ব্যাপারস্যাপার প্রথমে পাকিস্তানি আম্পায়ার আসাদ রউফ পাঠাতেন বিন্দু দারা সিংহকে। পরে বিন্দু মারফত সেটা চলে যেত মইয়াপ্পন এবং বিভিন্ন বুকির কাছে। যার ভিত্তিতে বেটিংটা চলত। কয়েক কোটি টাকার বেটিং নাকি করেছিলেন মইয়াপ্পন। যে কারণে তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা আনতে চলেছে মুম্বই পুলিশ।
বোর্ড কর্তাদের আদিত্য পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন যে এই পরিস্থিতিতে শ্রীনিকে প্রেসিডেন্ট পদে আরও এক বছরের মেয়াদ পূর্ণ করতে দেওয়া ঠিক হবে না। বিহার সংস্থার সচিবের আরও বক্তব্য, তাঁর নিযুক্ত তদন্ত কমিশন কী পেয়েছে না পেয়েছে, সেটা মিডিয়ায় বার করে দিয়েছিলেন শ্রীনি নিজে। এটাও চূড়ান্ত হাস্যকর যে, গুরুনাথের বিরুদ্ধে যখন চার্জশিট আনছে মুম্বই পুলিশ তখন বোর্ডের তদন্ত কমিশন তাঁকে ক্লিন চিট দিয়ে দিচ্ছে!
অতএব আদিত্যর চিঠির বয়ানমাফিক শ্রীনিকে প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়ন জমা করতে দেওয়াই বোর্ড সদস্যের আর উচিত নয়। কারণ সরে দাঁড়ানো বোর্ড প্রেসিডেন্ট ‘কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্টে’ জড়িয়ে। তা ছাড়া, বম্বে হাইকোর্টের রায় মানলে শ্রীনি কোনও ভাবেই বোর্ড প্রেসিডেন্টের মসনদে ফিরতে পারেন না। এমন একজন প্রেসিডেন্টকে কী ভাবে আর রাখতে পারে বোর্ড? কী ভাবেই বা বোর্ডের কোনও কোনও কর্তা বৈঠক করতে পারেন আলাদা করে? সব কিছুই যে ভারতীয় ক্রিকেট স্বার্থের পরিপন্থী। এখন দেখার, আদিত্যর নতুন এই পত্র-বোমায় আগামী কয়েক দিনে বোর্ড সদস্যদের স্টান্স নাটকীয় দিকে মোড় নেয় কি না।
|