বাহাত্তর বছর আগের স্মৃতি ফিরিয়ে আনা রোম্যান্টিসিজম আর কাপ জেতার জেদ। ডুরান্ড ফাইনালে নামার আগে আবেগ আর প্রত্যয় মিলেমিশে একাকার মহমেডান শিবিরে!
বহুদিন বাদে একটা ট্রফি জেতার গন্ধ পাচ্ছে সাদা-কালো ব্রিগেড।
ক্লাব কর্তা সুলতান আহমেদ যেমন মঙ্গলবার রাত থেকেই মনে মনে বিচরণ করছেন ১৯৪০-এর টাইম ক্যাপসুলে। যেখানে প্রথম স্বদেশি দল হিসাবে ওয়ারউইকশায়ার রেজিমেন্টকে ২-১ হারিয়ে প্রথম ডুরান্ড জিতছে মহমেডান। দুর্লভ সেই মুহূর্তটা নতুন করে জিইয়ে তোলার স্বপ্ন তাঁর চোখে। বলছিলেন, “গোরাদের হারিয়ে প্রথম কাপটা জিতেছিলাম। অম্বেডকরে চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেই মুহূর্তটা আরও একবার ফেরাতে চাই আমরা।” যেন ফাইনালে প্রতিপক্ষ ওএনজিসি নয়, ১৯৪০-এর সেই গোরা দল!
অন্য দিকে, টগবগ করছে আজিজ-বাহিনী। কুড়ি বছরের ব্যবধানে ডুরান্ড ফাইনালে ওঠার পর দলের প্রত্যেক ফুটবলারের এখন কাপটাই পাখির চোখ। পেনরা ঠিক কতটা তেতে আছেন আন্দাজ মিলল কোচ আব্দুল আজিজের সঙ্গে কথা বলে। বললেন, “ইতিহাসটা ছোঁয়ার জন্য আমার ছেলেরা তৈরি। জেরিকে তো কিছুতেই বোঝাতে পারছি না। মুম্বই টাইগার্স ম্যাচে মাথায় চোট পেয়েছিল। তিনটে সেলাই হয়েছে। কিন্তু চোট নিয়েই ফাইনাল খেলবে বলে আমাকে চাপ দিচ্ছে। এর থেকেই বুঝে নিন দলের মেজাজটা ঠিক কী রকম!” বাড়তি ইনসেনটিভ, কাপ জিতলে মোটা অঙ্কের নগদ পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন সুলতান। |
আজিজ বলছিলেন, “দুই বিদেশির নিয়মটার জন্য টোলগে আর জোসিমারকে তো প্রথম ম্যাচের পর আর নামাতেই পারিনি। ওরা কিন্তু মুখ ভার করেনি। উলটে বলছে ভালই হল, ২১ তারিখ একদম তরতাজা হয়ে পুণে এফ সি-র বিরুদ্ধে আই-লিগে নামতে পারব। এটাই আমাদের টিম স্পিরিট।”
প্রতিপক্ষের শক্তি-দুর্বলতা মন দিয়ে জরিপ করেই ফাইনালের রণকৌশল সাজাচ্ছেন আজিজ। সাদা-কালো কোচ জানালেন, ওএনজিসি-র সব খেলা দেখেছেন। “নেভির বিরুদ্ধে গতকাল ওরা তো প্রায় ন’জনে ডিফেন্স করে কাউন্টার অ্যাটাকে খেলেছে। একা হেনরিকে আক্রমণে রেখে দু’টো ফ্ল্যাঙ্ককে ওরা ভাল ব্যবহার করে। ওটা রুখতে হবে। আমার ফাইনালের ছক তৈরি।” সেমিফাইনালে লাল কার্ড দেখায় ওএনজিসি-র করণ অটওয়ালের জায়গায় কাল রক্ষণে খেলবেন বিমল মিন্জ। সব মিলিয়ে প্রথম বার ডুরান্ড ফাইনালে ওঠা ওএনজিসি কিছুটা ব্যাকফুটেই। আজিজ আবার যা ইঙ্গিত দিলেন, তিনি সেমি-ফাইনালের দলটাই রাখছেন ফইনালে। তবে শেষ পর্যন্ত জেরি না পারলে পাইতে বা গুরুং আসতে পারেন তাঁর জায়গায়।
কাল ফাইনাল দেখতে মাঠে আসার কথা কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহের। যাঁর হাত থেকে ডুরান্ড কাপ নিয়ে ইতিহাস স্পর্শ করার প্রহর গোনা আজ থেকেই শুরু করে ফেলেছেন সুলতান-আজিজ-পেনরা।
|